Thread Rating:
  • 86 Vote(s) - 2.95 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Thriller নন্দনা - NOT OUT (সমাপ্ত)
Bumba da আপনি কেমন dhoroner বই পড়তে পছন্দ করেন??
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(14-07-2023, 09:56 AM)Badboysuvo_1 Wrote: Bumba da আপনি কেমন dhoroner বই পড়তে পছন্দ করেন??

সব ধরনের, তবে রহস্য-রোমাঞ্চ উপন্যাস পড়তে বেশ ভালো লাগে।
Like Reply
এই দ্যাখো, আমি কিন্তু তোমার বন্ধুর মা! আমাকে এসব প্রশ্ন করা তোমার উচিৎ নয়। তুমি ভীষণ দুষ্টু ছেলে, তোমাকে কেউ শাসন করেনি ছোটবেলা থেকে, তাই এরকম অসভ্য হয়েছো। আর একবার এসব কথা বললে কিন্তু কান মুলে দেবো।


[Image: Polish-20230412-183559497.jpg]

বাকিটা জানতে হলে পড়তে হবে চ্যাটচ্যাটে চ্যাটing
সিরিজঃ- নন্দনা NOT OUT



রবিবার রাতে নিয়ে আসছি একসঙ্গে তিন তিনটে আপডেট সম্বলিত পরবর্তী পর্ব। সঙ্গে থাকুন এবং পড়তে থাকুন।

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 7 users Like Bumba_1's post
Like Reply
Porer part er jonno eagerly waiting
Like Reply
বিছানার চাদর, নাকি মোবাইলের স্ক্রিন! কোনটা চ্যাটচ্যাটে হয় সেটাই এখন দেখার।  Tongue

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
waiting ....
Like Reply
Golpo koytay asbe
banana :
Never Give Up banana 
Like Reply
Update kothay
banana :
Never Give Up banana 
Like Reply
Update kokhon pabo??????
Like Reply
[Image: Polish-20230707-151211126.jpg]

(৪)

মেসেঞ্জারে ইউসুফ ভাই আর তার মায়ের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট দেখে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেলো সৈকতের। সেই জন্যই তার মা রাতের খাবার খেয়ে বেডরুমে ঢোকার পর আর বেরোয়নি বা বেরোনোর সময় পায়নি! কেন সে নিজেও জানে না, তবে হঠাৎ করেই  নিজের মায়ের প্রতি ভীষণ অভিমান হলো তার। কিন্তু ষড়রিপুর প্রথম রিপুর অমোঘ আকর্ষণ এবং অবশ্যই কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে একেবারে প্রথম থেকে ইউসুফ আর তার মায়ের হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথন পড়তে শুরু করলো সৈকত।

প্রথমেই সে দেখলো তার মায়ের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে তাদের কলেজের ছবি দিয়ে ইংরেজিতে বেশ কয়েকটা প্যারাগ্রাফ লিখে পাঠিয়ে সবশেষে বাংলায় ইউসুফ ভাই লিখেছে, "এই ডকুমেন্টসটাই আমাদের সংস্থার তরফ থেকে তোকে পাঠানোর ছিলো, সেই জন্যই ফোনটা দিয়েছিলাম তোকে। ভালো করে পড়ে রিপ্লাই করিস।"

এর প্রায় মিনিট পাঁচেক পর ..

বন্দনা - "আসলে ফোনটা আমার কাছে রয়েছে। আপনি সকালে বললেন না, ওকে এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করতে না দেওয়ার জন্য! তাই আমার কাছেই রেখে দিয়েছি। কিছুক্ষণ আগেই টুং করে একটা শব্দ হলো মোবাইলে, শুনেছি। কিন্তু অভ্যাস নেই তো, তাই মোবাইলটা খুলে দেখতে একটু দেরি হয়ে গেলো। কালকেই তো ফেরত দিয়ে দেবো মোবাইলটা, অথচ একদিনের জন্য আপনি এতগুলো টাকা দিয়ে রিচার্জ  করালেন, এটা ভেবেই খুব খারাপ লাগছে আমার। মোবাইলের টাকাটা না হয় আপনাদের সংস্থা দিয়েছে, কিন্তু রিচার্জের টাকাটা তো আপনার পকেট থেকেই গেলো! ও এখন পড়াশোনা করছে মনে হয় নিজের ঘরে। আপনি ওকে রিপ্লাই দেওয়ার কথা বলেছেন। ওকে গিয়ে কি এই মোবাইলটা দিয়ে আসবো এখন? ও তাহলে রিপ্লাই নাকি দেবে বলছেন, সেটা আপনাকে দিয়ে দিতে পারবে।"

ইউসুফ - "আপনি এখন কোথায়?"

- "আমি আমার ঘরেই রয়েছি .."

- "তাহলে আপনার ছেলেকে মোবাইল দিয়ে আসার কথা বলছেন! ও আপনার পাশে নেই?"

- "না না, আমি তো আমার ঘরে রয়েছি আর ও নিজের ঘরে রয়েছে .. দিয়ে আসবো মোবাইলটা?"

- "আচ্ছা এবার বুঝলাম, রাতে সৈকত আলাদা শোয়। নাহ্ .. ওকে এত রাতে ডিস্টার্ব করার দরকার নেই। ও যখন পড়াশোনা করছে, ওকে করতে দিন। এই মেসেজটাই ওকে কম্পিউটারে পাঠিয়ে দিচ্ছি আমি। ও ওখান থেকে রিপ্লাই দিয়ে দেবে।"

- "কম্পিউটারে কি করে পাঠাবেন?"

- "মেসেঞ্জারে .. আপনাকে পরে শিখিয়ে দেবো। আপনি কি বিরক্ত হচ্ছেন আমার সঙ্গে কথা বলতে?"

- "এ মা, না না .. তা কেন হবে? আসলে ম্যাসাজ করার খুব একটা বেশি অভ্যাস নেই তো। তাই লিখে পাঠাতে একটু দেরি হয়ে যাচ্ছে।"

- "ম্যাসাজ তো আমি একদিন পরে করে দেবো ভালো করে। আপনি বোধহয় মেসেজ বলতে চাইছেন, it's okay দেরি হলে no problem, ডিনার হয়ে গেছে আপনার?"

- "হ্যাঁ .. আপনার?"

- "ডিনার করতে করতেই আপনার সঙ্গে কথা বলছি। আসলে আমি যে কাজের মধ্যে আছি, তাতে প্রচন্ড hectic schedule থাকে আমার। একটু আগেই বাড়িতে ফিরলাম।"

- "আপনি এই বয়সেই এত কাজ করছেন। ওদের কলেজের ডকুমেন্ট না কি যেন হচ্ছে, সেই প্রজেক্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর আপনি। তারপরে সকালে বললেন আপনি মডেলিং করেন। ভালোই রোজগার হয় আপনার, তাই না? জানেন তো আমার ছেলেটা না ভীষণ ঘরকুনো এবং ভিতু প্রকৃতির! ও যে কি করবে ভবিষ্যতে, ভগবান জানে। যদিও ওর বাবার নিজস্ব ব্যবসা আছে, তাই অসুবিধা হবে না। কিন্তু ব্যবসার কাজ করতে গেলেও তো চালাক চতুর হতে হয়, আমার ছেলেটা একদম বোকা।"

- "খাওয়া শেষ, হাতমুখ ধুয়ে এলাম। তাই রিপ্লাই দিতে একটু দেরি হয়ে গেলো। চিন্তা করবেন না, সব ঠিক হয়ে যাবে। ভিতু আর unsocial হলেও সৈকত খুব ভালো ছেলে, ও নিশ্চয়ই ভালো কিছুই করবে ভবিষ্যতে। ও আচ্ছা, আপনার হাজবেন্ডের নিজস্ব বিজনেস রয়েছে? কিসের বিজনেস?"

- "শাড়ির .. বারাসাতে কাপড়ের নিজস্ব দোকান আছে ওনার। এটা ওদের পৈত্রিক ব্যবসা।"

- "আচ্ছা ওই জন্যেই উনাকে সকালে দেখলাম না। উনি দোকানে গিয়েছিলেন বোধহয়! তা এখন বাড়িতে ফিরে এসেছেন নিশ্চয়ই?"

- "না না উনি এখানে থাকেন না। সপ্তাহে একদিনের জন্য আসেন। উনি বারাসাতে দোকানের কাছেই একটা বাড়ি ভাড়া করে থাকেন।"

- "আপনার স্বামীরা কয় ভাই বোন?"

- "ভাই নেই, উনার দুই দিদি রয়েছে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে।"

- "আচ্ছা বুঝলাম। আপনার দুই ননদ কি আশেপাশেই থাকেন?"

- "বড় ননদ লিলুয়াতেই থাকে। কিন্তু ছোট ননদ, মানে আমার স্বামীর ছোড়দি এখন কোথায় থাকে আমি বলতে পারবো না।"

- "কেনো?"

- "আমার ছোট ননদের স্বামী একসময় আমার বরের সঙ্গেই যৌথভাবে শাড়ির দোকানটা চালাতেন। তারপর পয়সা নিয়ে কি একটা গোলমাল হয়, সব দোষ গিয়ে পড়ে ছোট নন্দাইয়ের উপর। যদিও আমার ধারণা বিষয়টার মধ্যে অনেক গোলমাল রয়েছে। যাইহোক, সেই থেকেই আমাদের পরিবারে কেউ ওদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেনি।"

- "আচ্ছা বুঝলাম। তা কবে থেকে উনি আলাদা থাকেন?"

- "মানে? কে?"

- "মানে, কবে থেকে আপনার হাজব্যান্ড আলাদা বাড়ি ভাড়া করে থাকেন?"

- "আগে তো উনি বাড়ি থেকেই যাতায়াত করতেন। তারপর হঠাৎ করে শরীরটা খারাপ হওয়াতে প্রতিদিন যাতায়াত করা উনার পক্ষে মুশকিল হয়ে পড়লো। প্রায় বছর পাঁচেক হয়ে গেলো উনি ওখানে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন।"

- "সকালে বললেন ওনার সুগার আছে। সেটাই কি শরীর খারাপের কারণ?"

