Thread Rating:
  • 86 Vote(s) - 2.95 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Thriller নন্দনা - NOT OUT (সমাপ্ত)
Your stories are magical. Well thought out plots.Great writing skill and style. You are outstanding in this genre. Please don't even think of leaving this forum.
[+] 1 user Likes swank.hunk's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
[Image: Polish-20231013-165451054.jpg]

(৯)

যৌবনের অমোঘ আকর্ষণে নন্দনা যখন নিজের মুখ গুঁজে দিতো আমার বুকের মধ্যে নিরন্তর আবেগে! তখন থেকেই তো আমার পাঁজরের সেই গোপন কুঠুরিতে অতি যত্নে বড় করা সেই 'ভালোবাসা' নামের পাখিটার কিচিরমিচির শুনতে পেতাম। আমি অবশ্য ওকে বলতে পারিনি কোনোদিন সেই পাখির নাম।

দেখলাম, মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত এক অলৌকিক লজ্জাবতী তরুর মতো নন্দনা এসে দাঁড়িয়েছে ঠিক আমার সামনে। অথচ ওর বুক থেকে ঝুলে থাকা স্বাদ, বর্ণ, গন্ধবহুল দুই ফল সম্পূর্ণ নিরাবরণ। স্পর্শ করবো বলে সেই ফলদুটোর দিকে যেই হাত বাড়ালাম, শুনতে পেলাম কে যেন বললো, "সময় হয়নি এখন, পরিণত হবে সামনেই। তখন না হয় ছুঁয়ে দেখো!" কিছুটা মনঃক্ষুন্ন হয়ে নগ্ন পায়ে বহুদূর গেলাম পদব্রজে। পায়ের পাতা, বুকের পাঁজর .. এই দুটোতেই যেন কাঁটা বিঁধলো।

দিন গেলো, মাস গেলো, ঋতু পরিবর্তন হলো, বছর ঘুরলো, ঝড়-বৃষ্টি হলো, বিদ্যুৎ চমকালো আর তার সঙ্গে সেও হয়ে উঠলো পরিপূর্ণ ফলবতী এক চিত্রগ্রাহী বৃক্ষ। সুবাস ছড়াতে শুরু করলো ওর পরিপক্ক প্রবৃদ্ধ এবং বর্তুল দুই ফল। ওর মসৃণ দেহকান্ড আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠলো বন্য হিংস্র প্রাণীগুলোর।

আর আমি? আমি তখন ধ্যানমগ্ন হয়ে রয়েছি। সেদিন চাঁদনী রাত, আকাশ-বাতাস পাগল করলো বাতাবী লেবুর কড়া ঘ্রান .. আমি তখনও ধ্যানভঙ্গ। আমাবস্যা ছুঁয়ে দিলো ফলবতী নন্দনার কোমল শরীর। উত্তেজনায় পাগল হয়ে গেলো হিংস্র জানোয়ারগুলো।

শরীরের আকর্ষণ তো ছিলোই, হয়তো তার সঙ্গে ছিলো ওর অবচেতন মনের পরোক্ষ হাতছানি! যে নিষিদ্ধ আকাঙ্ক্ষা বহুবছর ধরে কোথাও সে সঙ্গোপনে লুকিয়ে রেখেছিলো। হয়তো এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। আর ওরা শিকারের খোঁজ পেয়ে দুঃসাহসী হয়ে উঠলো। শিকারের পিছু ধাওয়া করতে করতে শয়নকক্ষে এসে পৌঁছে গেলো।

মাঠে নামার আগে সজ্জিত হলো দুই স্তন, নাভিমূল, যোনিদেশ, নগ্ন দুই উরু .. সবকিছু। শুরু হলো ভানুমতির খেল। আমি তখনও ধ্যানভঙ্গ, তখনও দর্শক। তারপর প্রচন্ড এক বজ্রাঘাত হলো আমার মাথায়। মৃতপ্রায় আমি শুয়ে শুয়ে দেখলাম আমার প্রাণভোমরা নির্গত হচ্ছে এই নষ্ট দেহ থেকে। জ্বর এলো সারা শরীর জুড়ে। ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকালাম। ধ্যানভঙ্গ হলো, পুনর্জন্ম হলো আমার।

★★★★

একটানা বাজতে থাকা মোবাইলের রিংটোনের শব্দে ঘুম ভাঙলো আমার। কলটা রিসিভ করার আগেই কেটে গেলো, দেখলাম একটা আননোন নম্বর থেকে ফোন এসেছে। গত রাতে ঘটা সমস্ত ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে মনে পড়ে গেলো। ধড়মড় করে উঠে বসলাম আমি। দেখলাম ঘর পুরো ফাঁকা, ঝুমার সঙ্গে যে বিছানাতে ছিলাম, সেই বিছানাতেই রয়েছি আমি .. কিন্তু একা। আমার পরনে শুধু অন্তর্বাস। ভাগ্যিস চোখ বুঝে আসার আগে ওটা পড়ে নিয়েছিলাম। খাটের একদম ধারে পায়ের নিচে আমার জামা-প্যান্টের হদিশ পেলাম। দেওয়াল ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই চমকে উঠলাম আমি .. সকাল দশটা বাজে!!

হবে নাই বা কেনো! কাল রাত দু'টোর আগে দু'চোখের পাতা এক করতে পারিনি। আমার বুকের উপর নেতিয়ে পড়ে ঝুমা সেই যে ঘুমিয়ে পড়লো, অনেক ডাকাডাকির পরেও ওর ঘুম ভাঙাতে পারিনি। ওরকম ধুমসি চেহারার একজন মহিলাকে আমার উপর থেকে নামাতে হিমশিম খেয়ে গিয়েছিলাম আমি। আমারও চোখদুটো ঘুমে জড়িয়ে আসছিলো, কিন্তু নিজের বিবাহিতা স্ত্রীকে ওই কামুক দুর্বৃত্তগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাই কি করে?

হার্জিন্দার আমার বউয়ের আচোদা পোঁদ মারার পর একটু রেস্ট পেয়েছিলো নন্দনা। এর পেছনে অবশ্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিলো। ঝুমা আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ঘুমোচ্ছিল বলে, ওর বাঁধনমুক্ত হয়ে বিছানা থেকে উঠতে পারছিলাম না ঠিকই, কিন্তু হারামি পাঞ্জাবীটা ওকে রেহাই দেওয়ার পর নিজের পোঁদ উঁচু করে বিছানার উপর উপুড় হয়ে শুয়ে বালিশে মুখ বুজে যখন ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছিল আমার বউ, তখন প্রমোদের বলা একটা কথায় চমকে উঠেছিলাম আমি।

হার্জিন্দারের বাঁড়ার ঠাপন খেয়ে অনেকটাই প্রশস্ত হয়ে যাওয়া নন্দনার পোঁদের ফুটোর গভীরে প্রমোদ নিজের আঙুল ঢুকিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বেশ কিছুক্ষণ পরীক্ষা করার পর আঙুলটা বের করে নিয়ে এসে রবার্টকে দেখিয়ে বললো, "দেখেছো? ভালো করে দেখো, আঙুলে রক্ত লেগে রয়েছে আমার। বাঞ্চোতটা আমার বৌমার পোঁদ মেরে ফাটিয়ে দিয়েছে। ওই জন্য শুয়োরের বাচ্চাকে হাত লাগাতে দিচ্ছিলাম না এতক্ষণ ধরে। প্রমোদের কথায় প্রথমে কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়লেও, পরে ওকে প্রবোধ দিয়ে রবার্ট বললো, "আরে ঠিক আছে, এই সামান্য ব্যাপার নিয়ে এত চাপ নেওয়ার দরকার নেই। তাছাড়া চোদোন খেলায় একটু রক্তপাত হলে, সেটা শুভ হিসেবেই ধরা হয়।"

'রতিক্রিয়ায় রক্তপাত' শুভ? মানে, কুছ ভি!! হ্যাঁ? রবার্টের কথা শুনে গা জ্বলে গেলো আমার। সেই মুহূর্তে দেখলাম নন্দনা নিজের মুখ তুলে প্রমোদের উদ্দেশ্যে ফিসফিস করে কিছু বললো। আমার স্ত্রীর কথাগুলো শুনতে না পেলেও, ওর বলা কথাগুলো উচ্চকণ্ঠে রিপিট করলো রজত, "পেচ্ছাপ পেয়েছে সোনা? তখন তো একবার আমার চোদোন খেতে খেতে আমার বাঁড়াতেই মুতে দিলে! তাও সেটা দেড়ঘন্টা আগের কথা। এতক্ষণে তো আবার পেচ্ছাপের বেগ চাপারই কথা। চলো তোমাকে মুতিয়ে দিই .."

রজতের মুখে কথাগুলো শোনার পর অবাক হয়ে গেলাম আমি। আমার বউ কি বাচ্চা মেয়ে, যে ওকে পেচ্ছাপ করতে সাহায্য করবে হারামিটা? রজতের বলা কথাগুলোর প্রমাণ কিছুক্ষণের মধ্যেই পেলাম। দেখলাম খাটের পাশে একটা প্লাস্টিকের গামলা এনে রাখলো ইউসুফ। "পেচ্ছাপ করার জন্য বাথরুমে যাওয়ার কি দরকার? তোমাকে এখানেই করিয়ে দিচ্ছি আমি .." কথাগুলো বলে আমার স্ত্রীকে একপ্রকার জোর করেই খাট থেকে টেনে নিচে নামালো রজত। "হবে না, এভাবে হবে না আমার। প্লিজ আমাকে বাথরুমে যেতে দিন .." আকুতি করে বললো নন্দনা।

"হবে হবে, এই ভাবেই হবে। জীবনে কতো জেদি মহিলাকে এই পদ্ধতিতে হিসি করলাম আমার সামনে, আর তোমাকে পারবো না?" কথাগুলো বলে নন্দনার গুদের পর্দাদুটো দুই দিকে ফাঁক করে, গুদের গর্তে নিজের তর্জনীটা ঢুকিয়ে জোরে জোরে খেঁচে দিতে দিতে মুখ দিয়ে "শশশশ শশশশ" এরকম শব্দ করতে লাগলো রজত।

"উফফফ মা গো, কি করছেন বলুন তো এসব? আমি এগুলো একদম পছন্দ করি না। আঁউউউ .. এত চেষ্টা করেও আটকাতে পারলাম না। হায় ভগবান, ইশ্ কি লজ্জা .." দেখলাম কথাগুলো বলতে বলতে রজতের হাত ভিজিয়ে ওই প্লাস্টিকের গামলাটার মধ্যে ছরছর করে পেচ্ছাপ করতে লাগলো আমার বউ। এই বিকৃতকাম দৃশ্য দেখে উল্লাস করে উঠলো মত্ত লম্পটগুলো।

"তোমাকে এবার একটু পরিষ্কার করিয়ে দিই চলো। রাতে স্নান না করলে এই নোংরা, ঘেমো শরীরে ঘুমাতে পারবে না একদম।" পেচ্ছাপ করার পর নন্দনার হাত ধরে ওর অনুমতি ছাড়াই ওকে বাথরুমের দিকে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়ার পথে কথাগুলো বললো ইউসুফ। বাথরুমের দরজা খোলাই ছিলো। ভেতর থেকে মুসলিম ছেলেটার গর্জন, সেই সঙ্গে নন্দনার গোঙানি আর শীৎকার ভেসে আসছিলো আমার কানে। ধীরে ধীরে একসময় সবকিছু শান্ত হলো। শুরু হলো জলের শব্দ এবং তার সঙ্গে ইউসুফ আর নন্দনার খিলখিল করে হাসি। হয়তো বিধর্মিটা এতক্ষণে আমার স্ত্রীর যৌনাঙ্গ পুনরায় নিজের বীর্যে ভাসিয়ে দিয়েছে। হয়তো ওরা এখন শাওয়ারের নিচে স্নান করছে। হয়তো ইউসুফ আমার বউটার সারা শরীর ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে দেওয়ার বাহানায় ওর স্তনযুগল থেকে শুরু করে নিতম্বদ্বয় সবকিছু টিপে চটকে মজা নিচ্ছে। আর সহ্য করতে পারলাম না আমি। চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। তারপর কখন লাল পরী আর নীল পরীরা এসে আমার চোখের পাতায় ঘুম এঁকে দিয়ে গেলো, খেয়ালই করিনি।

★★★★

আবার ফোনটা বেজে ওঠাতে, ভাবনার ঘোর কাটলো আমার। তাকিয়ে দেখলাম আগের নম্বরটা থেকেই ফোন এসেছে। কল রিসিভ করে ফোনটা কানে দিতেই ওপাশ থেকে যে কথাগুলো শুনলাম তাতে শুধু যে চমকে উঠলাম তা নয়, তার সঙ্গে আমার দুই চোখে জড়িয়ে থাকা ঘুম, শরীরের ক্লান্তি .. সবকিছু এক নিমেষে উধাও হয়ে গেলো। রবার্ট ফোন করেছে। ফোনটা তুলতেই ওপাশ থেকে গোয়ানিজটা খেঁকিয়ে উঠলো, "এতক্ষণ ধরে তোমাকে ফোন করছি, শালা কুম্ভকর্ণের ঘুম বটে তোমার মাইরি। আমার ফোনটা একবার ধরার প্রয়োজন বোধ করছো না! যাই হোক, শোনো তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করে নিয়ে সি-বীচে চলে এসো। বাড়ি থেকে বেরিয়ে পূর্বদিক ধরে সোজা হাঁটলেই আমাদের দেখতে পেয়ে যাবে। তোমার ন্যাকাবোকা, আতুপুতু বউটা তোমাকে খুব মিস করছে।" কথাগুলো বলে ফোনটা কেটে দিলো রবার্ট।

ফ্রেশ হয়ে, জামাপ্যান্ট পড়ে ড্রয়িংরুমে এসে দেখলাম সাগরকে কোলে নিয়ে ডাইনিং টেবিলে বসে রয়েছে শান্তিরঞ্জন। তার পাশে আমার বাপ্পা বসে ব্রেড আর জ্যাম খাচ্ছে। 'ছেলেটা এক রাতেই কতটা বড় হয়ে গেলো। মা'কে কাছে না পেয়ে একা একাই খেতে শিখে গেছে।' চোখের কোণটা ভিজে এলো আমার। নিজেকে সামলে নিয়ে বাপ্পার কাছে গিয়ে ওর মাথার চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে বললাম, "আমার বেটা কত বড় হয়ে গেছে, কি সুন্দর নিজের হাতে ব্রেকফাস্ট করছে! কাল রাতে ভালো ঘুম হয়েছিলো তো?"