- "সুগার তো বছরখানেক হলো ধরা পড়েছে। আসলে উনি বরাবরই একটু অসুস্থ। হাঁপানির রোগ আছে, তারপর পেটরোগা মানুষ .. তেল, ঝাল, মসলা কিছুই সহ্য হয় না। আর এখন তো সুগারের জন্য সবকিছুই বন্ধ।"

- "আচ্ছা এই হাঁপানির আর বদহজমের অসুখ .. এগুলো কি আপনার হাজব্যান্ডের বিয়ের সময় থেকেই ছিলো?"

- "হুঁ .."

- "ওনার বয়স এখন কতো?"

- "এইতো এই বছরের নভেম্বর এলে পঞ্চাশে পড়বে .."

- "যদিও মহিলাদের বয়স জিজ্ঞাসা করতে নেই। আসলে আমার লজ্জা-টজ্জা বরাবরই একটু কম। তাই জিজ্ঞেস করছি .. আপনার বয়স কতো?"

- "আমি মোটেই সেরকম মহিলাদের মধ্যে পড়ি না, যারা নিজেদের বয়স লুকায়। আমি এই ফেব্রুয়ারিতে ঊনচল্লিশে পড়লাম। কেনো বলুন তো?"

- "big difference big difference .. বয়সের অনেক ফারাক। তার উপর বিয়ের সময় থেকেই আপনার স্বামী একজন হেঁপোরোগী। আপনার বিবাহিত জীবনের কথা ভাবতে গিয়ে আমারই ভীষণ খারাপ লাগছে। আমি জানি আপনি আমার একটা কথাও স্বীকার করবেন না। কিন্তু আমি এটাও জানি কথাগুলো আমি একদম ঠিক বলেছি। দুঃখিত 'হেঁপোরোগী' এই টার্মটা ব্যবহার করলাম বলে। তার থেকেও বেশি দুঃখিত, আপনার বিবাহিত জীবন নিয়ে কথা বলে ফেললাম বলে। আসলে আমি ভীষণ সোজাসাপ্টা মানুষ। মনে যা আসে তা মুখের উপর বলে দিই। আমাকে ক্ষমা করবেন .."

মেসেজ পাঠানোর সময় অনুসরণ করে সৈকত দেখলো ইউসুফ এই কথাগুলো লেখার প্রায় পাঁচ মিনিট অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও তার মায়ের তরফ থেকে কোনো উত্তরের আসেনি। তারমানে, তার মা ইউসুফ ভাইয়ের লেখাটা পড়ে মনে মনে হয়তো ভীষণ রেগে গিয়েছে, তাই উত্তর দিচ্ছে না। সেটাই তো স্বাভাবিক, এরকম অসভ্যের মতো প্রশ্ন করলে মানুষ তো রেগে যাবেই! কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আবার হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের স্ক্রিনশটে চোখ রাখলো সৈকত। দেখলো ইউসুফ আবার মেসেজ করেছে তার মা'কে।

- "কি ব্যাপার ম্যাডাম, কোনো রিপ্লাই দিলেন না? আপনার হাজব্যান্ডকে হেঁপোরোগী বলেছি বলে খারাপ লাগলো? নাকি আপনার বিবাহিত জীবন সুখের নয় বলেছি বলে খারাপ লেগেছে? কিন্তু দুটোই তো সত্যি। আমি কি ভুল কিছু বলেছি ম্যাডাম?"

- "কি জানি .."

- "এইতো .. ম্যাডাম আবার কথা বলেছে .. কি জানি মানে? কি জানেন না আপনি?"

- "কিছু না, এসব কথা ভালো লাগছে না, ছেড়ে দিন।"

- "আপনার পার্সোনাল ব্যাপারে আপনি নিজেই যদি বলতে সঙ্কোচবোধ করেন, তাহলে তো আমার আর কিছু বলার নেই। তবে আমার বলা কথাগুলো যে সত্যি সেটা আপনার চুপ করে থাকা আর প্রতিবাদ না করা দেখে বুঝতে পারলাম।"

- "সত্যি কথা সব সময় বলতে এবং স্বীকার করতে নেই।"

- "আচ্ছা, তারমানে আপনি স্বীকার করে নিলেন আমি প্রত্যেকটি কথা ঠিক বলেছি।"

- "দেখুন, আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় কুড়ি বছর হলো। তাই এখন আর পুরনো কথা বলে কি লাভ? আসল সময়েই কিছু বললাম না, এই বয়সে এসে আর কি অভিযোগ করবো বলুন?"

- "তার মানে আসল সময়ে অর্থাৎ বিয়ের প্রথম কয়েক বছর আপনার অভিযোগ ছিলো আপনার স্বামীর প্রতি। তাই তো?"

- "হুঁ .. ছিলো, কিন্তু এই বয়সে এসে আর নেই।"

'ইশশ .. মা, এটা তুমি কি লিখলে? ইউসুফ ভীষণ ধূর্ত, ও তোমাকে কন্টিনিউ প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করবে। ওর কথার জালে ফেঁসে গিয়ে এমন কিছু বলো না, যাতে ও আরও অন্তরঙ্গভাবে কথা বলার সাহস পায় তোমার সঙ্গে। ইউসুফ ভাইকে যে আমি বড় মুখ করে বলেছিলাম, তোমার প্রতি আমার ভীষণ কনফিডেন্স রয়েছে। আমাকে ওর কাছে হেরে যেতে দিও না প্লিজ..' বন্দনা দেবীর করা শেষ মেসেজটা দেখে এইরূপ স্বগোতক্তি করে উঠলো সৈকত। তারপর আবার স্ক্রিনশটে চোখ রাখলো সে।

- "তখন থেকে 'এই বয়সে এসে' কথাটা বলছো কেনো? ঊনচল্লিশ বছর আজকালকার দিনে আবার কোনো বয়স নাকি? আমাকে গালাগালি করো, আমার গায়ে হাত তোলো, আমি কিছু মনে করবো না। কিন্তু আমার সামনে 'তোমার বয়স হয়ে গেছে' এই কথাটা আর কোনোদিন বলবে না .. প্রমিস করো! তোমার বয়সে মানুষ নতুন করে জীবন শুরু করে, জানো? স্পেশালি মহিলারা। হ্যাঁ চেহারাটা হয়তো একটু ভারী হয়েছে তোমার, তবে ওটাই তো বাঙালি গৃহবধূদের ইউএসপি। কিন্তু এখনো যা ফিগার মেইন্টেন করেছো এবং তোমাকে যা সুন্দর দেখতে, তাতে আবার বিয়ের পিঁড়িতে অনায়াসেই বসতে পারো তুমি। না, একটুও বাড়িয়ে বলছিনা কথাগুলো। তোমার বয়সী এবং তোমার থেকেও বয়সে বড় মহিলারা আমাদের কোম্পানির বিভিন্ন প্রোডাক্টের মডেল। ওহো .. I'm extremely sorry কথা বলার ফ্লোতে আপনাকে 'তুমি' বলে ফেললাম। কিছু মনে করবেন না প্লিজ। আসলে আমি কাউকে বেশিক্ষণ আপনি-আজ্ঞে করতে পারি না।"

- "না না ঠিক আছে, আমি কিছু মনে করিনি .."

- "মানে, তোমাকে 'তুমি' বলতে পারি, তাইতো?"

- "হুঁ, ঠিক আছে .."

- "হুঁ, ঠিক আছে .. মানে? কথাটা এমন দায়সারা ভাবে বলছো যে, মনে হচ্ছে 'তুমি' সম্বোধনে তোমার আপত্তি রয়েছে। আমার মন রাখার জন্য রাজি হচ্ছো। পরিষ্কার করে বলো।"

- "বাবা, আপনার তো ভীষণ জেদ দেখছি! আর কিভাবে পরিষ্কার করে বলবো?"

- "অবশ্যই, যারা প্রকৃত পুরুষসিংহ হয়, তাদের জেদ, রাগ .. এগুলো একটু বেশিই হয়। আমি তোমাকে 'তুমি' করে বলি, সেটা তুমি চাও .. এইভাবে বলো। আর একটা শর্ত আছে আমার, তোমাকেও আমাকে 'তুমি' করে বলতে হবে, রাজি?"

- "আচ্ছা বাবা ঠিক আছে, তুমি আমাকে 'তুমি' করে বলো। এবার খুশি তো?"

- "আমি খুশি তো তখন হবো, যখন দেখবো তুমি প্রাণ খুলে হাসছো.."

- "মানে? আমি প্রাণ খুলে হাসি না, এ কথা তোমাকে কে বলেছে?"

- "কেউ বলেনি, আমার চোখে এক্সরে মেশিন লাগানো রয়েছে, আমি সব দেখতে পাই। সাংসারিক চাপ তো আছেই, এছাড়া তোমার দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বামীর অনুপস্থিতিতে, শ্বশুর-শাশুড়ির সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করে আর ছেলে মানুষ করতে করতে তোমার মুখের মিষ্টি হাসিটা যে কোথায় হারিয়ে গেছে তা তুমি নিজেও জানো না। ভুল বললাম কথাগুলো?"

- "না, তবে আমার স্বামীকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলাটা বোধহয় ঠিক হবে না .."

- "আরে দায়িত্ব পালন করা মানে কি শুধু মাসের শেষে বউয়ের হাতে টাকা তুলে দেওয়া? সেটা তো অফিসের বসেরাও তাদের অধঃস্তন কর্মচারীদের হাতে মাসের শেষে টাকা তুলে দেয়। স্বামীর দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ তোমার হাজব্যান্ড। এটা তোমার কথাতেই স্পষ্ট হয়ে গেছে আমার কাছে। এখন শুধু শুধু শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছো কেনো?"

- "আসলে তা নয়। শুধু নিজের স্বামীকে দোষ দিয়ে তো লাভ নেই। হ্যাঁ ওনার দোষ অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু তার পেছনে সংসারের অন্যান্য সদস্যদের হস্তক্ষেপও রয়েছে বা বরাবর ছিলো। সব কাজ মুখ বুজে আমাকে করে যেতে হবে, অথচ পান থেকে চুন খসলেই .. যাক ছাড়ো ওসব পুরনো কথা। তাছাড়া তোমার বয়স অল্প, এখনো বিয়ে করোনি, তুমি এসব বুঝবে না।"

- "বয়স আর বিয়ে দিয়ে কি আর অভিজ্ঞতা বিচার করা যায়? তোমার পরিবারের বাকি সদস্য অর্থাৎ তোমার শাশুড়ি কিংবা তোমার ননদদের কথা বলছো তুমি .. সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। আসলে কি জানো তো .. তোমার মতো সরল সাদাসিধে ভালো মানুষদের এই সংসার সবসময় ব্যবহার করে এসেছে, ম্যানিপুলেট করে এসেছে। তোমার ভালো লাগা, খারাপ লাগা এগুলোর দিকে কোনোদিন নজর না দিয়ে দিনের পর দিন তোমাকে দোষ দেওয়া হয়েছে তোমার প্রতিক্রিয়ার জন্য। কিন্তু কখনও এটা বোঝার চেষ্টা করা হয়নি যে তুমি এমনি এমনি রিয়্যাক্ট করোনি। তোমার সেই প্রতিক্রিয়াগুলোর পিছনে সেই মানুষগুলোর কিছু টক্সিক ক্রিয়া ছিলো। যারা ম্যানিপুলেট করে, তারা নিজেদের দোষ দেখতে পায় না, নিজেদের টক্সিক কর্মকান্ড দেখতে পায় না।
ওরা তোমাকে ঠাস করে চড়িয়ে দিলেও কোনও দোষ নেই। অথচ তুমি আঘাত পেয়ে, 'আহ..' বললেও ওরা বলবে, 'এই! একদম চিৎকার করবে না আমার ওপর..' খুব ভুল বললাম কি কথাগুলো?"

- "নাহ্ .. একদম ঠিক বলেছো।‌ তুমি এত সুন্দর কথা বলো কি করে? তোমার সঙ্গে কথা বলে মনটা অনেক হাল্কা লাগছে। তুমি সত্যিই একজন গুণী মানুষ। তবে আর বেশি কথা না বলাই ভালো, অভ্যেস খারাপ হয়ে যাবে। কাল তো বাবুর কলেজ আছে, ওর সঙ্গে কি তোমার কলেজে দেখা হবে? তাহলে কাল সকালে ওর হাতে ফোনটা দিয়ে দেবো। ও তোমাকে ফেরত দিয়ে দেবে।"

- "আচ্ছা, ওই জন্য বললে বেশি কথা না বলা ভালো, অভ্যাস খারাপ হয়ে যাবে? তোমাকে একটু আগে আমি কি বললাম? আমি খুশি তো তখন হবো, যখন দেখবো তুমি প্রাণ খুলে হাসছো। আর আমার সঙ্গে কথা বলার পর এখনই তুমি প্রাণ খুলে হাসতে শুরু না করলেও, তোমার মনে সেই হারিয়ে যাওয়া সুখ, শান্তি ফিরে এসেছে। তুমি নিজেই একটু আগে স্বীকার করেছো যে, আমার সঙ্গে কথা বলে তোমার অনেক হাল্কা লাগছে। তাহলে তোমার সেই সুখ আর শান্তি থেকে তোমাকে কি করে বঞ্চিত করি আমি? এই ফোন আমি মরে গেলেও আর ফেরত নেবো না। ওটা তোমার কাছেই রেখে দাও, আমার দিব্যি রইলো।"

- "না না, এটা হতে পারে না। এত দামী উপহার আমি তোমার কাছ থেকে কেন নিতে যাবো?"

- "ঠিক আছে, নিও না। ব্যবহার করতে ইচ্ছে না করে ফেলে দিও। কিন্তু তোমার ছেলেকে দিয়ে আমাকে ফেরত পাঠিয়ে না। আজ অনেক রাত হলো, আর জেগে থেকো না, শুয়ে পড়ো। কাল তোমাকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করবো, যদি মোবাইলটা ফেলে না দাও তাহলে রিপ্লাই করো .. গুড নাইট।

- "ছেলের আবার রাগ হলো দেখছি! আচ্ছা ঠিক আছে, কালকের কথা কালকে দেখা যাবে .. শুভরাত্রি।"

অতঃপর শেষ হলো তার মা আর ইউসুফ ভাইয়ের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং। মেসেঞ্জারটা অফ করে আবার অন করলো সৈকত। আলফা গ্রেট ওরফে ইউসুফকে আর সে দেখতে পেলো না মেসেঞ্জারে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত বারোটা বেজে গিয়েছে। মেসেঞ্জারে ইউসুফের উদ্দেশ্যে কিছু একটা লিখতে গিয়েও লিখতে পারল না সে। ভেতরে ভেতরে নিষিদ্ধ উত্তেজনা অনুভব করলেও একটা অজানা ভয় গ্রাস করছিলো তাকে। কম্পিউটার বন্ধ করে, বাথরুম থেকে ঘুরে এসে, আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লো সৈকত।

~ পরের আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 11 users Like Bumba_1's post
Like Reply
"ওঠ বাবু .. সাড়ে আটটা বেজে গেছে। আর কত ঘুমাবি রে? কলেজ যাবি না?" পরের দিন সকালে তার মায়ের চিৎকারে আর পাঁচটা দিনের মতোই নিরস, একঘেঁয়ে, বিরক্তিকর গুডমর্নিং দিয়ে শুরু হলো সৈকতের। আজ আর বিছানায় শুয়ে গড়িমসি করলো না সে। বিছানায় উঠে বসে আড়চোখে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখলো মশারি ভাঁজ করছে তার মা। সেই এক চোখ, সেই এক মুখ, সেই এক কথা বলার ধরন, হাঁটাচলা, আগেরদিন রাতে পড়া সুতির হাতকাটা নাইটিটা .. এই সবকিছু আগের মতোই রয়েছে। তবুও কেন জানিনা আজ তার মা'কে ভীষণ অচেনা লাগছিলো সৈকতের।


একটা কথাও না বলে বাথরুমে ঢুকে গেলো সে। প্রাতঃকৃত্য সেরে, দাঁত মেজে শাওয়ারটা খুলে দিলো সৈকত। আগেরদিন রাতে তার মা আর ইউসুফের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথা কথা মনে পড়ে গেলো তার। ধূর্ত শয়তান ইউসুফটা নিজের কথার জালে, ছলে বলে কৌশলে তার মায়ের মুখ দিয়ে ঠিক বের করে নিলো তাদের অসুখী দাম্পত্য জীবনের কথা। কিন্তু পারিবারিক অশান্তি সম্পর্কে তার মা যে কথাগুলোর আভাস দিয়েছিলো, অর্থাৎ তার ঠাকুমা এবং পিসিদের তার মায়ের প্রতি অত্যাচারের কথা। সেগুলো তো তার চোখে কোনোদিন পড়েনি! তাহলে কি এই ঘটনাগুলো কোনোদিন ঘটেনি? নাকি ঘটেছে, তার চোখে আড়ালে! হয়তো তার মা তাকে কোনোদিন জানতেই দেয়নি এসব। কিরকম কায়দা করে তার মা'কে 'তুমি' সম্বোধনের অনুমতি আদায় করে ফেললো ইউসুফ ভাই, আর তার সঙ্গে তার মাকেও ওকে 'তুমি' করে বলতে হবে সেটাও প্রমিস করিয়ে নিলো! কিন্তু ছেলেটা কি চায়? ও কি তার মায়ের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেই ক্ষান্ত থাকবে, নাকি ওর অন্য কোনো প্ল্যান আছে? কিছুই বুঝতে পারলো না সৈকত। 

ডাইনিং টেবিলে খেতে বসেও নিজের মনকে শান্ত করতে পারছিলো না সে। এই সবকিছু তাকে বন্ধ করতে হবে। ফোনটাই তো যত নষ্টের মূল! ওটা যদি ইউসুফকে ফেরত দিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে তো আর কোনো সমস্যা থাকবে না। "ফোনটা তাহলে আমাকে দিয়ে দাও, কলেজের যদি ইউসুফ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়, তাহলে ওটা ওকে আমি দিয়ে দেবো।" খাওয়া শেষ করে তার মায়ের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললো সৈকত।

"হ্যাঁ, ফোনটা তো দিয়ে দেওয়ারই কথা। কিন্তু উনি যদি আজ তোদের কলেজের না আসেন। এত দামী একটা ফোন নিয়ে যাবি, তারপর যদি ফোনটা চুরি হয়ে যায়! তুই যা ক্যাবলা, তোর তো কোনো খেয়াল থাকে না। তার থেকে ভালো তুই উনাকে ফোন করে জেনে নে, আজ উনি কলেজে আসবেন কিনা! যদি আসেন তাহলে আমি ফোনটা তোকে দিয়ে দেবো আর যদি না আসেন তাহলে থাক আমার কাছে, যবে উনি আসবেন, তবে দেবো।" তার মায়ের এই কথায় সৈকত দুটো জিনিস লক্ষ্য করলো। প্রথমতঃ হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে ইউসুফকে 'তুমি' করে বললেও তার সামনে আপনি-আজ্ঞে করে বলছে। আর দ্বিতীয়তঃ তার মায়ের মুখে ফোন ফেরত দেওয়ার কথা শুনে, মায়ের প্রতি কনফিডেন্সটা যেন একটু বেড়ে গেলো সৈকতের।

মনে মনে খুশি হয়ে সে নিজের ছোট মাল্টিমিডিয়া ফোনটা থেকে বার তিনেক ইউসুফকে কল করলেও ফোন তুললো না তার বন্ধু। "ও তো ফোন তুলছে না।  আমার কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমি বেরোচ্ছি। ঠিক আছে ফোনটা আজকে রেখে দাও। পরে ওকে ফোন করে জেনে নেবো কবে আসবে, সেদিন দিয়ে দিও।" এই বলে বিদায় নিলো সৈকত।

★★★★

কলেজে ঢোকার আগেও একবার ইউসুফকে ফোন করলো সে, কিন্তু এবারও কোনো রেসপন্স এলো না। সোমবার খুব চাপ থাকে .. একটার পর একটা ক্লাস হয়ে চললো আর তার সঙ্গে ফোন করার কথাটাও মাথা থেকে বেরিয়ে গেলো সৈকতের। সাড়ে তিনটে নাগাদ কলেজ ছুটি হওয়ার পর গেট দিয়ে বেরিয়েই সে দেখলো নিজের রয়্যাল এনফিল্ড বাইকটা নিয়ে কলেজের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইউসুফ।

"কি গো .. তোমাকে সকাল থেকে এতবার ফোন করলাম। ফোনটা ধরলে না তো! তুমি আজকে কলেজে আসছো জানলে, আমি ফোনটা নিয়ে আসতাম। মা ফোনটা দিতে চেয়েছিলো আমাকে। বলছিলাম, তুমি কি অন্য কোনো কাজে কলেজে এসেছো? নাকি আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য?" কথাগুলো বলে ইউসুফের দিকে এগিয়ে গেলো সৈকত।

- "এত কথা বলিস কেন তুই? বেশি না বকে চুপচাপ আমার বাইকের পেছনে ওঠ .."