"হ্যাঁ বাপি, কাল রাতে মেসো আমাকে একটা দারুন ফেয়ারী টেলের গল্প বলে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।" আমার দিকে ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিয়ে উত্তর দিলো বাপ্পা।

আমার ভায়রাভাইয়ের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার ভঙ্গিতে বললাম, "থ্যাঙ্কস ফর এভরিথিং , তুমি না থাকলে আমার ছেলেটাকে কাল রাতে কি করে যে সামলাতাম, আমি নিজেও জানিনা। সৈকতকে দেখছি না, ও কোথায়?"

"সৈকত গেছে সমুদ্র সৈকতের হাওয়া খেতে। বুঝতে পারলে না? আরে বাবা ওরা পাঁচজন তোমার আর আমার বউকে নিয়ে সি-বীচে যাওয়ার সময় সৈকতও গেছে ওদের সঙ্গে। তোমার জন্যই এতক্ষণ ধরে না খেয়ে, বসে বসে অপেক্ষা করছি। তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করে এবার আমাদেরও যেতে হবে ওখানে।" শান্তিরঞ্জনের এই কথায় ডাইনিং টেবিলে বসে ব্রেড, বাটার আর ওমলেট দিয়ে ব্রেকফাস্ট সারতে লাগলাম আমরা।

রবার্টের বলে দেওয়া রাস্তা ধরে গিয়ে যখন ওখানে পৌঁছলাম তখন প্রায় বেলা পৌনে এগারোটা। পুজো আসতে আর মাত্র সাতদিন বাকি। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় বলে সাঙ্ঘাতিক রকমের গরম না পড়লেও, সূর্য এখন মধ্যগগনে। তাই কিছুটা হলেও গরম তো লাগছিলই। তবে প্রাকৃতিক তাপমাত্রাকে ছাপিয়ে এখানে উষ্ণতা ছড়াচ্ছিলো নন্দনা আর ওর পরনের পোশাক।

পাতলা সিল্কের কাপড়ের উপর চিকনের কাজ করা কালো রঙের একটা বিকিনি ব্রা আর তার সঙ্গে ম্যাচিং প্যান্টি পড়ে রয়েছে আমার স্ত্রী। মক্ষিরানীর মতো ওকে ঘিরে রয়েছে পুরুষ মৌমাছির দল। যে দলে প্রমোদ থেকে শুরু করে হার্জিন্দার, রবার্ট থেকে শুরু করে ইউসুফ .. সকলেই রয়েছে। পুরুষেরা সবাই খালি গায়ে শুধুমাত্র একটা শর্টস পড়ে রয়েছে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম একটু তফাতে দাঁড়িয়ে সৈকতকে কিছু একটা বোঝাচ্ছে ওর পিসেমশাই রজত। সৈকতের পরনে অবশ্য জামা-প্যান্ট। এখানে আসার আগে বাপ্পাকে আমাদের সঙ্গে করে নিয়ে আসতে কিছুটা ইতস্ততঃ করছিলাম আমি। কিন্তু এইটুকু বাচ্চাকে একা কোথায় রেখে আসবো? তাই বাধ্য হয়ে নিয়ে আসতে হলো। কারণ এখানে এসে নিজের মাম্মামকে ও কি অবস্থায় দেখবে, সেই বিষয়ে আমার একটা আশঙ্কা ছিলোই। নন্দনার পোশাক দেখে আমার মনের সেই আশঙ্কা, সত্যিতে পরিণত হলো।

"মাম্মাম, কি কচ্ছো তুমি এখানে? কাল রাতে তোমার জন্য কতক্ষণ ওয়েট করলাম, কিন্তু তুমি এলেই না! জানো তো, মেসো আমাকে কালকে একটা খুব সুন্দর ফেয়ারী টেলের গল্প বলেছে। তুমি এটা কি পড়েছো গো মাম্মাম? কেন পড়েছো?" কথাগুলো বলে দৌড়ে ওর মায়ের কাছে ছুটে গিয়ে নন্দনাকে জড়িয়ে ধরলো বাপ্পা।

এর উত্তরে আমার স্ত্রী কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো; তার আগেই প্রমোদ বাপ্পাকে কোলে তুলে নিয়ে ওর গালে একটা হামি খেয়ে বললো, "ওই যে সেদিন আমরা তোমাদের বাড়িতে তোমার মায়ের ট্রিটমেন্ট করতে গেছিলাম, মনে আছে তো তোমার? আজও এখানে তোমার মাম্মামের ট্রিটমেন্ট হবে। আসলে তোমার মাম্মাম তো একটু মোটা হয়ে গেছে, তাই প্রথমে আমরা কবাডি খেলবো, তারপর সমুদ্র স্নান করবো। সেই জন্যই তো তোমার মা সুইমিং কস্টিউম পড়েছে। ওই দেখো, তোমার মাসিও পড়েছে। টিভিতে দেখোনি, যখন মেয়েরা সাঁতার কাটে তখন এইরকম পোশাক পড়ে!" গোয়ানিজটার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো বাপ্পা।

প্রমোদের কথা শোনার পর আমার চোখ গেলো ঝুমার দিকে। দেখলাম ও নন্দনার মতোই একটা বিকিনি ব্রা আর প্যান্টি পড়ে রয়েছে, তবে সাদা রঙের। একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, গতকাল পর্যন্ত আমার বড় শ্যালিকার বডি ল্যাঙ্গুয়েজে সবসময় একটা ডেয়ারডেভিল ব্যাপার লক্ষ্য করছিলাম। ওকে আমার ভদ্রবাড়ির বউ না মনে হয়ে অন্য কিছু মনে হচ্ছিলো। থাক সেই শব্দটা এখানে উচ্চারণ করলাম না। কিন্তু আজ ওর মধ্যে একটা নারীসুলভ লজ্জা চোখে পড়লো আমার। সর্বোপরি কালকে রাতে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনাটার জন্য কিনা জানিনা, আমার চোখের দিকে তাকাতে পারছিলো না ঝুমা।

ভেবেছিলাম কবাডি খেলার নাম শুনে অন্তত একটু হলেও প্রতিবাদের আভাস পাবো আমার স্ত্রীর দিক থেকে। কিন্তু নন্দনার শরীরী ভাষা দেখে আমার মনে হচ্ছিলো, গতকাল যেটুকু লজ্জাশরম অবশিষ্ট ছিলো ওর মধ্যে, আজ তার ছিড়েফোঁটাও নেই। হঠাৎ করে পাল্টে যাওয়া আমার বউয়ের এই ভাবমূর্তি দেখে শুধু যে অভিমান হলো ওর উপর তার নয়, কিছুটা অবাকও হলাম। তার সঙ্গে এটাও লক্ষ্য করলাম, ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকা কামুক পার্ভার্টগুলো নির্লজ্জভাবে বিকিনি পরিহিতা আমার অর্ধনগ্না স্ত্রীর অর্ধেকের বেশি উন্মুক্ত হয়ে পড়া স্তনযুগল, নিতম্বজোড়া থেকে শুরু করে উন্মুক্ত খুব ছোট ছোট চুলে ভরা বাহুমূল, সুগঠিত দুই নগ্ন উরু, এমনকি ওর প্যান্টির সামনের ক্যামেল টো-এর প্যাটার্ন তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছিলো।

খেলা শুরুর আগে আমাকে আর শান্তিরঞ্জনকে ওদের তরফ থেকে অনেকবার বলা হয়েছিলো খেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য। কিন্তু একটা মিনিমাম আত্মসম্মানবোধ বলে তো ব্যাপার আছে? আমরা দু'জনের কেউই রাজি হলাম না। দেখলাম দাগের একদিকে দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই পাঁচ ভয়ঙ্কর দুর্বৃত্ত, আর অন্যদিকে দাঁড়িয়ে সৈকত তার মা আর ছোট মাসির সঙ্গে। আচ্ছা, এটা কিরকম দলগঠন? প্রথমতঃ দুই দলের প্রতিযোগিদের সংখ্যা সমান নয় .. একদিকে পাঁচ একদিকে তিন। তার উপর ওই পাঁচজন বলশালী পুরুষের কাছে এই দু'জন নারী আর একটা রোগা পাতলা কলেজপড়ুয়া ছেলে তো এক নিমিষে হওয়ার মতো উড়ে যাবে। এখন মনে হচ্ছে, খেলায় পার্টিসিপেট করলেই বোধহয় ভালো হতো। তবে এত কিছুর মাঝেও বাপ্পা কিন্তু ব্যাপারটা ভীষণ এনজয় করছিলো। বালির উপর অস্থায়ীভাবে তৈরি করা কবাডি কোর্টের বাইরে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে দিয়ে উৎসাহিত করছিলো নিজের মাম্মামকে।

শুরু হলো কবাডি খেলা। প্রথমে দেখলাম ওই দিক থেকে মুখে কিছু একটা বিড়বিড় করতে করতে হেলতে দুলতে দাগের এপারে এলো ইউসুফ। ওকে এদিকে আসতে দেখেই আমার স্ত্রী আর ঝুমা দু'জনেই ভয়ে দু'পা পিছিয়ে গেলো। বেচারা সৈকত আর কি করে? বিধর্মীটাকে আটকানোর জন্য ওকেই এগিয়ে আসতে হলো। কিন্তু এরপর যেটা হলো, সেটা খুবই লজ্জাজনক এবং বেদনাদায়ক। সৈকত সামনে আসতেই ইউসুফ ওকে প্রথমে দুই হাতে জড়িয়ে ধরলো, তারপর নিজের পেশীবহুল হাতদুটো দিয়ে মাথার উপর উঠিয়ে, চারিদিকে ঘুরিয়ে মুখে একটা যুদ্ধজয়ের হাসি এনে অস্থায়ী কবাডি কোর্টের পাশে বালিতে ঢাকা সি-বীচের উপর ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললো, "ইউ আর আউট .."

যন্ত্রণায় কঁকিয়ে উঠলো ছেলেটা। এটা যদি সান বাঁধানো মেঝে হতো, তাহলে নির্ঘাত সৈকতের কোমর এবং মাথা দুটোই ভাঙতো আজ, বালি বলে রক্ষা পেয়ে গেলো। তবে ওর যন্ত্রণাকাতর গলার আওয়াজ শুনে বুঝলাম বেচারার খুব ব্যথা লেগেছে। ছেলের এই দুর্দশা দেখে নিজেকে আর আটকাতে পারলো না আমার ভায়রাভাই। সাগরকে আমার কোলে দিয়ে  ছুটে চলে গেলো সৈকতের কাছে, তারপর ওকে মাটি থেকে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরলো। যত কঠিন হৃদয়ের আর যত দুশ্চরিত্রা মা হোক না কেন, ছেলের কষ্টে মায়ের প্রাণ কেঁদে উঠবেই। সৈকতের অবস্থা দেখে হেঁটে ওই দিকে যেতে গেলে, নিজের স্ত্রীর দিকে হাত তুলে ইশারায় থামার নির্দেশ দিলো শান্তিরঞ্জন। লক্ষ্য করলাম সৈকতের বাবার চোখের দৃষ্টি সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছে। সেই দৃষ্টিতে নিজের স্ত্রীর প্রতি ভয় এবং সঙ্কোচের বদলে, ক্রোধ এবং ঘৃণা দেখতে পেলাম। নিজের স্বামীর চোখের দিকে তাকিয়ে আর এগোনোর সাহস পেলো না আমার বড় শ্যালিকা।

"কাম অন ঝুমা .. এবার তোমাদের টিমের টার্ন। তুমি এদিকে এসো .. হারি আপ .." যেন কিছুই হয়নি, ইট'স পার্ট অফ এ গেম .. এরকম একটা ভাবভঙ্গি করে গলাটা একটু উচ্চস্বরে তুলেই কথাগুলো বললো রজত।

আমি তো আর আমার বড় শ্যালিকার মনের মধ্যে ঢুকতে পারছিলাম না। তবে মনের ভেতর চলতে থাকা প্রতিক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ সর্বদা মুখের উপর পড়ে। ঝুমার মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম, আত্মগ্লানি এবং অনুশোচনা কুরে কুরে খাচ্ছিলো ওকে। কিন্তু কিছু করার নেই 'আমায় যে সব দিতে হবে, সে তো আমি জানি। আমার যত বিত্ত প্রভু, আমার যত বাণী' তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাদা রঙের বিকিনি স্টাইল ব্রা আর প্যান্টি পড়া অবস্থাতে ধীর পায়ে বিপক্ষের কোর্টে ঢুকলো ঝুমা।

ঠিক তখনই রবার্ট বলে উঠলো, "না না এই মালটা নয়, এর বোনকে পাঠাও আগে এদিকে। কাল রাতে যে জিনিস টেস্ট করে নিয়েছি আমরা, তারপর আর ভুলভাল খাবার মুখে রুচবে না। সময় থাকলে পরে একে নিয়ে খেলা যাবে। আগে নন্দনাকে নিয়েই খেলবো আমরা, মেরা মতলব কবাডি খেলবো ওর সঙ্গে।" কথাগুলো শোনার পর দেখলাম অপমানে কিরকম যেন কুঁকড়ে গেলো ঝুমা। একজন নারীর দৈহিক সৌন্দর্যকে পাবলিকলি অন্য এক নারীর সঙ্গে তুলনা করে, তাকে রিজেক্ট করে দেওয়ার থেকে বড় ইনসাল্টিং ব্যাপার আর কিই বা হতে পারে!