- "কোথায় নিয়ে যাবে আমাকে? তুমি কি আবার আমাদের বাড়ি যাবে?"

- "ঠিক করেছি তোকে সোনাগাছিতে নিয়ে গিয়ে বেচে দেবো আজকে, রেন্ডিগুলোর ফাইফরমাশ খাটবি। যদিও তোকে বেচলে একটা টাকাও আমি পাবো না, উল্টে আমার পকেট থেকেই টাকা দিতে হবে ওদেরকে। ফালতু না হেজিয়ে চুপচাপ বাইকের পেছনে ওঠ, একটা ভালো জায়গায় নিয়ে যাবো তোকে। কলেজের ছেলেগুলো কিন্তু তোকে দেখছে, এরপর প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারবি তো?"

ইউসুফের এই কথায় আর দ্বিরুক্তি না করে তার রয়্যাল এনফিল্ডের পেছনের সিটে চেপে বসলো সৈকত। সঙ্গে সঙ্গে বাইক স্টার্ট দিয়ে হুশ করে বেরিয়ে গেলো ইউসুফ। মিনিট দশেক পর বাইকটা ওই এলাকার একটা নামকরা রেস্টুরেন্টের সামনে থামলো। "সেই কোন সকালে খেয়ে বেরিয়েছিস, এখন বিকেল হয়ে গেলো। খিদে পেয়েছে নিশ্চয়ই? চল, তোকে তোর পছন্দের খাবার খাওয়াবো।" এই বলে সৈকতকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের ভেতর ঢুকে গেলো ইউসুফ।

এমনিতেই ফাস্টফুডের জন্য পাগল সৈকত। তার উপর এইরকম একটা নামকরা রেস্টুরেন্টে এসে বেজায় খুশি হলো সে। তার ফেভারিট ফিস কবিরাজি অর্ডার দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই টেবিলে দিয়ে গেলো খাবারটা। "তুমি তো শুধু মশালা কোল্ডড্রিঙ্ক নিলে, সলিড কিছু খাবে না? কবিরাজিতে কামড় বসিয়ে জিজ্ঞাসা করলো সৈকত।

- "নাহ্ .. দুপুরে দেরি করে লাঞ্চ করেছি, তাই পেট ভর্তি। তখন ফোন নিয়ে যেন কি বলছিলিস?" 

- "তোমাকে অনেকবার ফোন করেছিলাম, সেটাই বলছিলাম। আমার মিসডকল পাওনি?"

- "পেয়েছি .. না না, তারপর কি যেন বলছিলিস, আমাকে ফোন ফেরত দিয়ে দিবি .."

- "ও আচ্ছা, যে ফোনটা তুমি কালকে দিয়েছিলে, মা বলছিলো ওটা নিয়ে গিয়ে তোমাকে দিয়ে দিতে .. সেই জন্যই তো তোমাকে ফোন করেছিলাম।"

- "তোর মা নিজে থেকে এই কথাটা বলেছে?"

- "না মানে, আমিই মা'কে বলেছিলাম ফোনটা দিয়ে দেওয়ার জন্য .."

- "বুঝলাম, কেনো ফেরত দিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছিলিস? কাল রাতে হোয়াটসঅ্যাপে তোর মা আর আমার কথোপকথন পড়ে মাথাখারাপ হয়ে গেছে, নিজের মায়ের প্রতি সব কনফিডেন্স চলে গেছে, তাই তো?"

- "না মানে, হ্যাঁ মানে .. সেরকম কিছু নয়, আসলে ফোনটা ফেরত দিয়ে দিতে হবে, এরকমই তো কথা হয়েছিলো।"

 "এরকম কোনো কথা হয়নি। তোর মা গতকাল ফোনটা ফেরত দিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলো ঠিকই। কিন্তু আজ আর রাজি হবে না। বিশ্বাস না হয়, বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে দ্যাখ। তাছাড়া একজন গৃহবধূ হয়ে তোর মা স্মার্টফোন পেয়ে গেলো, তুই তার ছেলে হয়ে এখনো মাল্টিমিডিয়া ফোন ইউজ করছিস! ব্যাপারটা তোর হজম করতে কষ্ট হচ্ছে, ইগোতে লাগছে তোর। তাই তো? আমি যেটা প্রমিস করি, সেটা রাখি। তোকে বলেছিলাম আমার পুরনো ফোনটা তোকে দিয়ে দেবো। এই নে, এটা ব্যবহার কর .." কথাগুলো বলে নিজের পকেট থেকে একটা স্মার্টফোন বের করে সৈকতের দিকে এগিয়ে দিলো ইউসুফ।

"থ্যাঙ্ক ইউ দাদা, সরি থ্যাঙ্ক ইউ ইউসুফ ভাই। কিন্তু মা ফোনটা ফেরত দিতে আর রাজি হবে না কেনো?" ইউসুফের দেওয়া ফোনটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে জিজ্ঞাসা করলো সৈকত।

"সেটার রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তোকে যে ফোনটা দিলাম সেটার মধ্যে। কাল সকালে যখন তোদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, তখন আমার সঙ্গে এই ফোনটাও ছিলো। নতুন ফোনটা অন করে সেটা থেকে যখন হোয়াটসঅ্যাপ ইন্সটল করছিলাম, তখনই এই ফোনটা পকেট থেকে একবার বের করে একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে দুটো ফোন merge করে দিয়েছিলাম। তবে 'মাদার ফোন' এটাই, অর্থাৎ ওখান থেকে সমস্ত ইনফরমেশন এটার মধ্যে আসবে। কিন্তু এটার থেকে কোনো ইনফর্মেশন ওই ফোনে যাবে না। তোর মোটা মাথায় অবশ্য এইসব কথা ঢুকবে না। আসল কথা হলো এবার থেকে আর স্ক্রিনশট পাঠানোর দরকার নেই। তোর মায়ের সঙ্গে শুধু আমার নয়, যেকোনো ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা এমনি সাধারন মেসেজ .. সবকিছুই তুই দেখতে পাবি এই ফোনটার মাধ্যমে। এখন থেকে তোকে আর চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসে কম্পিউটার করতে করতে মশার কামড় খেতে হবে না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইলে সব কিছু দেখতে পারবি। রিচার্জ করে দিয়েছি, চিন্তা নেই। বোঝা গেলো? খাওয়া কমপ্লিট? এবার চল তাড়াতাড়ি তোকে বাড়ির সামনের রাস্তাটায় নামিয়ে দিয়ে আসি। আমার আবার একটা এসাইনমেন্ট রয়েছে।" কথাগুলো বলে চেয়ার থেকে উঠে পড়লো ইউসুফ।

"মায়ের সঙ্গে কি তোমার আজ হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে?" বাইকে করে বাড়ি ফেরার পথে ইউসুফকে প্রশ্ন করলো সৈকত।

"আমি আর নিজে থেকে তোকে কিছু বলবো না। যা জানার, যা দেখার .. সব এই ফোনের মাধ্যমেই দেখতে পারবি। আমি লুকিয়ে চুরিয়ে কিছু করতে ভালোবাসি না। যা করবো তোর চোখের সামনে করবো। ভালো কথা, এই ফোনটা কিন্তু লুকিয়ে রাখিস। তা নাহলে তোরই বিপদ। চলি রে, টা টা ..'' সৈকতকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলো ইউসুফ।

★★★★

একটা গোটা ফিস কবিরাজি সাঁটিয়ে পেটে আর এক ফোঁটাও জায়গা ছিলো না তার। তাই বাড়িতে ফিরে জামাকাপড় ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে ইউসুফের কাছ থেকে পাওয়া স্মার্টফোনটা নিয়ে নিজের ঘরে এসে ভেতর থেকে দরজা আটকে দিয়ে খাটের উপর বসলো সৈকত। উপহার হিসাবে পাওয়া জীবনে প্রথম স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য মনে যেমন একটা আনন্দ হচ্ছিল তার, ততোধিক ভেতর ভেতর একটা চাপা উত্তেজনা অনুভব করছিলো রেস্টুরেন্টে ইউসুফ ভাইয়ের বলা শেষ কথাগুলো মনে করে। তাহলে কি সে বেরিয়ে যাওয়ার পর তার মায়ের সঙ্গে আজ কথা হয়েছে ইউসুফের? জানতেই হবে তাকে। মোবাইলটা অন করতেই ফোনের ভেতর আগে থেকে ইন্সটল করে রাখা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের নোটিফিকেশন এলো। সৈকত দেখলো এটা তার মায়ের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট। ইউসুফ ভাই তারমানে ঠিক কথাই বলেছিলো। এর আগে তার মায়ের হোয়াটসঅ্যাপের সমস্ত কথোপকথন চলে এসেছে তার মোবাইলে, এবং ভবিষ্যতেও তার মা হোয়াটসঅ্যাপে যা কিছু লিখবে সব চলে আসবে তার মোবাইলে। নিঃশ্বাস বন্ধ করে বন্দনা দেবীর হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বক্সে চোখ রাখলো সৈকত।

বেলা ১১টা ৩০ ..
ইউসুফ - "কি করছো এখন? মোবাইলটা ফেলে দিয়েছো? নাকি যত্ন করে রেখে দিয়েছো?"

দুপুর ১টা ২০ ..
বন্দনা - "ও মা .. এত দামী মোবাইল ফেলে দিতে যাবো কেন? রেখে দিয়েছি আমার কাছে। আপনার সঙ্গে দেখা হলে ফেরত দিয়ে দেবো। এইমাত্র দেখলাম আপনার পাঠানো ম্যাসাজটা, সরি মেসেজটা। উত্তর দিতে দেরি হওয়ার জন্য দুঃখিত।

- "আবার 'আপনি'? কাল যে কথা হলো আমাদের মধ্যে .. আমাকে 'তুমি' করে বলবে! আমি যে মোবাইলটা ফেরত নেবো না, সেটা তো তোমাকে কালকেই বলে দিয়েছি। তোমার যদি আমার দেওয়া জিনিস ব্যবহার করতে সঙ্কোচবোধ হয় তাহলে ওটা ফেলে দিও।"

- "ইশশ .. এত দামী জিনিস কি কেউ ফেলে দেয়? তোমার অনেক পয়সা আছে, তুমি হয়তো তাই করো, আমি এটা করতে পারবো না।"

- "কি করছিলে এতক্ষন?"

- "ঘরের কাজকর্ম করলাম, তারপর স্নান করলাম, পুজো করলাম, খাওয়া-দাওয়া করলাম, এখন এসে বিছানায় একটু বসেছি।"

- "আচ্ছা আমার যে পয়সা আছে সেটা তুমি কি করে বুঝলে?"

- "তুমি তখন বললে না যে তুমি মডেলিং করো! আমি জানি মডেলদের অনেক পয়সা। তাছাড়া এই অল্প বয়সেই ফ্ল্যাট কিনে ফেলেছো, অত দামী একটা বাইক! টাকা না থাকলে কি ফ্ল্যাট, গাড়ি এসব কেনা যায়?"

- "আমার চারচাকাও রয়েছে। এনিওয়ে, মডেলিং সে ইয়াদ আয়া .. সেই সময় ল্যাপটপে তোমার ছেলের কলেজের ডকুমেন্টারি ফিল্মটা দেখতে দেখতে হঠাৎ করে ওই ছবিটা এসে পড়ায় তুমি খুব embarrassed ফিল করেছো তাই না? আসলে তখন বললাম না, ওটা এডিট করা হয়নি! যাই হোক, ওটার জন্য‌ I'm sorry .."

- "কোন ছবি?"

- "ওই যে গো, একদম শেষের দিকে bare body তে নিচে শুধুমাত্র একটা সাদা রঙের ফ্রেঞ্চি পড়ে আমার যে ফটোটা তুমি দেখলে, সেইটার কথা বলছি।"

- "তাই? আমি অতটা খেয়াল করিনি গো .."

- "তুমি ছবিটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলে, তোমার ছেলে পেছন থেকে কেশে উঠলো আর সঙ্গে সঙ্গে তুমি সোফা থেকে উঠে পড়লে। ভুলে গেলে এই সবকিছু এত তাড়াতাড়ি? এবার তো মনে হচ্ছে তোমাকে ডাক্তার দেখাতে হবে! এক মিনিট দাড়াও, তোমার স্মৃতিশক্তি যাতে ফিরে আসে সেই চেষ্টা করছি।

[Image: Images-4-1.jpg]

মনে পড়েছে এবার?

(মিনিট পাঁচেক পর) - "হুঁ .."

- "কি করছিলে এতক্ষণ? তখন তোমার ছেলে থাকায় ভালো করে ছবিটা দেখতে পাওনি। তাই এখন ভালো করে দেখছিলে, তাই না? হাহাহাহা .."

- "ধ্যাৎ কি বলছো এসব? ছবিটা কি করে ডিলিট করবো সেটাই ভাবছি।"

- "ঠিক আছে, এরপর যেদিন তোমার সঙ্গে দেখা হবে, আমি শিখিয়ে দেবো কি করে ডিলিট করতে হয় ছবি। আবার চাইলে তুমি ডিলিট নাও করতে পারো, পাসওয়ার্ড দিয়ে নতুন কোনো ফোল্ডার বানিয়ে তার মধ্যে রেখে দিতে পারো। যাগ্গে বাদ দাও, 'তুমি' করে ডাকলে তো ম্যাডাম বলা যায় না! তোমাকে কি বলে ডাকি বলো তো?"

- "তোমাকে দেখলে তো মনে হয় আমার থেকে অনেকটা ছোট। তোমার বয়স কতো?"

- "আঠাশে পড়বো .."

- "ওহ্ .. তাহলে তো আমার থেকে অনেকটাই ছোট .."

- "সে তো ছোটই, কিন্তু কি বলে ডাকবো সেটা তো বললে না! আন্টি বললে বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে, ভাবিজি ডাকটার মধ্যে আবার কোনো আপনত্ব নেই। আচ্ছা তুমি আমাকে তোমার বন্ধু বলে মনে করো তো?"

- "বন্ধু কিনা জানিনা তবে, পরিচয় তো হয়েছেই .."

- "বন্ধুত্ব হচ্ছে তো আস্তে আস্তে, এটা তো মানবে?"

- "হুঁ .."

- "তাহলে একজন বন্ধুর তো আরেকজন বন্ধুকে নাম ধরেই ডাকা উচিৎ .. ঠিক কিনা বলো?"

- "হ্যাঁ এতে ভুল কিছু নেই .."

- "তোমার ভালো নামটা ভীষণ সেকেলে এবং boring , নামটা শুনলেই মনে হয় একজন মহিলা পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলছি, যে সারাদিন পুজো অর্চনা, ঠাকুরের বন্দনা নিয়ে থাকে। মজা করলাম, please don't mind, তোমার কোনো ডাক নাম নেই?"

- "আছে তো, আমার ডাকনাম ঝুমা .."

- "আমি কি তোমাকে ঝুমা বলে ডাকতে পারি?"

- "মা বাবা চলে যাওয়ার পর এই নামে আমাকে আর কেউ ডাকেনি। ভুলতেই বসেছিলাম প্রায় আমার ডাকনামটা।"

- "ঠিক আছে তাহলে এবার থেকে তোমাকে ঝুমা বলেই ডাকবো, কেমন?"

- "আচ্ছা ডেকো .. তুমি এখন কোথায়? শুটিংয়ে, মানে অফিসে? আমি না হয় একজন গৃহবধূ, আমার কোনো কাজ নেই। কিন্তু তুমি এই ভর দুপুরবেলায় বসে বসে আমার সঙ্গে কথা বলছো, তাই জিজ্ঞাসা করছিলাম।"

- "শুটিং ফ্লোরেই রয়েছি, লাঞ্চ ব্রেক চলছিলো, তাই তোমার সঙ্গে গল্প করছিলাম। তিনটে বাজতে চললো প্রায়। ঠিক আছে এবার তাহলে রাখি। রাতে আসছো তো?"

- "কোথায়?"

- "কোথায় আবার? হোয়াটসঅ্যাপে। তোমাকে তো আর আমি নিজের বেডরুমে ডাকতে পারিনা!"

- "ধ্যাৎ , আবার আজেবাজে কথা? আচ্ছা ঠিক আছে আসবো।"

- "চলো টা টা .. Heart "

- "শেষে ওটা কি হলো?"

- "কোনটা? ও আচ্ছা, ওই লাভ সাইনটার কথা বলছো? come on ঝুমা, একজন বন্ধু আর একজন বন্ধুকে এটা দিতেই পারে। এতে এত চমকে যাওয়ার কিছু হয়নি।"

- "আচ্ছা ঠিক আছে, বুঝলাম। টা টা .."

 ফোনটা পাশে রেখে দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো সৈকত। শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো কি পরিমান ধুরন্ধর এবং শয়তান এই ইউসুফ। কি কুক্ষণে যে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে গিয়েছিল সে! গতকাল কায়দা করে 'আপনি' থেকে 'তুমি'তে চলে গিয়ে তার মা এবং বাবার অসুখী দাম্পত্য জীবনের কথা জেনে নিয়েছিল হারামিটা। আজ আবার তার মায়ের ডাকনাম ধরে ডাকার পারমিশনটাও নিয়ে নিলো। কত বড় অসভ্য এবং ইতর ওই ইউসুফ, আগের দিনের তার ওই খালি গায়ে শুধুমাত্র জাঙিয়া পরা ফটোটা আবার তার মা'কে দেখালো। 

"কলেজ থেকে আসার পরে কিছু না খেয়ে সেই যে দরজা আটকে ঘরে ঢুকে গেলি! পড়াশোনার খুব চাপ বেড়েছে, তাই না? সাড়ে ন'টা বাজতে চললো সেদিকে খেয়াল আছে? খেতে দিয়েছি। আমি কিন্তু খেতে বসে গেলাম, তাড়াতাড়ি আয়।" মায়ের গলার আওয়াজ পেয়ে স্মার্টফোনটা বালিশের তলায় লুকিয়ে রেখে বিছানা থেকে নেমে ঘরের দরজা খুলে বেরোলো সৈকত।