কর্তাদের ইচ্ছাতেই কর্ম। তার দিদিকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে এলো নন্দনা। কোমরে হাত দিয়ে ওর ঘাড় ঘুরিয়ে তাকানো, বিকিনি টাইপ সিল্কের প্যান্টির সৌজন্যে অর্ধেকের বেশি উন্মুক্ত হয়ে পড়া মাংসল ভারী নিতম্বে তরঙ্গ তুলে ওর ছন্দময় পদচালনা, মুখে একটা ইঙ্গিতপূর্ণ দুষ্টু হাসি বজায় রেখে হাঁটার তালে তালে ইচ্ছাকৃতভাবে ওর পাতলা ব্রায়ের আবরণে বন্দী ভারী স্তনজোড়া আন্দোলিত করার প্রচেষ্টা দেখে আমার মনে হলো রূপনগরের সমুদ্র সৈকতে চলা ফ্যাশন শো-এর 'শো'স টপার' আমার স্ত্রী। ভীষণ অচেনা লাগছিলো আমার সেই চেনা নন্দনাকে। এক রাতের মধ্যে এতটা বদলে গেলো মেয়েটা!

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 8 users Like Bumba_1's post
Like Reply
যেখানে কবাডি খেলার আয়োজন করা হয়েছে, তার ঠিক পেছনে একটা বিশাল নৌকা দেখতে পেলাম। কতকটা জাহাজের মতো দেখতে নৌকাটা এতটাই বড় যে, ওর পেছনে প্রায় দশজন দাঁড়িয়ে থাকলেও এদিক থেকে কিছুই দেখা যাবে না। এরকম নৌকা, এর আগে আমি জীবনে কখনো দেখিনি। নৌকাটার গায়ে 'রূপনগর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প' এই নামটা খোদাই করে লেখা রয়েছে। 

এখানে পরিবেশ এতটাই মনোরম এবং আকাশ এতটাই পরিষ্কার আর স্বচ্ছ যে, দূর দূরান্তের জিনিস চোখে পড়ছিলো। আমাদের ডানপাশে অর্থাৎ পশ্চিমপ্রান্তে সমুদ্রের প্রায় মাঝ বরাবর ছোট ছোট কয়েকটা, গুনে দেখলাম গোটা আটেক প্যাডেস্টাল ফ্যানের মতো জিনিস দেখতে পেলাম। ওগুলো দেখে মনের মধ্যে ভীষন কৌতুহল হলো বিষয়টা জানার জন্য। আমার ভায়রাভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম, "আচ্ছা ওইগুলো কি, বলতে পারো? ওই যে সমুদ্রের ঠিক মাঝখানে, ওই ছোট ছোট পাখার মতো দেখতে জিনিসগুলো?"

 "বিলক্ষণ বলতে পারি, তবে ওগুলো সমুদ্রের মাঝ বরাবর নেই, তার অনেক আগে রয়েছে। সমুদ্রের বিস্তৃতি সম্পর্কে তোমার কোনো ধারনা আছে? আর ওগুলো মোটেই ছোট ছোট জিনিস নয়, ওগুলোর উচ্চতা বিশাল। সেই জন্যই তো এত দূর থেকে দেখতে পাচ্ছো। কাল সন্ধ্যেবেলা তুমি ভেতরে ঢুকে যাওয়ার পর, আমি সমুদ্র সৈকতের বিশুদ্ধ হাওয়া খেতে এসেছিলাম মনে আছে? তখন এখানে একজনের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো আমার। একদম অল্পবয়সী ছেলে, ২৬ - ২৭ বছর বয়স হবে। কি যেন নাম মনু, নাকি মিনু, নাকি মানু .. ঠিক খেয়াল করতে পারছি না। ছেলেটা বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের একজন কর্মী। যাইহোক, ওর কাছ থেকেই শুনলাম রুপনগরের সমুদ্রের উপকূল থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের তলদেশে নোঙ্গর করা একটি বিশাল ফিল্ডের নির্দিষ্ট দূরত্ব অনুসারে স্থাপন করা হয়েছে আটটি উইন্ডমিল। যেগুলো এখান থেকে দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি উইন্ডমিলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি করে টারবাইন এবং এক একটি টারবাইন সর্বোচ্চ সাত দশমিক পাঁচ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। আশা করা হচ্ছে আমাদের দেশ এবং এই প্রকল্পের শরিক অন্য তিনটি দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় চল্লিশ শতাংশ আসবে এই ভাসমান বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে। সমুদ্রের তলদেশে যেখান থেকে ফিল্ডটি শুরু হয়েছে, সেখানকার গভীরতা ৮৫৩ ফুট, আর যেখানে গিয়ে সেটি শেষ হয়েছে, সেখানকার গভীরতা ৯৮৪ ফুট। অর্থাৎ ১৩০ ফুট লম্বা এই ফিল্ডটির মাধ্যমে সমুদ্রের বিভিন্ন গভীর অবস্থানে স্থাপন করা হয়েছে উইন্ডমিল ও টারবাইনগুলো। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সমুদ্র উপকূলে যেসব উইন্ডমিল-টারবাইন রয়েছে, সেগুলো সমুদ্রের তলদেশের সঙ্গে সংযুক্ত। ফলে ওই টারবাইনগুলো যেখানে স্থাপন করা হয়েছে, সেখানেই স্থির থাকে। কিন্তু এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের ফিল্ডটি ভাসমান এবং জলের নিচে নোঙ্গর করা। ফলে অপেক্ষাকৃত দূর ও গভীর সমুদ্রের জোর বাতাসও ধরতে সক্ষম হবে টারবাইনগুলো, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দৈনন্দিন বিদ্যুৎ উৎপাদনে। খবরের কাগজে বেরিয়েছিলো তো এই খবরটা। পড়োনি? তবে হ্যাঁ, ওই ছেলেটা একটা কথা বললো .. দিনের বেলা সমুদ্রে স্নান করা গেলেও, যেহেতু এই এলাকাটা প্রায় এক কিলোমিটারের মধ্যে জনবসতিহীন; তাই এখানে সন্ধ্যের পর থেকে জলে নামা নিষিদ্ধ। কারণ, সেই সময় থেকে ভোর রাত পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ চলে, জলে কারেন্ট থাকে। তাই জলে নামার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু অবধারিত।" আমার কাঁধে হাত রেখে কথাগুলো বললো শান্তিরঞ্জন।

★★★★

কবাডি খেলার কথা বলাটা তো একটা বাহানা মাত্র। এই পুরো বিষয়টা যে ওদের বিকৃতকাম নোংরামি এবং লালসার একটা অংশ হতে চলেছে, সেটা আমি আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। আমার সুন্দরী এবং আকর্ষণীয়া স্ত্রী ওইরকম একটা উত্তেজক পোশাক পড়ে লাস্যময়ী ভঙ্গিতে বিপক্ষের কোর্টে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে ওই পাঁচ দুর্বৃত্ত ওকে ঘিরে ধরে গোল গোল করে ঘুরতে আরম্ভ করে দিলো। আর ওদের মাঝে শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরিহিতা মক্ষিরানী রূপী নন্দনা মুখ বেঁকিয়ে, কপট রাগ দেখিয়ে পাছা দুলিয়ে দুলিয়ে হাঁটতে লাগলো।

ঠিক সেই সময় ফিরিঙ্গিদের মতো দেখতে লম্বা-চওড়া দানবরূপী রবার্ট আমার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে সুর করে একটি স্বরচিত গান গাইতে আরম্ভ করে দিলো ..

আঙ্গুর জ্যায়সা হোঁট তোমার দেখতে লাগে ভালো
কাজল কালো আঁখ তোমার পূর্ণিমারই আলো
রাগলে পরে, তোমায় আরও সেক্সি লাগে সুন্দরী
সুন্দরী গো সুন্দরী চললে কোথায়
ফুলটুসী গো মৌটুসী চললে কোথায়
কাল রাতের কথা ছেড়ে
আমার এই হাতটা ধরে
চলো না জলকেলিতে যাই
চলো না লুটেপুটে খাই

রবার্টের হেঁড়ে গলায় এই গান শুনে, নিজের রাগ দেখানোর অভিনয় জারি রেখে ঠুমক ঠুমককে চলতে লাগলো অন্তর্বাস পরিহিতা নন্দনা। আর ওর পেছনে আওয়ারা পাগল দিওয়ানার মতো যেতে লাগলো চার মধ্যবয়স্ক অর্ধোলঙ্গ পুরুষ এবং একজন যুবক। পুরো বিষয়টা দেখে আমার মনে হচ্ছিলো, এখানে একটা সি-গ্ৰেড ফিল্মের শুটিং চলছে। লক্ষ্য করলাম আমার স্ত্রীর হাঁটাটা কিছুক্ষণ পর দৌড়ানোতে পরিণত হলো। কবাডি কোর্ট ছাড়িয়ে পূর্বদিকে সমুদ্রের ধার বরাবর ছুটতে লাগলো নন্দনা। আর ওকে পিছন পিছন ধাওয়া করতে লাগলো পাঁচ দুর্বৃত্ত।

আমার থেকে কিছুটা তফাতে চলে গেলেও পরিষ্কার দেখতে পেলাম দৌড়ানোর তালে তালে আমার বউয়ের বিকিনি টাইপ ব্রা আবৃত ভারী বুকদুটো থলথল করে উপরনিচে উত্তেজকভাবে দুলছিলো। সেই সঙ্গে দেখতে পাচ্ছিলাম ওর মাংসল পাছার দাবনা দুটোর সিডাক্টিভ নাচন। দৌড়দৌড়িতে অনভ্যস্ত কিছুটা ভারী চেহারার নন্দনা নিজেকে বেশিক্ষণ মুক্ত রাখতে পারলো না শয়তানগুলোর থাবা থেকে। দৌড়ানো অবস্থাতেই পেছন থেকে আমার বউয়ের কোমরটা জড়িয়ে ধরে ওকে উপর দিকে তুলে নিলো দানবাকৃতি চেহারার রবার্ট। তারপর ট্রফি জেতার পর বিজয়ী দলের অধিনায়ক যেভাবে ট্রফিটাকে নিজের কাঁধে নিয়ে পাড়ায় ঢোকে, ঠিক সেইভাবে নন্দনাকে উল্টো করে নিজের ঘাড়ের উপর ফেলে পুনরায় কবাডি কোর্টে নিয়ে এলো রবার্ট। ওকে অনুসরণ করলো বাকি চারজন। আসার পথে রুপোলি পর্দার ন্যাকা-বোকা লাস্যময়ী হিরোইনদের মতো ভিলেনরূপী রবার্টের পিঠে দুমদুম করে নিজের শাখা-পলা পড়া হাত দিয়ে কিল মারছিলো আমার স্ত্রী এবং নিজের পা দুটো শূন্যে ছুঁড়ছিলো। অবাধ্য বাচ্চা, থুড়ি অবাধ্য নায়িকার বেয়াদপি থামানোর জন্য প্যান্টির আড়ালে প্রায় উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া ওর মাংসল নিতম্বের স্পঞ্জি দাবনায় মাঝে মাঝে চটাস চটাস করে চড় মারছিলো রবার্ট।

দেখলাম, আমার চোখের সামনে আমার স্ত্রীকে নিজের কাঁধ থেকে ধুপ করে বালির উপর ফেললো গোয়ানিজটা। মাটিতে পড়ে আমার বউয়ের কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়ার সুযোগ নিয়ে ওর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো একসঙ্গে পাঁচজন দুর্বৃত্ত। ওইরকম পাঁচ বলশালী দুর্ধর্ষ দুশমনের নিচে চাপা পড়ে আমার নরম-সরম সুন্দরী বউটার কি অবস্থা হচ্ছিলো, সেটা আমি খুব ভালোভাবেই টের পাচ্ছিলাম। দুষ্টু বুড়ো খোকাদের টিজ করার শাস্তি যে নন্দনা এবার পেতে চলেছে, সেটা বুঝতে বাকি রইলো না আমার।

দেখলাম, ততক্ষণে আমার স্ত্রীর শরীরটাকে নিয়ে ওরা নিজেদের ইচ্ছেমতো খেলতে শুরু করে দিয়েছে। প্রমোদ নিজের একটা হাত নন্দনার পেটের উপর নামিয়ে এনে নির্দ্বিধায় ওর চিকনের কাজ করা প্যান্টির ইলাস্টিক ভেদ করে ভেতরে ঢুকিয়ে দিলো। অন্যদিকে রজত আর হার্জিন্দার আমার বউয়ের ব্রায়ের তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে ওর দুটো মাই দখল করে নিলো। একটা জিনিস লক্ষ্য করছিলাম, এত কিছুর মধ্যেও নন্দনা মুখ দিয়ে ননস্টপ কিছু একটা বিড়বিড় করে যাচ্ছে। আমার বউয়ের গালে নিজের খসখসে জিভটা বোলাতে বোলাতে রবার্ট বললো, "মুখে কবাডি কবাডি বলাটা চালিয়ে যাও। একবার যদি থেমে যাও, তাহলে কিন্তু এই খেলায় হেরে যাওয়ার শাস্তি হিসেবে‌ পুরোপুরি ল্যাংটো করে দেওয়া হবে তোমাকে।" এবার বুঝতে পারলাম, আমার স্ত্রীর একনাগাড়ে মুখ চালিয়ে যাওয়ার কারণ। 

নন্দনার গোঙানি আর কোমর নাড়ানো দেখে বুঝতে পারলাম প্রমোদ অলরেডি প্যান্টির ভেতর দিয়ে ওর গুদের গর্তে উংলি করা শুরু করে দিয়েছে। অন্যদিকে স্তনমর্দনের মাঝে ব্রায়ের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে ওর বাঁ দিকের মাইটা ব্রায়ের ভেতর থেকে বের করে আনলো অসহিষ্ণু হার্জিন্দার। সেই মুহূর্তে আমার স্ত্রী পাঞ্জাবীটার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে ওর হাতের উপর আলতো করে একটা চাঁটি মেরে বললো, "জায়গার জিনিস জায়গায় রেখে দিলেই ভাল হয়, তা না হলে আমি কিন্তু ভীষণ রেগে যাবো .." 