~ কিছুক্ষণের মধ্যেই পরবর্তী আপডেট আসছে ~
[+] 9 users Like Bumba_1's post
Like Reply
রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর "সামনে পরীক্ষা তো, তার উপর অর্ধেকের বেশি সিলেবাস বাকি রয়ে গেছে। তাই পড়ার চাপ একটু বেড়েছে, আমি ঘরে গেলাম।" তার মা'কে এইটুকু বলে আবার নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো সৈকত। খাটের উল্টোদিকে যেখানে কম্পিউটার টেবিলটা রাখা রয়েছে, সেখানে পাখার হাওয়া ঠিকঠাক পৌঁছয় না। এখন অবশ্য আর মশার কামড় খেয়ে ওখানে বসে কম্পিউটার চালানোর দরকার নেই। তার নতুন বন্ধু ইউসুফের দেওয়া আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ পেয়ে গেছে তো সে! হ্যাঁ, স্মার্টফোনটা তার কাছে আলাদিনের প্রদীপের মতোই।


বিছানায় কোলবালিশের উপর হাতের ভর দিয়ে আধশোয়া অবস্থায় মোবাইলটা অন করে প্রথমেই মেসেঞ্জারে একবার ঢুঁ মারলো সে। ইউসুফকে যে ওখানে আর সে পাবে না, এটা ভালো করেই জানে সৈকত। তবুও অভ্যাসবশত একবার ঘুরে আসা। খাটের উল্টোদিকে কম্পিউটার টেবিলের পাশে রাখা বড় আয়নাটার দিকে নজর গেলো তার। সে দেখলো তার প্রতিবিম্বটি তার দিকে তাকিয়ে একটা অদ্ভুত হাসি হাসছে। সেই হাসির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ব্যঙ্গ আর বিদ্রুপ। প্রতিবিম্বটি যেন তার দিকে তাকিয়ে বলছিলো, "একটা মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ ছেলে তুমি। যে ব্যক্তি এতদিন তোমাদের পরিবারে বাইরে থেকে উঁকি মারছিলো, বর্তমানে সেই ব্যক্তি ছলচাতুরি করে তোমার মায়ের ব্যক্তিগত জীবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে! সেই মায়ের সন্তান হয়ে তুমি এর কোনো প্রতিবাদ না করে সেই ব্যক্তির দেওয়া এই মোবাইলটা নিয়ে গর্ববোধ করছো? ছিঃ লজ্জা লাগা দরকার।"

 ইউসুফের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার বদলে, নিজের মা'কে সতর্ক করার বদলে, সে চুপ করে আড়াল থেকে এই পুরো বিষয়টা দেখে যাচ্ছে! সত্যিই তো, সে যেটা করছে, তার থেকে বড় পাপ আর হয় না। পরমুহূর্তেই আয়নাটার দিকে পুনরায় চোখ চলে গেলো তার। সে দেখলো, প্রতিবিম্বটি এবার তার দিকে এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলছে, "মোবাইলে তোমার মা আর ইউসুফের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট দেখবে না? সঙ্কোচবোধ হচ্ছে? কিসের লজ্জা? কিসের সঙ্কোচ? এখানে কেউ বাচ্চা নয়, এখানে কেউ কাউকে জোর করছে না। এখানে যা হচ্ছে, সেটা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে হচ্ছে। নিজেকে যখন এই বিকৃত মানসিকতা থেকে আটকাতে পারোনি বা আটকাতে চাওনি, তখন ইউসুফকে আটকাবে কোন যুক্তিতে? আর তোমার মা? তিনি তো একজন পূর্ণবয়স্কা নারী। যদি তার উপরে তোমার কনফিডেন্স থেকেই থাকে, তাহলে সবকিছু সময়ের উপর ছেড়ে দিয়ে, দেখো না কি হয়!" প্রথমে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে আয়নার দিকে তাকিয়ে থেকে, তারপর হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ বক্সটা খুললো সৈকত।

সৈকত দেখলো আটটা থেকে নটার ভেতর ইউসুফ দুটো মেসেজ পাঠিয়েছে তার মা'কে। প্রথমটাতে লেখা রয়েছে "হাই ঝুমা, খবর কি?" আর দ্বিতীয়টাতে "একটু আগে বাড়ি ফিরলাম, ফিরেই তোমার কথা মনে পড়লো। কী করছো এখন?" ঘড়ির কাঁটা এখন রাত পৌনে দশটা অতিক্রম করেছে। তার মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ নোটিফিকেশন এলো। তৎক্ষণাৎ মোবাইলটা হাতে নিয়ে সৈকত দেখলো তার মা মেসেজ করেছে।

- "তোমার মেসেজ এইমাত্র দেখলাম, এই একটু আগে রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে করে ঘরে এলাম।"

- "বাবা, তোমরা তো অনেক তাড়াতাড়ি ডিনার করে নাও! আমার এগারোটা সাড়ে এগারোটার আগে খাওয়া হয় না।"

- "তুমি কি নিজেই রান্না করো?"

- "ধুর, রান্না করার টাইম কোথায় আমার? হোম সার্ভিস বলা আছে, ওরাই রাতের খাবারটা দিয়ে যায়। আর দুপুরে তো আমি বাড়ি থাকি না। শুটিং স্পটেই লাঞ্চ হয় আমার।"

- "এবার একটা বিয়ে করো, তাহলে অন্তত বউয়ের হাতে রান্নাটা খেতে পারবে!"

- "মানে রান্না করার জন্যই আমাকে বিয়ে করতে বলছো? যে মেয়েকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে আসবো, সে সকাল দুপুর বিকেল রাত্রি সব সময় রান্না করে যাবে, তাই তো?"

- "না না, আমি সেটা কখন বললাম!"

 - "তাছাড়া তোমার কি ধারনা, আজকালকার দিনের মেয়েরা রান্না করে? যদিও বা করে, তারা চায় তাদের হাজব্যান্ডরাও তাদের সাহায্য করুক, এবং আমি মনে করি সেটাই হওয়া উচিৎ .. মেয়েরা সারাদিন ঘরের কাজ, রান্নাবান্না এসব করে যাবে! আর তাদের স্বামীরা বাড়ির বাইরে কাজ করে বলে বাড়িতে ফিরে এসে পায়ের উপর পা তুলে শুধু স্ত্রীর সেবা নেবে! এইসব ফালতু ব্যাপার আমি কখনোই সমর্থন করি না।" 

- "তুমি একদম ঠিক বলেছো গো .. কিন্তু আমার বেলায় তো এইভাবে কেউ ভাবেনি, যদিও আমার সেইরকম কোনো গুণও ছিলো না বাড়ির বাইরে গিয়ে কাজ করার। তবে বিয়ে শুধু পুরুষেরা বউয়ের হাতে রান্না খাবে বলে করে না, বিয়ে করার অন্য কারণও রয়েছে।"

- "তাই বুঝি? কি কারণ শুনি?"

- "আহা, তুমি যেন জানো না!"

- "আমি একটা কারণ অবশ্য জানি, কিন্তু সেটা কি তুমি জানো?"

- "কি কারণ, বলো?"

- "বলবো? ঠিক তো? দেখো আমি তো বাঙালি নই, আমার ভাষার উপর অত জ্ঞান নেই। আমি আজকালকার দিনের ইয়াং ছেলে, চলিত ভাষায় কথা বলি, সেই কথার মধ্যে মাঝেমধ্যে একটু নোংরা ভাষা মেশানো থাকতে পারে, তুমি কিছু মাইন্ড করোনা।"

- "নোংরা ভাষা মানে গালাগালি? ছিঃ তুমি গালাগালি দাও নাকি?"

- "আরে এ ভাষা সে ভাষা নয়। আমি কলপাড়ের ঝগড়ার মতো কারো বাপ-মা তুলে গালাগালি দিয়ে অস্রাব্য ভাষা ব্যবহার করার কথা বলছি না। ওটা তো রেগে গেলে মানুষ করে। আমি বলছি দু'জন বন্ধুর মধ্যে যেরকম টুকটাক একটু খারাপ ভাষা চলে! তুমি আর আমি তো বন্ধুই, তাই বলছিলাম।"

- "ও আচ্ছা বুঝেছি, হ্যাঁ বলো কি বলছিলে তখন বিয়ে করার কারণের কথা, যেটা তুমি জানো .."

- "বিয়ে করলে নিজের বউকে ইচ্ছেমতো চোদা যায়।"

- "ইশ্ ছিঃ ছিঃ! কি ভাষা মুখের .. তুমি এই কথা বলবে জানলে তোমাকে কখনোই বলতে বলতাম না।"

- "আচ্ছা? তাই? তাহলে তুমি বিয়ে করার অন্য কি কারণের কথা বলতে চাইছিলে?"

- "না মানে, আমিও এটাই .. মানে আমি বলতে চেয়েছিলাম একজন সঙ্গী পাওয়া যায় বিয়ে করলে .."

- "উত্তর খুঁজে পাচ্ছো না তো, তাই মানে মানে করছো! আমি যেটা বললাম তুমিও সেটাই বলতে চেয়েছিলে কিন্তু আমি 'চোদা' শব্দটা ব্যবহার করেছি, তুমি করোনি। ওই জন্যই তো তখন বললাম, আমার কথার মধ্যে একটু দুষ্টুমি মেশানো থাকতে পারে।"

- "আচ্ছা বাবা, মেনে নিলাম তোমার কথা।"

- "মানতেই হবে, আমি তো আর ভুল কিছু বলিনি! আচ্ছা তখন যেন কি বলছিলে? তোমার বেলায় তো এইভাবে কেউ ভাবেনি, যদিও তোমার সেইরকম কোনো গুণ ছিলো না বাড়ির বাইরে গিয়ে কাজ করার?"