দেখলাম নন্দনার এই আপাত নিরীহ কপট রাগ দেখানো ডায়লগ শুনে হার্জিন্দার আমার বউয়ের গালে চকাস করে একটা চুমু খেয়ে পুনরায় ওর বাঁ'দিকের মাইটা ব্রায়ের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে আবার চটকাতে শুরু করে দিলো। কিন্তু কয়েক মুহূর্তের জন্য সূর্যের প্রখর আলোতে আমার স্ত্রীর সাদা ধবধবে বিশাল মাই এবং গাঢ় খয়েরী রঙের টসটসে বোঁটার ঝলক দেখতে পেলো সবাই। অবাধ্য পাঞ্জাবীটা যেখানে প্রমোদ ছাড়া আর কারোর কথা শোনে না। সেখানে আমার স্ত্রীর কথার বাধ্য হয়ে ও যা বললো, তাই করলো এই লোকটা? তারমানে আমার স্ত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার গুরুত্ব দিতে শুরু করে দিয়েছে ওরা। আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে বলতে হয়, আমার স্ত্রীর নির্দেশ অনুসরণ করছে ওরা। তাহলে নন্দনা কেন জোর করে ওদের বলছে না, ওকে সবার সামনে এভাবে হিউমিডিয়েট না করতে! ওকে ছেড়ে দিতে! নাকি পুরো বিষয়টা ও নিজেই এনজয় করছে! 

"তোমার এই সেক্সি শরীরটা ঘাঁটাঘাঁটি করলেই হিট উঠে যায় আমার। তোমাকে এখনই এখানে চোদার মন করছে আমার। তুমি যদি অনুমতি দাও, তাহলে সব অ্যারেঞ্জমেন্ট করে নেবো আমরা .." কথাগুলো বলে নন্দনার ঘাড়ে গলায় পাগলের মতো মুখ ঘষতে লাগলো রবার্ট। গোয়ানিজটার কথা শুনে সকলে উল্লাস করে উঠলো একসঙ্গে। সত্যি কথা বলছি, আমি ভাবছিলাম আমার স্ত্রী হয়তো এবার রুখে দাঁড়াবে, প্রতিবাদ করবে ওদের কথায়। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে রবার্টের দিকে সলজ্জ ভঙ্গিতে তাকিয়ে নন্দনা বললো, "আপনাদের সব সময় ওই একই জিনিসের দাবি, তাই না? ওই জন্য আমি এখানে আসতে চাইছিলাম না আপনাদের সঙ্গে। যা খুশি করুন, আমি কিছু জানি না। তবে আমার একটাই শর্ত, এখানে আমার স্বামীর সামনে নয়, অন্য কোথাও।"

"যথা আজ্ঞা বেগমজান, তুমি ঠিক যেরকম বলবে আমরা সেরকমই করবো। তুমি যে আমাদের কথায় রাজি হয়েছো, তার জন্য আমরা ধন্য। ডোন্ট ওরি, তুমি না চাইলে তোমার স্বামীর সামনে তোমাকে আমরা চুদবো না। ওই যে ওইদিকে ওই বিশাল নৌকাটা দেখতে পাচ্ছ, ওর আড়ালে চলো আমরা যাই। ওখান থেকে তো তোমাকে কেউ দেখতে পাবে না! প্লিজ চলো সোনা, আর না করো না .." এই বলে পুনরায় আমার বউকে নিজের ঘাড়ের উপর উঠিয়ে একটা যুদ্ধ জয়ের হাসি হেসে নিজের বলে দেওয়া গন্তব্যের দিকে হেঁটে গেলো রবার্ট। ওকে অনুসরণ করলো বাকি চারজন।

কাল যে ছিলো ওই শয়তানগুলোর কাছে অমূল্য, আজ তার কোনো মূল্য নেই। আমার স্ত্রীর রূপ এবং শারীরিক সৌন্দর্যের স্বাদ পেয়ে ঝুমাকে পুরোপুরি অগ্রাহ্য করে সবাই মিলে নন্দনাকে নিয়ে নৌকার পিছনে চলে গেলো। করুণ চোখে ওইদিকে তাকিয়ে থেকে আগের দিনের নীল রঙের ওই আলখাল্লার মতো হাউসকোটটা গায়ে জড়িয়ে নিয়ে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ালো ঝুমা। ওর দিকে তাকিয়ে একটা করুণার হাসি হেসে শান্তিরঞ্জন উক্তি করলো, "চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়। তাই বলি, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।" তারপর নিজের ছেলের দিকে তাকিয়ে, "চল বাবু, ভেতরে চল .." এই বলে সৈকতকে ধরে আস্তে আস্তে বাড়ির দিকে হাঁটতে লাগলো।

আমাদের থেকে অদূরেই সী-বিচের উপর রাখা বিশাল নৌকাটার ওইপাশ থেকে ভেসে আসা নন্দনার শীৎকার এবং গোঙানির আওয়াজ কানে আসতেই বুঝতে পারলাম, ততক্ষণে খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমারও আর ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে মন চাইলো না। সাগরকে ওর মা অর্থাৎ ঝুমার কোলে দিয়ে, "এখনো কিন্তু খুব বেশি দেরি হয়ে যায়নি। খারাপ হতে তো এক মুহূর্তের বেশি সময় লাগে না। কিন্তু যদি একটু কষ্ট করে ভালো হতে পারো, তাহলে হয়তো সুখের মুখ খুব তাড়াতাড়ি দেখবে না, তবে শান্তি বিরাজ করবে জীবনে।" এইটুকু বলে বাপ্পার হাত ধরে আমিও রওনা হলাম বাড়ির অভিমুখে।

★★★★

লাঞ্চের কিছু আগে ইউসুফ আর হার্জিন্দার ফিরে এলেও, বাকি তিন দূর্বৃত্তের সঙ্গে আমার স্ত্রীকে ফিরতে না দেখে, ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলাম। পাঞ্জাবীটাকে এই মুহূর্তে কিছু জিজ্ঞাসা করলে, ও আমাকে চূড়ান্ত অপমান করে দেবে, তাই কিছুটা কুন্ঠিত হয়ে ইউসুফকে জিজ্ঞাসা করলাম, "ওরা কোথায়? ওদের আসতে কি দেরি হবে? না মানে, এত বেলা হয়ে গেলো এখনো স্নান, খাওয়া হয়নি তো! তাই জিজ্ঞাসা করছিলাম।" একেই বোধহয় বলে .. বুক ফাটে, তবু মুখ ফোটে না। আমার বিয়ে করা বউয়ের পরপুরুষের সঙ্গে চোদোন পর্ব সমাপ্ত হয়েছে কিনা, সেটা জিজ্ঞাসা করতে বাঁধলো, তাই স্নান, খাওয়ার অজুহাত দিলাম।

"ওদের আসতে অনেক দেরি হবে। ওরা যেখানে আছে আই মিন গেছে, সেখানে স্নান, খাওয়া, বিশ্রাম, ব্লা ব্লা, সব কিছুই হবে। তাই ওইসব নিয়ে চিন্তা না করে নিজেরা খেয়ে নাও। আর হ্যাঁ, ইভিনিংয়ে সবার জন্য একটা বিগ সারপ্রাইজ রয়েছে।" এইটুকু বলে মুখ টিপে হেসে চলে গেলো ইউসুফ। বিধর্মীটার মুখে কথাগুলো শুনে মনের মধ্যে একরাশ অজানা আশঙ্কা নিয়ে ওখানে জড়ভরতের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম আমি। 

বেলা গড়িয়ে দুপুর হলো, দুপুর গড়িয়ে বিকেল .. আজ সন্ধ্যেবেলা আবার কি নতুন ধরনের হিউমিলিয়েশনের সম্মুখীন হতে চলেছি, এটা ভেবে স্নান-খাওয়া সবকিছু মাথায় উঠলো আমার। এখনো ফিরলো না ওরা, হাজারো দুশ্চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছিলো আমাকে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ আমার মোবাইলে ফোন এলো নন্দনার। এতকিছুর পরেও মোবাইল স্ক্রিনে ওর নামটা দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম আমি। যাক, শেষমেশ অন্তত আমার কথা মনে তো পড়েছে ওর! কে জানে বেচারী কি অবস্থায় রয়েছে এখন! কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আমার স্ত্রীর নিরুত্তাপ কণ্ঠ ভেসে এলো, "এই শোনো, ফোনটা ছায়াকে দাও তো!"

"ছায়া আবার কে?" বিস্ময় প্রকাশ করে জিজ্ঞাসা করলাম। "অপদার্থ কি আর তোমাকে সাধে বলি? যে মহিলার রান্না দিনে চারবার খাচ্ছ, তার নামটাই জানো না? দেখো গিয়ে এখন কিচেনেই আছে হয়তো, ওকে দাও ফোনটা।"

ও আচ্ছা, তারমানে ওই অশোক বনের রাক্ষসীর নাম ছায়া! কিন্তু ওর সঙ্গে আমার বউয়ের কি দরকার থাকতে পারে? তাও আবার ফোনে! কিছুই বুঝতে পারলাম না আমি। জিজ্ঞাসা করলাম, "তোমার কি দরকার ওর সঙ্গে?" 

এবার গর্জে উঠলো নন্দনা, "তোমাকে একটা কথা বারবার বলতে হয় কেন? আমার হাতে বেশি সময় নেই, ফোনটা তাড়াতাড়ি দাও ওকে।"

যে মেয়েটা কোনোদিন আমার মুখের উপর কথা বলেনি, সে আজ আমাকে ধমকালো! আমার স্ত্রীর এই রূপ সম্পূর্ণ অচেনা মনে হচ্ছিলো আমার। তাই আর দ্বিরুক্তি না করে ঘর থেকে বেরিয়ে কিচেনে উঁকি মেরে দেখলাম, রান্নাঘরের তাক মুছছে ছায়া। ওর দিকে ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বললাম, "নন্দনা ম্যাডাম ফোন করেছে, তোমাকে চাইছে।" আমি ভেবেছিলাম আমার মতো ছায়াও অবাক হবে, ওর সঙ্গে আমার বউ কথা বলতে চাইছে এটা শুনলে। উল্টে আমাকেই অবাক করে দিয়ে ছায়া ওর ওই কদাকার মুখে মিষ্টি হেসে বললো, "হ্যাঁ, ফোনটা আমাকে দিন আর আপনি একটু বাইরে যান।"

'তারমানে, ও কি জানতো যে নন্দনা ওকে ফোন করবে! তা না হলে এতটা স্বাভাবিকভাবে কথাগুলো ও বললো কি করে আমাকে?' এইসব ভাবতে ভাবতে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। আশপাশে তাকিয়ে দেখলাম ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে সৈকত। একটা ঘরে ইউসুফ আর হার্জিন্দার দরজা বন্ধ করে ঘুমোচ্ছে, ভেতর থেকে ওদের নাক ডাকার আওয়াজ আসছিলো। আর একটা ঘরে দেখলাম আমার ভায়রাভাই বাপ্পা আর সাগরকে নিয়ে শুয়ে রয়েছে। বাপ্পা আর সাগর দু'জনে ঘুমিয়ে পড়েছে। তবে শান্তিরঞ্জন ঘুমিয়েছে কিনা বুঝতে পারলাম না। ওদের ঘরের দরজাটা খোলাই রয়েছে।

"দাদাবাবু, আমাকে এখন একটু বেরোতে হবে। চা করে এই ফ্লাস্কে ঢেলে রেখেছি আর এই হট কেসের মধ্যে চিকেন পাকোড়া রয়েছে। একটু পরে কেউ যদি ঘুম থেকে উঠে চা খেতে চায়, আপনি দয়া করে একটু দিয়ে দেবেন আর নিজেও খেয়ে নেবেন। আমার কথা কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবেন, আমার মরদের হঠাৎ ভেদবমি আরম্ভ হয়েছে। তাই বাড়িতে গেছি আমি, সন্ধ্যের মধ্যেই চলে আসবো। বৌদিমনির আমাকে ফোন করার কথাটা খবদ্দার বলবেন না যেন কাউকে!" আমার উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলে হনহন করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে গেলো ছায়া। একটু আগে নন্দনার ফোনটা আসা পর থেকে এখানে যে সমস্ত জিনিস ঘটে চলেছে, তার কিছুই বুঝতে না পেরে খোলা দরজার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 8 users Like Bumba_1's post
Like Reply
ঘুম থেকে উঠে মুখের সামনে চা আর চিকেন পকোড়া পেয়ে কেউ, বিশেষ করে ইউসুফ আর পাঞ্জাবীটা ছায়ার অনুপস্থিতি নিয়ে মাথা ঘামালো না। ঘাসের কোলে রেখে যাওয়া পদচিহ্ন আর মোমের আলোয় কম্পন তুলে অপরাহ্ন শেষে এক সময় এলো সেই কাঙ্ক্ষিত সন্ধ্যেবেলা। কাঁধে একটা বড়সড়ো কিটব্যাগ নিয়ে বাড়িতে ঢুকলো ছায়া, ঘড়িতে তখন সাড়ে ছ'টা। 


"কিরে? এতক্ষণ কোথায় ছিলিস? আর তোর কাঁধে ওই ব্যাগে করে কি নিয়ে এলি রে?" বাড়িতে পা রাখতে না রাখতেই ছায়ার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলো ইউসুফ। "এখানে অতিথি হয়ে এসেছো, অতিথি হয়ে থাকো। বেশি মাতব্বরি করার চেষ্টা করো না। এই বাড়িটা ডাক্তারবাবুর। আমাকে প্রশ্ন করার একমাত্র অধিকার ওনার আছে, আর কারোর নয়। এই ব্যাগে কি আছে জানতে চাও? এই ব্যাগে তোমাদের জন্য মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে এসেছি। দেখবে?" রুদ্রমূর্তি ধারণ করে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে কথাগুলো বললো ছায়া। হঠাৎ করেই পাল্টে যাওয়া ছায়ার এই রূপ দেখে কিছুটা থতমতো খেয়ে গিয়ে ওখান থেকে সরে পড়লো ইউসুফ। এই পরিস্থিতির সাক্ষী হয়ে আমিও যে খুব কম অবাক হয়েছি তা নয়, তবে বিধর্মীটার পলায়ন দেখে মনে মনে বেশ খুশি হলাম।

সাতটার কিছু আগে ওরা এলো। প্রথমেই ঢুকতে দেখলাম প্রমোদ আর রবার্টকে। সকালে শুধুমাত্র শর্টস আর খালি গায়ে দেখা দুই মানিকজোড়কে স্যুটেড-বুটেড হয়ে আসতে দেখলাম। এতক্ষণ ওরা কোথায় ছিলো, কি করছিলো, পোশাক পাল্টালোই বা কি করে? কিছুই বোধগম্য হলো না আমার। তারপর প্রবেশ করলো রজত আর নন্দনা। ওরা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে কোথা থেকে যেন রজনীগন্ধার সুবাস নাকে এলো আমার। ক্রিম কালারের ব্লেজার আর ওই একই রঙের প্যান্ট পরিহিত একদম অন্যরকম দেখতে লাগা রজতের হাতের মুঠোয় আমার বউয়ের হাতটা ধরা ছিলো। ওকে এক ঝটকায় নিজের আরও কাছে টেনে নিয়ে রজত বললো, "লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান, আই হ্যাভ অ্যান অ্যানাউন্সমেন্ট .." ঠিক সেই মুহূর্তে ওর হাতে একটা হাল্কা চাপড় মেরে আমার স্ত্রী নিজের চোখদুটো বড় বড় করে মৃদুস্বরে বললো, "উঁহু তুমি নয়, এই শুভ খবরটা আমি দেবো সবাইকে।"

নন্দনার দিকে দৃষ্টি গেলো আমার। ওর রূপে মুগ্ধ আমি আজ। সিঁদুর, চন্দন আর অলঙ্কারে সেজেছে নন্দনা। জমকালো লাল বেনারসি, তার সঙ্গে লাল রঙের স্লিভলেস ব্লাউজ। ঠিক যেন নববধূর সাজ। ওকে দেখে আমার কেন জানি না মনে হলো, নতুন রূপে নতুন জীবনে পদার্পণ করতে চলেছে ও। আমার কথা না হয় বাদই দিলাম, আমি ছাড়া ঘরের বাকি পুরুষেরা এমনকি ঝুমাও চোখ ফেরাতে পারছিলো না নন্দনার দিক থেকে। কিন্তু একটা ব্যাপারে ভীষণ অবাক হলাম আমি; যে রজতকে আজ সকালেও ওকে 'আপনি' বলতে শুনেছি, তাকে এখন 'তুমি' করে বলছে আমার বউ?

"তোমাদের সবার সামনে আমার একটা ছোট্ট কথা বলার আছে। তবে কথাটা সংক্ষিপ্ত হলেও, এর মূল্য আমার জীবনে অপরিসীম। দেখো, আমাদের জীবন বড়ই অনিশ্চিত। উপর থেকে কখন কার ডাক এসে যাবে কেউ বলতে পারে না। আমি মনে করি যে ক'দিন বাঁচবো, সে ক'দিন জীবনটাকে উপভোগ করবো। তাই আমি একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি আমার ভবিষ্যৎ জীবনের ব্যাপারে। নিতে চলেছি বা এখানে তোমাদের পারমিশন নিতে এসেছি, এটা বললে ভুল বলা হবে। আসল কথা হলো আমরা, মানে আমি আর রজত দু'জনে মিলে একটা কাজ করে ফেলেছি। সেটা এখন এসে তোমাদের জানাচ্ছি। রূপনগরের জাগ্রত মা বগলামুখীর মন্দিরে আজ দুপুরে আমরা দু'জনে, মানে আমি আর রজত বিয়ে করেছি। বুঝতে পেরেছি এই কথাটা শুনে তোমরা ভীষণ অবাক হয়ে গেছো! কিন্তু আমার কথাগুলো একটু মন দিয়ে শোনো তাহলে বুঝতে পারবে। দেখো, বিয়ে বলতে এটা জাস্ট ঠাকুরের সামনে আমাকে সিঁদুর পড়িয়েছে রজত। অনুষ্ঠান করেও আমাদের বিয়ে হয়নি বা রেজিস্ট্রি ম্যারেজও হয়নি। তাছাড়া আমি তো এখন বিবাহিতা। আগের বিয়েটা না ভাঙলে নতুন করে তো আর বিয়ে করতে পারবো না! তবে অনেক ভেবে, নিজের মনের সঙ্গে অনেক দ্বন্দ্ব করে অবশেষে আমি ঠিক করেছি, এবার থেকে ওর সঙ্গেই থাকবো আমি। কিন্তু রজত বললো, এখনই সরকারি সিলমোহর দেয়া সম্ভব না হলেও ও আমাকে মন্দিরে বিয়ে করে নিজের বউ হিসেবে ঘরে নিয়ে যেতে চায়। তাই আমিও রাজি হয়ে গেলাম। এখান থেকে বাড়ি ফিরে আমি হাওড়া শিবপুর চলে যাবো ওর সঙ্গে। ওখানে এখন কাউকে জানাতে বারণ করেছি। এমনকি ওর ছেলে ঋষিও এ ব্যাপারে কিছু জানে না, ওখানে গিয়ে একেবারে সবাইকে চমক দেবো আমরা। এবার তোমরা একে একে তোমাদের বক্তব্য বলতে পারো।" রজতের একটা হাত শক্ত করে নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে ধরে খুব স্বাভাবিকভাবে অথচ দৃঢ়ভঙ্গিতে কথাগুলো বললো নন্দনা।

"আমার বলার আছে, আমার বলার আছে, আমার অনেক কিছু বলার আছে। কি পাগলামি করছিস কি তুই বোন? তোর স্বামী এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, ওই ঘরে তোর ফুটফুটে সন্তান শুয়ে রয়েছে। এই কথাগুলো বলতে তোর মুখে একবারও বাঁধছে না? ছিঃ বোন ছিঃ , এতটা অধঃপতন হয়েছে তোর? তুই জানিস ওই রজত নামের লোকটা কত বড় শয়তান? আরে, বিবাহিতা নারীদের নিজের কথার জালে, প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ে করার টোপ দিয়ে প্রেগন্যান্ট করে দেওয়াটা ওর একটা খেলা কিংবা ওর একটা নেশা বলতে পারিস। ও আমার সঙ্গেও ঠিক এই কাজগুলোই করেছে। তোকে তো আমি সব খুলে বলেছি, তাহলে তুই কেন বুঝতে পারছিস না বোন? কেন আমার মতোই আবার ভুল করলি তুই? তুই কি জানিস ও আসলে অশ্লীল ছবির প্রযোজক। সেই সব ছবিতে ও মুখোশ পড়ে অভিনয় করে। আর ওই যে ইউসুফ বলে ওই '. ছেলেটা দাঁড়িয়ে রয়েছে, ওই ছেলেটাও মুখোশ পড়ে অভিনয় করে সেই ছবিগুলোতে। মুখোশ বলতে চোখটা খালি ঢেকে নেয়। তোমরা সবাই শুনলে অবাক হয়ে যাবে, এইরকম বেশ কয়েকটা ছবিতে ড্রাগের নেশা করিয়ে আমার চোখটা ঢেকে দিয়ে আমাকেও জোর করে অভিনয় করিয়ে নিয়েছে। তোকে দিয়েও ওই শয়তানটা তাই করাবে। জীবনটা নরক বানিয়ে দেবে তোর। ফিরে আয় বোন, ফিরে আয়। যা হয়ে গেছে, সবকিছু ভুলে আবার নতুন করে শুরু কর .." উত্তেজিত হয়ে কথাগুলো বললো ক্রন্দনরতা ঝুমা।

"বোন? কে বোন? কিসের বোন? তুই তো এই রূপনগরে আসার পর থেকেই আমাকে নিজের শত্রু বানিয়ে ফেলেছিলিস। আজ যাকে বা যাদেরকে শয়তান বলছিস, এখানে আসার পর থেকে তো দেখছি তাদের পদলেহন করে চলছিস তুই। প্রতি পদক্ষেপে আমার সর্বনাশ চাইছিস। মনে মনে সংকল্প করেই এসেছিলিস, যাতে এদের হাতে আমি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যাই। এমনকি এতটাই বিষ ছিলো আমার জন্য তোর মনের মধ্যে, যে আমাকে নির্দয়ভাবে মারতেও তোর হাত কাঁপেনি। সবকিছুই তুই করেছিলিস এই লোকগুলোকে খুশি করার জন্য। তুই কি মনে করিস, আমি এতটাই বোকা? এগুলোর কিছুই বুঝিনি? আসলে তোকে রিজেক্ট করে এরা আমাকে বেছে নিয়েছে, তাই তোর রাগ হচ্ছে। আর রজতের ব্যবসার কথা সবকিছু আমি জানি। এই ব্যবসাতে যখন লাভ অনেক, তখন করুক না! তাতে আমার আপত্তির তো কিছু নেই! আর নীল ছবিতে অভিনয় করার প্রসঙ্গে এইটুকু বলতে পারি, ওইসব তোকেই মানায়। সেই জন্যেই ওরা তোকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছে ওই ধরনের ছবিতে। আমি রজতের বউ হতে চলেছি, এটা ভালো করে নিজের মাথায় ঢুকিয়ে নে।" তাচ্ছিল্য সহকারে নিজের দিদির কথার উত্তর দিলো নন্দনা।

এ আমি কি শুনছি, এ আমি আমার স্ত্রীর কি রূপ দেখছি? না না, ওকে এখন থেকে আমার স্ত্রী বা আমার বউ বলে সম্বোধন করাটা যুক্তিযুক্ত হবে কিনা, সেটাও তো বুঝতে পারছি না! আমার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। মাথার ভেতরটা কিরকম যেন দপদপ করছে। আমি কি আস্তে আস্তে পাগল হয়ে যাচ্ছি? আমি বরাবরই ভীষণ শান্ত-শিষ্ট এবং ধৈর্যশীল ব্যক্তি। চট করে উত্তেজিত হই না। কিন্তু আজকে এখানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে নিজের প্রতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করে দিয়েছি আমি, সেটা বেশ বুঝতে পারছিলাম। চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় জল গড়িয়ে পড়ছিলো আমার, কিন্তু কিছুতেই আটকাতে পারছিলাম না। এটা কি সত্যি নাকি এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন? নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখলাম, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমি। এতক্ষণ ধরে যা দেখলাম, যা শুনলাম সবকিছুই সত্যি। অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলো আমার। প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে উঠে বললাম, "চরিত্রহীনা .. এই যদি তোমার মনে ছিলো, তাহলে ওদের সঙ্গে সঙ্গমের সময় বাধা দিচ্ছিলে কেন বারবার? নাকি পুরোটাই তোমার অভিনয় ছিলো? আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। তোমার একটা আট বছরের সন্তান রয়েছে, ভুলে গেলে তার কথা? তোমার এই হঠকারী সিদ্ধান্তের ফলে ওর ভবিষ্যৎ যে ধ্বংস হয়ে যাবে, সেটা বুঝতে পারছো তুমি? নাকি তোমার মাথায় স্বামী-সন্তান সবকিছু ভুলে এখন শুধু কামের আগুন জ্বলছে? একটা কথা আমি বলে দিচ্ছি এখানে সবার সামনে। তোমার বলা কথাগুলো যদি সত্যি হয়, তাহলে বাপ্পার কি হবে জানিনা, তবে এখান থেকে আমি আর ফিরবো না। এখানে এখনই সবার সামনে আত্মহত্যা করবো আমি।" 

কথাগুলো বলে নন্দনের দিকে এগোতে যাবো, সেই সময় পাশ থেকে এসে হার্জিন্দার আমার কলারটা চেপে ধরে বললো, "দূর হাটো বেহেনচোদ .. নেহি তো মার কে অপাহিজ বানা দেঙ্গে .." 