- "হ্যাঁ, আমার স্বামী তো কোনোদিন বলেনি যে, 'আজ আমি বাড়ি আছি, রাতের রান্নাটা করতে তোমাকে আমি সাহায্য করবো।' আর গুণ তো আমার সত্যিই ছিলো না, বাইরে গিয়ে কাজ করে রোজগার করার।"

- "সোনা কখনো নিজের কদর বোঝেনা, সোনাকে চিনে নেয় একজন পাক্কা জরুরী। ঠিক তেমনভাবে তোমার গুন আছে কি নেই, তুমি বাইরে গিয়ে কাজ করলে রোজগার করতে পারবে কি পারবে না, সেই ব্যাপারে তোমার কোনো ধারনাই নেই। তোমার বিয়ের কয়েক বছর পরের কথা তো ছেড়েই দিলাম, এখনো তুমি যদি চাও, অনায়াসে রোজগার করতে পারো। আমি তোমাকে বলছি .. চাইলেই পার ডে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা রোজগার করবে তুমি। তাহলে মাসে কত হলো? পঁচাত্তর হাজার থেকে নব্বই হাজার। আবার কখনো কখনো সেটা এক লাখ ছাড়িয়ে যেতেও পারে।"

- "কি সব আবোল তাবোল বকছো? আমি এক লাখ টাকা রোজগার করবো? তাও আবার এই বয়সে? নিশ্চয়ই তুমি গাঁজা খেয়েছো!"

- "তোমাকে গতকাল বলেছি না, নিজের বয়স নিয়ে কিছু বলবে না আমার সামনে! তোমার মতো বয়সে মানুষ নতুন করে জীবন শুরু করে। আগেরদিন বলছিলাম মনে আছে, তোমার বয়সী এবং তোমার থেকেও বয়সে বড় মহিলারা বিভিন্ন প্রোডাক্টের মডেলিং করে। আমাদের সংস্থার কাজ হলো সেই প্রোডাক্টের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ওইসব মহিলাদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া এবং তাদের কাজ পাইয়ে দেওয়া।"

- "হ্যাঁ বলেছিলে মনে আছে। তখন বিষয়টাকে অতটা গুরুত্ব দিইনি। আচ্ছা, কি ধরনের প্রোডাক্ট, মানে খাওয়ার জিনিস নাকি জামাকাপড়?"

- "দ্যাখো, তোমাদের মতো যারা হাউসওয়াইফ, যাদের কোনো পরিচিতি নেই, তাদের তো কোনো ন্যাশনাল বা ইন্টারন্যাশনাল অথবা কোনো বড় ব্রান্ডের কোম্পানি ডেকে নিয়ে গিয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করাবে না! তবে লোকাল যে সমস্ত প্রোডাক্ট রয়েছে, সেগুলোর জন্য কোম্পানিগুলো অচেনা মুখের গৃহবধূদেরই প্রেফার করে বেশি। এর পেছনে দুটো কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হলো পারিশ্রমিক কম দিতে হয়। দ্বিতীয় কারণ হলো নতুনদের নখরাবাজিটা অনেক কম হয় কোনো পরিচিত মুখের তুলনায়। জামাকাপড়ের প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন হয়, এছাড়া কিছু শর্টফিল্মও শ্যুট করা হয়।"

- "সিনেমারও শ্যুটিং হয়? কি বলছ গো? আমার কতদিনের শখ সিনেমার শ্যুটিং দেখার .."

- "শ্যুটিং দেখার এত শখ? ঠিক আছে, তোমার এই শখ আমি পূর্ণ করে দেবো, চিন্তা নেই। এক কাজ করো, কালকে তো বিশ্বকর্মা পুজো, তোমার ছেলের কলেজ ছুটি। কালকেই তোমার ছেলেকে নিয়ে চলে এসো আমাদের শ্যুটিং ফ্লোরে। রথ দেখা আর কলা বেচা দুটোই হয়ে যাবে। মানে শ্যুটিং দেখাও হবে আর ভাগ্য ভালো থাকলে ওখানে যদি কোনো প্রডিউসার থাকে, তাহলে উনাকে রিকোয়েস্ট করে তোমাকে কোনো প্রোডাক্টের মডেল বানিয়ে দেবো কালকেই। আমি শুটিংস্পটের এড্রেস পাঠিয়ে দিচ্ছি তোমার হোয়াটসঅ্যাপে .."

- "এই না না, ওইসব মডেল-টডেল হওয়ার ইচ্ছা নেই আমার। বাবু তো বলছিলো ওর পড়াশোনার খুব চাপ যাচ্ছে, দেখি যদি ও রাজি হয়, তাহলে না হয় কাল একবার .. না গো ছেড়ে দাও, আমার মনটাও খুব একটা ভালো নেই।

- "কেন হঠাৎ মন খারাপ হওয়ার কি কারণ ঘটলো?"

- "সামনেই পুজো, প্রত্যেকবার পঞ্চমীতে দোকান বন্ধ করে ওর বাবা বাড়ি চলে আসে। তারপর একেবারে দ্বাদশীর দিন গিয়ে দোকান খোলে। এবার নাকি দোকানে কি সব কনস্ট্রাকশনের কাজ হচ্ছে। তাই এই সপ্তাহে তো ওর বাবা আসতেই পারবে না, এমনকি যেহেতু পুজোর ওই চারটে দিন দোকান এমনিতেই বন্ধ থাকে, তাই ওই ক'দিনে সকাল বিকেল কাজ করিয়ে কনস্ট্রাকশন এর কাজটা শেষ করবে। পুজোর আগের সপ্তাহে একদিনের জন্য শুধু বাড়ি আসবে। সন্ধ্যাবেলা ফোন করে এই কথাগুলোই বললো আমাকে। সেই থেকেই মনটা কিছুটা ভারাক্রান্ত।"

- "ওহ্ এই ব্যাপার? তা তোমার হাজব্যান্ড পুজোতে তোমায় কলকাতার সব ঠাকুর ঘুরিয়ে দেখায় বুঝি?"

- "ধুর, শেষ বোধহয় দশ বছর আগে দেখেছিলাম কলকাতার ঠাকুর। পাড়ার পূজা মন্ডপের বেশি এক পাও কোথাও যান না উনি। তবে বাড়িটা ফাঁকা ফাঁকা থাকবে তাই বলছিলাম আর কি! তাছাড়া আমার শাশুড়িও হতো ননদের বাড়ি গেছেন, লক্ষ্মীপূজার পরে ফিরবে।"

- "যখন ইউসুফ is here তখন don't fear .. এই পুজোটা তোমার জীবনে সবথেকে ভালো কাটবে, আমার কথা মিলিয়ে নিও। এবার একটু হাসো .."

- "হোয়াটসঅ্যাপে কি করে হাসবো? ঠিক আছে হিহিহি .."

- "ওরকম দুর্বলভাবে হাসলে হবে না, অট্টহাসি হাসতে হবে .."

- "আরে বাবা হাসির কোনো কারণ থাকবে, তবে তো হাসবো?"

- "আচ্ছা হাসার জন্য কারণ দরকার? তাহলে একটা ঘটনা বলছি শোনো, আমাদের পাড়ার ঘটনা। হাসতে হাসতে পেটে ব্যথা হয়ে যাবে। একটু নন-ভেজ আছে কিন্তু বিষয়টা, অসুবিধা নেই তো?

- "মানে আবার ওইসব গালাগালি?"

- "আরে না না গালাগালি কেন দেবো? তুমি আমার কত পছন্দের একজন মানুষ আর তোমাকে আমি গালাগালি দেবো? ননভেজ মানে একটু দুষ্টু, চলবে তো?"

- "আমি না বললে কি আর তুমি শুনবে? ঠিক আছে বলো .."

- "আমি যে ফ্ল্যাটে থাকি তার দুটো বাড়ি পরেই একটা লেডিস হোস্টেলে আটজন মেয়ে থাকে। তাদের নাম‌.. পারমিতা গুহ, পারুল দেবনাথ, মিতালি হালদার, শ্যামলী তরফদার, শর্মিষ্ঠা দে, কল্পনা বেরা, শতাব্দী নস্কর, মহুয়া নাথ। বাইরের নেমপ্লেটে এতজনের নাম লেখা সম্ভব নয় বলে ওরা বাইরের দরজায় একটি কাঠের ফলক লাগিয়ে, সেখানে প্রত্যেকের পদবীর প্রথম অক্ষর লিখে রেখেছে। আমি সেদিনকে ওদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি লেখা রয়েছে, গুদেহাতদেবেননা .. আমি তো দেখেই অবাক .. হাহাহাহা"

- "কিছুই বুঝলাম না, তাই হাসিও পেলো না। ওদের পদবীর প্রথম অক্ষর লিখে রেখেছে, তো কি হয়েছে? গুদেহাতদেবেননা .. এর মানেটাই বা কি?"

- "তুমি সত্যিই একটা গাম্বাট, কিচ্ছু বুঝতে পারলে না? দাঁড়াও, যে অক্ষরটা লিখেছি ওটার মাঝখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্পেস দিয়ে, ওটাকে বাক্য বানাতে হবে, তাহলে নিশ্চয়ই বুঝবে! গুদে হাত দেবেন না .. এবার বুঝলে?"

- "ইশ্ তুমি না ভীষণ অসভ্য .."

- "love me or hate me আমি এইরকমই .. আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?"

- "কি কথা?"

- "গুদ কথার মানে তুমি কোত্থেকে জানলে?"

- "এই দেখো, আমি কিন্তু তোমার বন্ধুর মা! আমাকে এসব প্রশ্ন করা তোমার উচিৎ নয়। তুমি ভীষণ দুষ্টু ছেলে, তোমাকে কেউ শাসন করেনি ছোটবেলা থেকে, তাই এরকম অসভ্য হয়েছো। আর একবার এসব কথা বললে কিন্তু কান মুলে দেবো।"

- "তাই দাও, তুমি কান মুলে দিলে তো তোমার শরীরের স্পর্শ পাবো সেটাই আমার কাছে অনেক।"

- "উফ আবার শুরু করলে?"

- "কি শুরু করলাম? এখনো তো কিছুই শুরু করিনি। তুমি এখন বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমার সঙ্গে চ্যাটিং করছো?"

- "না, বসে আছি বিছানাতে .."

- "কি পড়ে আছো?"

- "মানে?"

- "মানে, কি পড়ে বিছানায় বসে আছো? নাইটি না শাড়ি?"

- "কেনো?"