দেখলাম, ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের দিকে এগিয়ে এসে আমার কলারটা ওর হাত থেকে জোর করে ছাড়িয়ে দিয়ে হার্জিন্দারের দুই গালে সপাটে দুটো চড় মেরে নন্দনা বললো, "তোর সাহস হয় কি করে জানোয়ার, আমার সামনে এঁর গায়ে হাত তোলার বা এনাকে কটু কথা বলার? এতদিন যা করার করেছিস, এবার থেকে আর ওইসব নয়। এখানে এরপর যা হবে, বা যা কিছু বলা হবে, সবকিছু করবো এবং বলবো আমি, অন্য কেউ নয়।"

"তুমহারি ইতনি হিম্মত, তুমি আমার গায়ে হাত তোলো? আব দেখো তুমহারা কেয়া হাল কারতা হুঁ ম্যায়!" এই বলে পাঞ্জাবীটা নন্দনার দিকে এগোতে গেলে ওদের দুজনের মাঝখানে দীর্ঘকায় এবং সুঠাম চেহারার রজত এসে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দিয়ে বললো, "ভুলে যেওনা বানচোদ, ও এখন থেকে আমার স্ত্রী। ওর সম্পর্কে একটাও বাজে কথা বললে বা ওকে অপমান করার চেষ্টা করলে, এখানে কুকুরের মতো গুলি করে মারবো তোমাকে।" রজতের মুখে কথাগুলো শুনে চমকে উঠে দু'পা পিছিয়ে দাঁড়ালো হার্জিন্দার।

"দেখো, এখানে তো যা বলার বলে দিয়েছো, অনেক নাটক হয়েছে। এবার বেডরুমে চলো, আমাদের যে আর তর সইছে না। তুমি বলেছিলে আমাদের তিনজনের সাথে একসঙ্গে .. হেহেহে .." পাশ থেকে ফোড়ন কেটে কথাগুলো বললো প্রমোদ।

"মোটেও আমি সেই কথা বলিনি। নিজেদের বলা কথাগুলো আমার মুখে বসাবেন না দয়া করে। আমি শুধু আমার বর্তমান স্বামী, মানে রজত ছাড়া আপনাদের দু'জনকে আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার অনুমতি দিয়েছি, ব্যাস এইটুকুই। একটু সবুর করুন না, এখন তো সবে সন্ধ্যে এরপর পুরো রাতটাই পড়ে রয়েছে। কিন্তু ওঁর সঙ্গে একটু আগে ওই জানোয়ারটা যা ব্যবহার করলো, তাতে আমার রাগ এখনো কমেনি। আমি যে কথাগুলো বললাম বা যে সিদ্ধান্তের কথা জানালাম, সেটা শুনে তো উনার রাগ হতেই পারে। তাই বলে বাইরের লোকের এত বড় সাহস হয় কি করে, আমাদের মাঝখানে ঢোকার? আমি বলছি না এর জন্য ওকে কোনো শাস্তি দিতে। তবে সকালের কথা মনে আছে তো? আমার ব্রা আর প্যান্টিটা জোর খুলে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় আমাকে সমুদ্রসৈকতে হাঁটতে এবং দৌড়াতে বাধ্য করেছিলো ওই হার্জিন্দার। তারপর আমার অন্তর্বাসগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলো নৌকার পেছনে ওই জঞ্জালের মধ্যে। ভাগ্যিস মিস্টার রবার্টের ছেড়ে রাখা ওই হাউসকোটটা পড়েছিলো সী-বিচের উপর! না হলে আমার কি অবস্থা হতো বুঝতে পারছেন? আমি চাই এখন হার্জিন্দার গিয়ে ওখান থেকে আমার অন্তর্বাসগুলো তুলে নিয়ে আসুক। তবেই আমি বেডরুমে ঢুকবো আপনাদের সঙ্গে। এটাই আমার আব্দার।" সোফার হাতলে নিজের কোমরটা ঠেকিয়ে কথাগুলো বললো নন্দনা।

"গাঁড় মারিয়েছে! এ আবার কি ধরনের শর্ত? তুমি বলো ওর মুখে দুটো জুতো মারছি। কিন্তু বাইরেটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। এই সময় ওখানে গিয়ে বিনা আলোতে ‌ ও কি আর খুঁজে পাবে তোমার ব্রা আর প্যান্টি? তাছাড়া ওগুলো তো নোংরার মধ্যে ফেলা হয়েছিলো, নোংরায় মাখামাখি হয়ে যাওয়া ওই জিনিসগুলো ফিরে পেয়ে তুমি কি করবে বলো? ওর থেকে হাজারগুন দামী ইনারের সেট কিনে দেবো তোমাকে ডার্লিং!" কিছুটা অবাক হয়েই কথাগুলো বললো রবার্ট। 

"ঠিক আছে, ও যখন বলছে তখন যাক না হার্জিন্দার। ও তো আর আকাশের চাঁদ চায়নি, কিংবা ওদেরকে ওকে মেরেও ফেলতে বলেনি। সকালে আমার বউয়ের সঙ্গে পাঞ্জাবীটা যে দুষ্টুমি করেছিলো, সেটার জন্য ওকে একটু শিক্ষা দিতে চাইছে আমার সেক্সি বউটা। এর বেশি তো আর কিছুই নয়!" নিজের স্বভাবসিদ্ধ গম্ভীর গলায় জানালো রজত।

"আমার বউ" এই শব্দটা শোনার পরে চমকে উঠলাম আমি। এত তাড়াতাড়ি 'বউ বদল' হয় বুঝি! ক্ষমতা আর অর্থবল থাকলে বোধহয় হয়। বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠলো আমার। ঠিক সেইসময় ছায়া বলে উঠলো, "হুমদো পাঞ্জাবীটার সঙ্গে ওই মুসলিম ছেলেটাকেও পাঠাও বৌদিমণি। ওরও একটু শিক্ষার দরকার আছে। স্বামীর শরীর খারাপ বলে ওকে দেখতে বিকেলবেলা একটু বাড়ি গিয়েছিলাম। তারপর এখানে ফিরতে না ফিরতেই, আমাকে যা নয় তাই বললো ছোকরা!"

প্রমোদ, রজত এবং রবার্ট এরা তিনজনেই যখন নন্দনার 'হ্যাঁ' তে 'হ্যাঁ' মিলিয়েছে, তখন হার্জিন্দার আর ইউসুফের কোনো আপত্তিই ধোপে টিকলো না। কিছুক্ষণ গাঁইগুঁই করে বেরিয়ে গেলো ওরা দু'জন।

★★★★

"এবার তো চলো ডার্লিং, বেডরুমে! তোমার সব শর্ত তো মেনে নিলাম আমরা।" প্রমোদের করা এই উক্তিতে খিলখিল করে হেসে উঠে নন্দনা বললো, "শর্ত বলছো কেন ডাক্তার? আমি ভালোবেসে তোমাদের কাছে কিছু চাইলে, তোমরা দেবে না? আমিও তো ভালোবেসে আমার সবকিছু উজাড় করে দিচ্ছি তোমাদেরকে, ঠিক কিনা বলো? আমি এখন বেডরুমে শুধু তোমাদের দু'জনের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। সেখানে আমার বরকেও ঢোকার অনুমতি দেবো না আমি। আমার বেচারা বরটা এখানে সোফার উপর একা একা বসে থাকবে, তাই ওকে একটু আদর করে দিই যাওয়ার আগে .." এই বলে চকাস করে রজতের গালে একটা চুমু খেলো নন্দনা।

নন্দনার এই কার্যকলাপ দেখে আমি যতটা অবাক হচ্ছিলাম এবং লজ্জায়, দুঃখে, ঘৃণায়, ক্ষোভে মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছিলাম, ততটাই উল্লাসে মেতে উঠছিলো ঘরে উপস্থিত বাকি তিন দূর্বৃত্ত। নন্দনার কোমরটা জড়িয়ে ধরে ওকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে প্রমোদ বললো, "একদম ঠিক কথা বলেছো বৌমা, সরি ডার্লিং। তুমি যেমন ভালবেসে সব কিছু দিচ্ছ আমাদেরকে। তেমনি আমাদেরও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে, ভালোবেসে তোমার সমস্ত দাবি মেনে নেওয়া।" 

"আমি এমন কিছু অনৈতিক দাবি করিনি বা ভবিষ্যতেও করবো না, যা তোমাদের মেনে নিতে কষ্ট হয়। কারণ আমিও তোমাদের ভালবাসতে শুরু করেছি। আচ্ছা ভালো কথা, দুপুরবেলা কথা প্রসঙ্গে বলছিলে না, শুধুমাত্র আমাকে পাওয়ার জন্য হায়দ্রাবাদে যেভাবে তোমরা চিরন্তনকে ফাঁসিয়েছিলে। সেই কথাগুলো ওকে একটু শুনিয়ে দাও। এমনিতেই জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছে বেচারা। তোমাদের কথাগুলো শুনলে আরও আগুন জ্বলবে ওর মনের ভিতর। আর আমি তো সেটাই চাই।" মুচকি হেসে প্রমোদের গলা জড়িয়ে ধরে এইরূপ উক্তি করলো নন্দনা।

নন্দনার কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে কথাগুলো প্রমোদ বললো, সেগুলো আক্ষরিক অর্থে নিজের কানে ওর মুখ থেকে এর আগে না শুনলেও; রূপনগরে আমার পরিবারকে নিয়ে আসার প্রস্তাব যেদিন ও আমাদের বাড়িতে দিয়ে এসেছিলো, সেদিনই আমি বুঝতে পেরে গিয়েছিলাম, এই সবকিছুই ও করছে আমার স্ত্রীকে পাওয়ার জন্য। গোয়ানিজটার বলা একটা কথাও নতুন মনে হলো না আমার। তাই এগুলো শুনে প্রচন্ড ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ার মতো অবস্থাও হলো না আমার। কারণ, আমার হৃদয়টা তো একটু আগেই টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে গিয়েছে নন্দনার এই পাল্টে যাওয়ার রূপ দেখে। কিন্তু প্রমোদ কথাগুলো বলার মাঝে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, নন্দনা ছায়াকে ইশারা করে কিছু একটা বললো। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম ছায়া মাথা নাড়িয়ে চোখের পাতা ফেলে ওর ইশারার প্রতুত্তর দিলো।

"বাহ্ দারুন বললে ডাক্তার। তোমার কথাগুলো শোনার পর, ওর মনের যা অবস্থা হয়েছে সেটা ভেবেই খুব আনন্দ লাগছে আমার। আচ্ছা সেদিন সন্ধ্যেবেলা আমাদের বাড়িতে যে কাগজটা সই করাতে নিয়ে এসেছিলে ওকে দিয়ে, সেটা এখন কোথায় গো? ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছো নাকি?" প্রমোদের কথাগুলো শেষ হওয়ার পর নন্দনার এই উক্তিতে প্রথমে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো প্রমোদ। তারপর উচ্চস্বরে হেসে বলে উঠলো, "পাগল নাকি? ওই কাগজ কেউ নষ্ট করে, নাকি ছিঁড়ে ফেলে? দেখো এখন সবকিছুই সবার সামনে পরিষ্কার হয়ে যাওয়া ভালো। তাছাড়া তুমি যখন আমাদের দলে এসেই গেছো, তখন আর লুকোছাপা করে লাভ কি? তোমার স্বামী, থুড়ি তোমার প্রাক্তন স্বামীকে আমাদের বিজনেস পার্টনার বানানোর যে কথা বলেছিলাম, সেগুলো সব ঢপের চপ .. হাহাহাহা। ওর বউকে যখন আমরা পেয়ে গেছি তখন আর ওকে শুধু শুধু আমাদের কাঁধে বয়ে বেড়িয়ে নিয়ে কি লাভ হবে? এখান থেকে ফিরেই কাগজটা পুলিশের হাতে দেবো। ব্যাস তারপরে কেল্লাফতে। তোমার স্বামীর সরি সরি, প্রাক্তন স্বামীর শ্রীঘরে যাওয়া আর কেউ আটকাতে পারবে না। শালা সব দোষ করলাম আমরা, মানে আমি আর রবার্ট, আর শাস্তি পাবে ওই গান্ডু চিরন্তন .. হাহাহাহা। ব্যাপারটা ভীষণ মজার না?"

"মজার মানে! তোমার কথাগুলো শুনে আমি ভেতরে ভেতরে যে কি পরিমান তৃপ্তি অনুভব করছি, তোমাদের কাউকে বলে বোঝাতে পারবো না। যাইহোক অনেক বাজে কথা হয়েছে, আমারও আর তর সইছে না, চলো না গো! তোমরা দু'জন আমাকে নিয়ে চলো এবার বেডরুমে।" প্রমোদের গালে ছোট্ট একটা টোকা মেরে ন্যাকামি করে কথাগুলো বলে ছায়ার দিকে তাকিয়ে নন্দনা বললো, "তোকে দেওয়া কাজগুলো ঠিকঠাক করছিস তো?"

"ওকে আবার তুমি কি কাজ দিয়েছো বৌমা, মেরা মতলব ডার্লিং?" অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো প্রমোদ। 

"ও মা, সে কি কথা! এটাও বুঝতে পারলে না? বিয়ে না হয় আমি রজতকে করেছি; কিন্তু ফুলশয্যা তো আমি আজ তোমাদের তিনজনের সঙ্গেই করবো! আমাদের বাঙালিদের মধ্যে একটা নিয়ম আছে, জানো? ফুলশয্যার রাতে বরের জন্য নববধূ একগ্লাস দুধ নিয়ে ঘরে ঢোকে। কিন্তু এখানে তো একটা গ্লাসে হবে না, দুটো গ্লাস লাগবে। সেই দুই গ্লাস দুধের ব্যবস্থা করার কথা বলেছিলাম আমি ছায়াকে।" আদুরে গলায় কথাগুলো বললো নন্দনা।

নন্দনার কথা শেষ হওয়া মাত্রই ওকে নিজের কোলে তুলে নিয়ে বেডরুমের দিকে যেতে যেতে রবার্ট বললো, "ও আচ্ছা, এই ব্যাপার। ছায়া, তাড়াতাড়ি দুটো গ্লাসে দুধ ভরে নিয়ে আয় আমাদের রুমে। আজ রজতের নববিবাহিতা বউয়ের হাত থেকে দুধ খাবো আমরা। তারপর ওর দুটো দুধের ট্যাঙ্কি খালি করবো .. হেহেহে।"

রবার্ট আর প্রমোদ নন্দনাকে নিয়ে বেডরুমে ঢুকে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখলাম ছায়া ওদের ঘরে ঢুকে দুটো দুধের গ্লাস দিয়ে এলো। ছায়া বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে ভেতর থেকে দুম করে দরজাটা বন্ধ করে দিলো ওরা।

★★★★

ওইদিকে দরজা বন্ধ হলো, আর এইদিকে যেন আমার বুকে দুমদুম করে কেউ প্রহার শুরু করে দিলো। মাটির মধ্যে ধপ করে বসে পরে দু'হাত দিয়ে নিজের মুখটা চেপে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলাম আমি। শান্তিরঞ্জন, সৈকত আর ঝুমা এই তিনজন যেন স্ট্যাচু হওয়ার প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছিলো। সোফার ঠিক পেছনে জড়ভরতের মতো চুপচাপ দাঁড়িয়েছিলো তিনজন।

আমার কাঁধে সেইমুহূর্তে একটা হাতের স্পর্শ পেলাম। মাথা তুলে তাকিয়ে দেখলাম, আমার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিতে সেখানে উপস্থিত হয়েছে রজত। "কি করবে বলো, সবই ভবিতব্য। আসলে কুকুরের পেটে যেমন ঘি সহ্য হয় না, ঠিক তেমনই নন্দনাকে বিয়ে করার পর থেকে তুমি তোমাদের বৈবাহিক সম্পর্কটা হজমই করতে পারোনি। ওকে ঠিকঠাক স্বামীর আদর দিতে পারোনি। প্রকৃত পুরুষের ভালোবাসা আর আদর যে কি জিনিস, সেটা আমাদের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর ও জানতে পেরেছে। তাইতো আমাদেরকে ও বেছে নিয়েছে, তোমাকে রিজেক্ট করে। দেখো এখন বেশি দুঃখ পেয়ে লাভ নেই, কথায় বলে আপনি বাঁচলে বাপের নাম। এবার এইসব বউ হারানোর সেন্টিমেন্ট মাথা থেকে সরিয়ে নিজের কথাটা একটু ভাবো। নন্দনাকে উল্টেপাল্টে খাওয়ার পর প্রমোদ আর রবার্ট যখন ওই ঘর থেকে বেরোবে, তখন ওদের মুড ভালোই থাকবে। সেই সময় তুমি গিয়ে ওদের দু'জনের পা জড়িয়ে ধরে বলবে যাতে তোমাকে পুলিশে না দেয় ওরা। আমার বিশ্বাস, ওরা এখন মুখে যাই বলুক না কেন, কল্পতরু হয়ে তোমার এই মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবে। তবে হ্যাঁ, পুলিশের হাত থেকে বাঁচার পর নিজের শহরে আর থাকা চলবে না তোমার। বাচ্চাকে নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাও। বাপ্পাকে ওর মা নন্দনার চোখের সামনে থেকে সরাতে পারলে, ওকে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবো আমরা। বুঝতে পারছো তো আমার কথাগুলো? নাকি শুধু গাধার মতো শুনে যাচ্ছ? তোমার ছেলে বাপ্পাকে নিয়ে এখান থেকে কেটে পড়বে। ওই যে একটা খ্যাপাচোদা দাঁড়িয়ে আছে সোফার পেছনে; হ্যাঁ, আমি ওই শান্তির ছেলে শান্তিরঞ্জনের কথাই বলছি। ওকে তো শাড়ির দোকান করে দিয়েছি আমি, ওর সঙ্গে বিজনেসে লেগে যাও। তোমার যা বদনাম হয়েছে, তাতে তুমি জুটমিলে আর চাকরি পাবে না কোনোদিন। বুঝলে তো আমার কথাগুলো? কাল ভোরবেলা বাপ্পাকে নিয়ে এখান থেকে সোজা নিজের কোয়ার্টারে গিয়ে, ওখান থেকে যেখানে খুশি চলে যেও। তোমার যাতে হাজতবাস না হয়, সেই চেষ্টা আমি করবো।" রজতের কথাগুলো শেষ হওয়ার পর, ওর মুখের দিকে অশ্রুসিক্ত চোখে করুনভাবে তাকিয়ে রইলাম আমি।

ঠিক সেই মুহূর্তে, বেডরুমের দরজা খুলে বেরোলো নন্দনা। ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর পোশাক পরিচ্ছদ সবকিছুই ঠিক হয়েছে। মাথার চুলগুলো সব অবিন্যস্ত আর চোখদুটো টকটকে লাল। চোখের দৃষ্টিতে যেন আগুন ঝরছে নন্দনার। এরকম অদ্ভুত দৃষ্টি ওর চোখে আমি আগে কখনো দেখিনি। ক্রমশ যেন অচেনা হয়ে উঠছিলো আমার কাছে ও।

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 9 users Like Bumba_1's post
Like Reply
"কি ব্যাপার সোনা? এখনো তো পনেরো মিনিটও হয়নি! এরই মধ্যে ছাড়া পেয়ে গেলে তুমি? নাকি তোমার এই নতুন বরটার জন্য মন কেমন করছিলো তোমার! তাই বেরিয়ে এলে ঘর থেকে?" কথাগুলো বলে নন্দনার দিকে এগিয়ে গেলো রজত।

"তোমার বলা দ্বিতীয় কথাটা একদম ঠিক রজত। আজ তোমার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে আমার। কিন্তু তোমার আগে আমি যদি অন্য কারোর শয্যাসঙ্গিনী হই, তাহলে তোমাকে ঠকানো হবে। তাছাড়া ওদের একটা কি গুরুত্বপূর্ণ ফোন এসে গেলো, তাই ওরা আমার কাছ থেকে একটু সময় চেয়ে নিলো। আমি বললাম, থাক .. আজ রাতে আমি শুধু আমার স্বামীকেই সব কিছু দেবো, তোমরা যা পাওয়ার পরে পাবে। বলো, ঠিক করিনি?" রজতের ব্লেজারের একটা বোতাম নিয়ে খেলতে খেলতে কথাগুলো বললো নন্দনা।

"একদম ঠিক করেছো সোনা, একদম ঠিক করেছো। তুমি আমার জন্য এতটা ভাবো? এতো আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি না। তাহলে আর দেরি কিসের? চলো পাশের রুমটাতে, আমরা আমাদের ফুলশয্যা শুরু করে দিই। তবে আমি কিন্তু গ্লাসে করে দুধ খাবো না, আমি অন্য জায়গা দিয়ে দুধ খাবো।" নন্দনার গালে নিজের গালটা ঘষতে ঘষতে অসভ্যের মতো অঙ্গভঙ্গি করে উক্তি করলো রজত।

"আমি জানি তো তুমি কি জিনিস, তুমি এত সহজে সবকিছু মেনে নাও নাকি? না মানে আমি বলতে চাইছি, তুমি আরও অনেক বেশি রোমান্টিক তো! তাই তোমার জন্য অন্য একটা বিশেষ ব্যবস্থা করেছি আমি। আচ্ছা, আমার মুখ থেকে যদি তোমাকে কিছু খাওয়াই, তাহলে তোমার আপত্তি নেই তো? মানে আমার এঁটো খেতে তোমার কোনো আপত্তি আছে?" রজতের গালে একটা চুম্বন এঁকে দিয়ে ন্যাকামি করে কথাগুলো বললো নন্দনা।

"আপত্তি কি বলছো সোনা! এ তো আমার কাছে সৌভাগ্য, যে আমি তোমার মুখ থেকে কোনো কিছু খেতে পারবো। আমি যে আর কন্ট্রোল করতে পারছিনা নিজেকে, কি খাওয়াবে আমাকে? চলো না প্লিজ পাশের ঘরটাতে।" কিছুটা অসহিষ্ণু হয়েই মন্তব্য করলো রজত।

"আরে যাবো যাবো, তুমি এত তাড়া দিচ্ছ কেন বলো তো? তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে, তোমার হাতে খুব বেশি সময় আর নেই। একটু আগে ডাক্তার যেমন ওই কথাগুলো বলে আমার স্বামীর বুকের ভেতরটা জ্বলিয়ে দিলো, তুমি একটু জ্বালাবে না ওকে?" কথাগুলো রজতের উদ্দেশ্যে বলে রান্নাঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছায়ার দিকে তাকিয়ে নন্দনা বললো, "কই দে ওটা .."

নন্দনার কথা শেষ হওয়া মাত্রই দেখলাম ছায়া একগুচ্ছ কালো আঙুর নিয়ে এসে নন্দনার হাতে দিলো। ওখান থেকে একটা আঙুর ছিঁড়ে নিজের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে, তারপর সেটা দুই পাটি দাঁতের মাঝখানে চেপে ধরে রজতের মুখের সামনে নিয়ে এলো নন্দনা। "ওয়াও, হাও রোমান্টিক ইউ আর। তোমাকে আমি ভুল ভেবেছিলাম সোনা। তোমাকে যত দেখছি, ততই অবাক হচ্ছি।" এই বলে নন্দনার মুখের একদম কাছে নিজের মুখটা নিয়ে এলো রজত। 

লক্ষ্য করলাম, সঙ্গে সঙ্গে নিজের দাঁতের পাটি দুটো ফাঁক করে দিয়ে জিভের উপর আঙুরটাকে নিয়ে, নিজের জিভটা রজতের মুখের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে ওই কালো আঙুরটা রজতের মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে তৎক্ষণাৎ জিভটা ওর মুখের ভেতর থেকে বের করে আনলো নন্দনা। "আমার মুখের লালা দিয়ে এই মিষ্টি আঙুরটাকে আরও মিষ্টি করে দিয়েছি, তাই না? এবার কামড়ে কামড়ে খাও তো সোনা ওই কালো আঙুরটা যেভাবে আমার দুধের বোঁটাদুটো কামড়াও।" নন্দনার এই ভয়ঙ্কর অশ্লীল উক্তিতে ওর আজ্ঞা পালন করে সঙ্গে সঙ্গে আঙুরটা চেবাতে শুরু করে দিলো রজত।

"আচ্ছা ওরা দু'জন তোমার ব্রা আর প্যান্টিটা সমুদ্রের ধার থেকে আনতে গেছে প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট হতে চললো। এখনো ওদের পাত্তা নেই কেনো বলো তো? জানো, একটু আগে ওদের ফোন করেছিলাম। দু'জনের মোবাইলই সুইচড অফ বলছে। এটা কি করে সম্ভব হতে পারে? তবে ওই দুটো মালকে বিশ্বাস নেই, হয়তো রাস্তায় কোনো ভালো রেন্ডি দেখতে পেয়ে ফোন বন্ধ করে চোদনবাজিতে মন দিয়েছে। হারামি দুটো ফিরুক, ওদেরকে আচ্ছা করে ঝাড় দেবো আজকে। আরেকটা ব্যাপারেও আমার ভীষণ অবাক লাগছে। ডাক্তার আর রবার্ট এতক্ষণ কি কথা বলছে ফোনে? তুমি বেরোনোর পর তো দরজাটা একটু ফাঁক করাই রয়েছে দেখছি। তাহলে ফোনে কথা বললে তো বাইরে আওয়াজ আসা উচিৎ , ওরা কি বাথরুমের মধ্যে ঢুকে কথা বলছে নাকি? পুরো বিষয়টাই আমার কিরকম যেন গোলমেলে মনে হচ্ছে। আমি নিজের চোখে একবার দেখে আসি, তা না হলে মনে শান্তি পাচ্ছিনা।" এই বলে এক পা এগোতে গিয়েই দুম করে মাটির উপর পড়ে গেলো রজত। 

★★★★

ওকে দেখে আমার মনে হলো, ওর হয়তো মাথাটা ঘুরে গিয়েছে। পড়ার সময় রজতের মাথাটা সোফার হাতলে ঠুকে গিয়েছিলো। দেখলাম কপালের পাশটা ফেটে গিয়ে ওখান থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। "আমার মাথার ভেতরটা এরকম ঝিমঝিম করছে কেনো? ওফফফ, চেষ্টা করছি কিন্তু কিছুতেই উঠতে পারছিনা। এ কি, রক্ত? সোনা দেখেছো, আমার মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে। হিন্দি সিনেমায় যেরকম দেখি ভালোবাসার মানুষের রক্ত বেরোলে নিজের শাড়ির আঁচল ছিড়ে নায়িকারা সেখানে পট্টি বেঁধে দেয়। তুমি সেরকম কিছু করবে না সোনা? আমার কেন জানি না মনে হচ্ছে আঙুরটা খাওয়ার পর থেকেই আমার শরীরের ভেতর এইরকম হচ্ছে। সব কিছু বুঝতে পারছি, দেখতে পাচ্ছি, কথা বলতে পারছি, কিন্তু হাত-পায়ের জোর ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। আচ্ছা, তুমিও তো আঙুরটা খেয়েছিলে; তোমার সেরকম কিছু মনে হচ্ছে না?" সোফার হাতল ধরে ওঠার চেষ্টা জারি রেখে কপালের ফেটে যাওয়ার স্থানে হাত বুলোতে বুলোতে নন্দনার উদ্দেশ্যে ব্যাকুলভাবে কথাগুলো বললো রজত।

"না গো, আমি মোটেও আঙুরটা খাইনি, মানে আমার দাঁতে কাটিনি। শুধু দাঁতের পাটি দিয়ে চেপে ধরেছিলাম ওটাকে। একবার যদি ভুল করেও দাঁত দিয়ে কামড়ে দিতাম ওটাকে, তাহলে তোমার মতোই অবস্থা হতো আমার। তাই দেখলে না, তোমার মুখে আঙুরটা দিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জিভটা বের করে নিলাম। তার কারণ তুমি যদি সেই সময় আঙুরে একটা কামড় দিতে, আর সেখান থেকে যদি রস বেরোতো, তাহলে আমার দফারফা হয়ে যেত এতক্ষণে। তুমি অনেক শক্তিশালী বলে এখনো টিকে রয়েছো। আমি তো আর তোমার মতো অত স্ট্রং নই, ওই আঙুরের রস পেটে গেলে এতক্ষণে আমার ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে যেতো।" স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় রজতের সামনে এসে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বললো নন্দনা।

"মানে, এসব কি বলছো তুমি? কি ছিলো আঙুরের মধ্যে?" উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো রজত।

- "কিউরারি .."