- "কেন আবার কি? আমি তো খুব সাধারণ একটা প্রশ্ন করলাম। তুমি এখন কি ড্রেস পড়ে আছো, সেটা বলতে পারবে না?"

- "নাইটি .."

- "কালার?"

- "বাব্বা , আবার কালারও জানতে হবে? হাল্কা গোলাপী রঙের।"

- "উফ্ গোলাপী রঙটা আমার খুব পছন্দের। স্লিভলেস? কাল সকালে তোমাদের বাড়িতে যখন গিয়েছিলাম, যেরকম পড়েছিলে, সেইরকম?"

- "হুঁ .."

- "কালকের মতো এখনো কি নাইটির নিচে ব্রা না পড়ে আছো?"

- "ইশ্ ছিঃ ছিঃ .. আমি কাল কত ভালো ভালো কথা বললাম আমার ছেলের সামনে তোমার সম্পর্কে! আর এখন তো দেখছি তোমার চোখ ভালো কিছু না দেখে, শুধু ওইসব দেখছিলো.."

- "ভালো কিছু বলতে তুমি কি বোঝাতে চাইছো? তোমার ঘরের ফার্নিচার, তোমার রান্নাঘরের গ্যাস, ইন্ডাকশন, বাসনপত্র, তোমার ছেলের ঘরের বইপত্র .. এগুলো বোঝাতে চাইছো?"

- "না তা নয়, তবে .."

- "তবে কি? নিজের কথায় নিজেই জড়িয়ে গেলে, দেখেছো? আরে বোকা মেয়ে, চোখের সামনে তোমার মত একজন মারকাটারি ফিগারের সুন্দরী মহিলা থাকতে অন্যদিকে যদি আমার চোখ যেত, তাহলে আমার পুরুষত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যেত। আসলে চিরকাল চোখের সামনে নিজের হেঁপোরুগী অসুস্থ বরটাকে দেখে এসেছো তো, যে কোনোদিন তোমার দিকে সেইভাবে নজরই দেয়নি! তাই ভাবছো সব পুরুষই তোমার বরের মতো ওইরকম দাঁতক্যালানে বাঞ্ছারাম। এবার বলো, আমি যেটা জিজ্ঞাসা করেছি। নাইটির নিচে ব্রা পড়েছ?"

[Image: 1651523193-82479-gif-url.gif]



ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply
দারুণ হয়েছে  clps
তবে তাড়াতাড়ি আসল খেলা শুরু হোক এবার happy happy 
লাইক এবং রেপু অ্যাডেড।
I'm the King of Dark
                &
I rule over all Devils
               devil2 devil2
[+] 1 user Likes Monen2000's post
Like Reply
অসাধারণ বর্ননা
[+] 1 user Likes Luca Modric's post
Like Reply
Postare amarsroshta r character...
Aar onar character gulo pure milf...
Hairy armpits and crotch, chubby belly , deep navel, eshob to thakbei....asa kori ekhaneo orokom asbe ..
Ashay bache chasha...
Waiting for next week
[+] 1 user Likes KingisGreat's post
Like Reply
(16-07-2023, 08:28 PM)Bumba Wrote:  প্রতিবিম্বটি যেন তার দিকে তাকিয়ে বলছিলো, "একটা মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ ছেলে তুমি। যে ব্যক্তি এতদিন তোমাদের পরিবারে বাইরে থেকে উঁকি মারছিলো, বর্তমানে সেই ব্যক্তি ছলচাতুরি করে তোমার মায়ের ব্যক্তিগত জীবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে! সেই মায়ের সন্তান হয়ে তুমি এর কোনো প্রতিবাদ না করে সেই ব্যক্তির দেওয়া এই মোবাইলটা নিয়ে গর্ববোধ করছো? ছিঃ লজ্জা লাগা দরকার।"
এই জায়গাটা আলাদা লাভলের শান্তি দিয়েছে আমাকে। হ্যা আমি মানছি এটা গল্প আর গল্পে এমন একটা মুহূর্ত না আসলে সেটি এগোবেই বা কিকরে? তবু ওই চরিত্রটা নিয়ে এটাই বলবো যত জানছি ততই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে মালটাকে জেনে। এমন ক্যালানে চোদা বিকৃত মাল কম হয়। শান্তশিষ্ট কমজোর ছেলেও হয়তো প্রয়োজনে নিজের সবটুকু দিয়ে লড়তে পারে কিংবা মুখ দিয়েও জবাব দিতে পারে কিন্তু যার অন্তরেরই কোনো মূল্য নেই ফাঁপা সে কি জবাব দেবে? এতো কিছু হতে দেখেও সে কিনা আরও কি হবে জানার অপেক্ষায়। তাই আজ সে না পারুক অন্তত বিবেক নামক বস্তুটি তাকে ধিক্কার জানিয়েছে। যদিও তার সাথে সেই আদিম রহস্যময় সত্তার লড়াই চলতেই থাকবে।
এবারে আসি বন্দনার ব্যাপারে। সেও বোধহয় কোথাও একটু কমজোর। হয়তো জীবনের লড়াই লড়তে লড়তে তার অন্তরের ইচ্ছাগুলো তাকে শক্ত করার বদলে ওই বিশেষ ব্যাপারে কমজোর করে ফেলেছে। নইলে যতই দুঃখ থাকুক জীবনে স্বামীর অপমান তাও অচেনা এক পরপুরুষের থেকে শুনেও সেভাবে কোনো জবাব না দেওয়া, তার মুখে চোদা শুনেও অন্তর থেকে দৃঢ় না হতে পারা সেটাই প্রমান দিচ্ছে। অনেক নারীই হয়তো এতটা কোমল হতোনা অমন পুরুষের প্রতি। হয়তো ওই না পাওয়া ইচ্ছে গুলো কোথাও যেন তাকে আরও আরও কমজোর করে তুলছে। এবার দেখার কি হয় আগে। যদিও অনেক কিছুই হতে চলেছে।
খুব ভালো পর্ব।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
Darun hoyeche dada
[+] 1 user Likes Dushtuchele567's post
Like Reply
(16-07-2023, 08:42 PM)Monen2000 Wrote: দারুণ হয়েছে  clps
তবে তাড়াতাড়ি আসল খেলা শুরু হোক এবার happy happy 
লাইক এবং রেপু অ্যাডেড।

খেলা হবে, ভয়ঙ্কর খেলা হবে  thanks

(16-07-2023, 08:46 PM)Luca Modric Wrote: অসাধারণ বর্ননা

অনেক ধন্যবাদ  thanks
Like Reply
(16-07-2023, 09:07 PM)Baban Wrote: এই জায়গাটা আলাদা লাভলের শান্তি দিয়েছে আমাকে। হ্যা আমি মানছি এটা গল্প আর গল্পে এমন একটা মুহূর্ত না আসলে সেটি এগোবেই বা কিকরে? তবু ওই চরিত্রটা নিয়ে এটাই বলবো যত জানছি ততই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে মালটাকে জেনে। এমন ক্যালানে চোদা বিকৃত মাল কম হয়। শান্তশিষ্ট কমজোর ছেলেও হয়তো প্রয়োজনে নিজের সবটুকু দিয়ে লড়তে পারে কিংবা মুখ দিয়েও জবাব দিতে পারে কিন্তু যার অন্তরেরই কোনো মূল্য নেই ফাঁপা সে কি জবাব দেবে? এতো কিছু হতে দেখেও সে কিনা আরও কি হবে জানার অপেক্ষায়। তাই আজ সে না পারুক অন্তত বিবেক নামক বস্তুটি তাকে ধিক্কার জানিয়েছে। যদিও তার সাথে সেই আদিম রহস্যময় সত্তার লড়াই চলতেই থাকবে।
এবারে আসি বন্দনার ব্যাপারে। সেও বোধহয় কোথাও একটু কমজোর। হয়তো জীবনের লড়াই লড়তে লড়তে তার অন্তরের ইচ্ছাগুলো তাকে শক্ত করার বদলে ওই বিশেষ ব্যাপারে কমজোর করে ফেলেছে। নইলে যতই দুঃখ থাকুক জীবনে স্বামীর অপমান তাও অচেনা এক পরপুরুষের থেকে শুনেও সেভাবে কোনো জবাব না দেওয়া, তার মুখে চোদা শুনেও অন্তর থেকে দৃঢ় না হতে পারা সেটাই প্রমান দিচ্ছে। অনেক নারীই হয়তো এতটা কোমল হতোনা অমন পুরুষের প্রতি। হয়তো ওই না পাওয়া ইচ্ছে গুলো কোথাও যেন তাকে আরও আরও কমজোর করে তুলছে। এবার দেখার কি হয় আগে। যদিও অনেক কিছুই হতে চলেছে।
খুব ভালো পর্ব।

প্রথমেই জানাই অনেক ধন্যবাদ  thanks সৈকতের উপর যাতে তোমাদের রাগ হয়, ওকে জুতোপেটা করতে ইচ্ছা করে, গালাগালি দিতে ইচ্ছা করে .. সেই ভাবেই তো সৃষ্টি করা হয়েছে চরিত্রটা। আর বন্দনা দেবীর সম্পর্কে যেটা বললে সেটা একদম সঠিক বিশ্লেষণ হয়েছে। 
Like Reply
(16-07-2023, 08:55 PM)KingisGreat Wrote: Postare amarsroshta r character...
Aar onar character gulo pure milf...
Hairy armpits and crotch, chubby belly , deep navel, eshob to thakbei....asa kori ekhaneo orokom asbe ..
Ashay bache chasha...
Waiting for next week

দেখা যাক, আপনার আশা পূর্ণ করতে পারি কিনা  thanks 

(16-07-2023, 09:12 PM)Dushtuchele567 Wrote: Dushtuchele567Darun hoyeche dada

অনেক ধন্যবাদ  thanks



আগের পৃষ্ঠায় নতুন পর্ব চলে এসেছে। যাদের পড়া হয়নি, তারা চাইলে পড়ে নিতে পারেন।
Like Reply




Users browsing this thread: abeast, 1 Guest(s)