- "ম..মানে ..ক..কি বলছো তুমি?"

"বাবা, তোমার সব বিষয়ে এত জ্ঞান! এত খবর রাখো তুমি! আর এইটুকু বুঝতে পারলে না? তোমাকে দেওয়া আঙুরটার মধ্যে কিউরারি বিষ ইনজেক্ট করা হয়েছিলো। তবে শুধু ওই আঙুরটার মধ্যে নয়, ছায়া আমাকে যে আঙুরের গোছাটা এনে দিয়েছিলো সবগুলোর মধ্যেই বিষ ছিলো, মানে আছে। আমি তো জানতাম তুমি সহজ মানুষ নও, তাই আমার হাত থেকে ভালো মানুষের মতো দুধ খেতে চাইবে না তুমি। সেজন্যই এই পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। হ্যাঁ তোমার মাথায় আমি আমার শাড়ি ছিঁড়ে পট্টি বেঁধে দিতেই পারতাম, কিন্তু দেবো না। ওটা দিলেও যা, না দিলেও তাই। কারণ রক্ত বন্ধ হওয়া বা না হওয়ার সঙ্গে তোমার মৃত্যুর কোনো যোগ থাকবে না তো! আর একটুখানি সময় যেতে দাও, তোমার রক্তের সঙ্গে বিষটা পুরোপুরি মিশে গেলেই আসল কষ্টটা টের পাবে তুমি। এখন কি রকম ফিল করছো তুমি? মানে, যন্ত্রণা কি আগের থেকে বেড়েছে, নাকি একই আছে?" মাটিতে বসে ছটফট করতে থাকা রজতের ঠিক সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে খুব স্বাভাবিকভাবে, অথচ দৃঢ়কন্ঠে কথাগুলো বললো নন্দনা।

"কি নিষ্ঠুর তুমি! কত স্বাভাবিকভাবে এই সাংঘাতিক কথাগুলো বলছো! ইউসুফ আর হার্জিন্দার এখনো ফিরছে না কেনো, কি হলো ওদের? রবার্ট? প্রমোদ? তোমরা কোথায়? এই মেয়েটা মেরে ফেলছে আমায়, আমাকে বাঁচাও তোমরা। আহ্ , ও মাগো .. ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে আমার, ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, হাত-পা গুলো কিরকম যেন শিথিল হয়ে আসছে। মাথাটা ক্রমশ ভারী লাগছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার। দম বন্ধ হয়ে আসছে গো .. শ্বাসকষ্ট হচ্ছে আমার। একটু, জল দেবে আমাকে প্লিজ তোমরা। দয়া করো আমায়, একটু জল দাও।" চোখের সামনে দেখতে পেলাম, এই কথাগুলো বলতে বলতে বসা অবস্থা থেকে মাটিতে শুয়ে পড়ে কাটা ছাগলের মতো ছটফট করতে লাগলো রজত। চোখগুলো ক্রমশ বিস্ফোরিত হতে হতে কপালের উপর উঠে যাচ্ছে ওর। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোতে আরম্ভ করে দিলো।

"আমি নিষ্ঠুর? আর তোমরা? তোমরা কি? তোমাদের মতো চরিত্রহীন, লম্পট, নারীমাংস লোভী, নরকের কীটদের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। ভবিষ্যতে আমাদের মতো শয়ে শয়ে হাজার হাজার নন্দনা যাতে নট আউট থেকে যায় চিরকাল, সেজন্য তোমাদেরকে তো আউট করতেই হবে! তোমার বন্ধুরা কেউ আসবে না গো, তোমাকে বাঁচাতে। ইউসুফ আর হার্জিন্দার এতক্ষণে সমুদ্রের জলের স্রোতে ভাসতে ভাসতে কোথায় পৌঁছে গিয়েছে তার খবর কেউ জানে না। যদি কোনোদিন ওদের বডি পাওয়াও যায়, সেটা বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের লোকেরা বুঝে নেবে। এবার এই কথাটা আমি কেনো বললাম, এত বিশ্লেষণ তোমাকে এখন করতে পারবো না। কারণ তোমার হাতে বেশি সময়ও নেই, সব শোনার। নরকে গিয়ে ওদের কাছ থেকে জেনে নিও। আর রইলো তোমার বাকি দুই বন্ধু রবার্ট আর ওই ডাক্তার প্রমোদ। ওদের অবস্থা তোমার মতোই হয়েছে। মানে তুমি একটু পরে যেভাবে মারা যাবে, ওরা একটু আগে সেভাবেই মারা গেছে। শুধু তফাৎটা হলো ওদের শরীরে বিষটা দুধের মধ্যে দিয়ে ঢুকেছে, আর তোমারটা আঙুরের মধ্য দিয়ে। তবে একটা কথা এখন থেকে বলে দিচ্ছি, পরে কিন্তু আমাকে দোষ দিতে পারবে না। তোমাদের সৎকার-টৎকার করতে পারবো না বাপু। ওই দুটো যেরকম জলে ভেসে গেছে, তোমাদের এই তিনটে বডিকেও জলে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। তোমাদের মৃতদেহগুলোও যদি কোনোদিন খুঁজে পাওয়া যায়, মাছেরা খুবলে খুবলে খেয়ে তোমাদের শরীরের যা অবস্থা করবে, তাতে মৃত্যুর কারণ অজানাই থেকে যাবে। কপাল ফেটে গিয়ে রক্ত বেরিয়ে আমার কাজটা আরো সহজ করে দিয়েছো তুমি। পুরো কঙ্কাল বানিয়ে ফেলবে গো তোমাদের তিনজনের শরীরটাকে মানুষখেকো মাছগুলো।" উচ্চকণ্ঠে হেসে কথাগুলো বলে মাটি থেকে উঠে দাঁড়ালো নন্দনা।

দেখলাম ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে দুই হাত পা ছড়িয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে ও। মুখ দিয়ে অবিরত গ্যাঁজলা বেরিয়ে চলেছে, নিষ্কলক চোখদুটো সিলিংয়ের দিকে চেয়ে রয়েছে। সম্ভবত মারা গেছে রজত। 

★★★★

"আজ সন্ধ্যা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এখানে যা যা ঘটে চলেছে, এবং এই ঘটনাগুলোর সাক্ষী হিসেবে থেকে তোমরা যে ভীষণভাবে বিপর্যস্ত এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েছো সেটা আমি বেশ বুঝতে পারছি। তোমরা আমাকে কিছু প্রশ্ন করার আগে, তাই আমি কয়েকটা কথা বলছি, মন দিয়ে শুনে নাও। প্রথমে আমাকে বলো এখানে ওই পাঁচজনের সঙ্গে যেটা ঘটেছে সেটাতে কি তোমরা খুশি? কোনোরকম জ্ঞান দেওয়ার বা ভনিতা করার চেষ্টা করবে না। আমাদের হাতে সময় খুব কম, তাই 'হ্যাঁ' বা 'না' তে উত্তর দেবে।

সৈকত থেকে শুরু করে শান্তিরঞ্জন, ঝুমা থেকে শুরু করে আমি .. আমরা চারজনেই সমস্বরে "হ্যাঁ" বলে উঠলাম। 

"এবার তোর বরকে ফোন করে ডাক .." ছায়ার দিকে তাকিয়ে বললো নন্দনা। 

ছায়া নিজের ফোন থেকে কাউকে একটা ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম। একটা ছয় ফুটের কাছাকাছি লম্বা, বিশাল পেশীবহুল চেহারার অধিকারী, কুচকুচে কালো অল্পবয়সী এক যুবক এসে বাড়িতে ঢুকলো। ওকে দেখেই নন্দনা বলে উঠলো, "মুন্না তুমি একটা কাজ করো, তোমার বউয়ের কাছে যে ব্যাগটা আছে, ওই ব্যাগে দেখো গ্লোভস রাখা রয়েছে। ওগুলো দুই হাতে পড়ে নিয়ে তোমার সঙ্গে যেরকম কথা হয়েছিলো, ঠিক সেরকম ভাবেই তিনটে বডির ঠিকানা লাগিয়ে দিও। আর হ্যাঁ শোনো, দুটো কাঁচের গ্লাস আছে দেখবে, ওই দুটো কিন্তু বডির সঙ্গে ফেলে দিও। আর একটা আঙুরের গোছা রয়েছে, সেটাকেও ওদের সঙ্গে দিয়ে দিও। ছায়া তোমাকে সব দেখিয়ে দেবে। গাড়ি এনেছো তো সঙ্গে করে?"

"এই ছেলেটার সঙ্গে কাল রাতে সমুদ্র সৈকতে আমার দেখা হয়েছিলো। এ ছায়ার বর? কিন্তু দেখে তো মনে হচ্ছে দু'জনের বয়সের প্রচুর ডিফারেন্স। মানে, ছায়া এর থেকে বয়সে অনেক বড়।" আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে কথাগুলো বললো শান্তিরঞ্জন।

"আজ্ঞে হ্যাঁ দিদি, গাড়ি বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। আপনারা তাড়াতাড়ি গাড়িতে গিয়ে বসুন, আমি আসছি। আপনাদের স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে আমি আবার ফিরে আসবো এখানে। আমি আর ছায়া আছি তো, এদিকের পুরোটা সামলে নেবো। এমনিতে জায়গাটা জনশূন্য, তবে এখন কিছু করলে চলবে না, ধরা পড়ে যেতে পারি। কাজটা মাঝরাতে করতে হবে। রাত দশটায় ট্রেন, ওটা মিস করলে কিন্তু বিপদে পড়ে যাবেন।" খুব স্বাভাবিকভাবে কথাগুলো বলে ছায়ার দিকে ইশারা করে ওকে নিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো ছেলেটা।

এখানে কি হচ্ছে? এই ছেলেটা আবার কোত্থেকে এলো? এদের সঙ্গে নন্দনার যোগাযোগটাই বা হলো কি করে? কিছুই মাথায় ঢুকলো না আমার। ধীরপায়ে নন্দনার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। ওকে স্পর্শ করতেও ভয় করছিলো আমার, এই রূপ তো আমার স্ত্রীর আমি আগে কখনো দেখিনি! মৃদুস্বরে ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, "আমার না অনেক প্রশ্ন রয়েছে, সেগুলো কি এখন .."

আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই আমাকে থামিয়ে দিয়ে নন্দনা বললো, "সাড়ে আটটা বাজে। এখান থেকে রূপনগর স্টেশনে গাড়িতে যেতে এক ঘন্টা লাগে শুনলাম। দশ থেকে পনেরো মিনিটের মধ্যে বেরোতে না পারলে আমাদের কপালে কিন্তু দুঃখ আছে।" তারপর হনহন করে ঘরের ভেতর ঢুকে গিয়ে সেখান থেকে ঘুমন্ত বাপ্পা আর সাগর দু'জনকেই কোলে করে নিয়ে বেরিয়ে এলো নন্দনা। "আমি তো এই দু'জনকে আমার সঙ্গে নিয়ে যাবো। এবার আমার সঙ্গে যে আসতে চাও তাকে পাঁচ মিনিট সময় দিচ্ছি। নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে এসে আমার সঙ্গে বাইরে গাড়িতে এসে বসো আর যে আসতে চাও না, এখানে থেকে মরো। খেয়াল থাকে যেন এখানে কেউ নিজের কোনো জিনিস ফেলে যাবে না। আর কেউ যদি মনে করে থাকো এখান থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিজের মুখ খুলবে, তাহলে কিন্তু সে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবে। কারণ ঘটনাগুলো ঘটার সময় তোমরা সকলে এখানে উপস্থিত ছিলে, তাই ধরে নেওয়া হবে তোমাদের সকলের সম্মতিতেই ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছে।" প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে কথাগুলো বলে বাপ্পা আর সাগরকে নিয়ে বাড়ি থেকে গটগট করে বেরিয়ে গেলো নন্দনা। 

 জিনিসপত্র বলতে সবার সবকিছুই নিজেদের সঙ্গে আনা ব্যাগের মধ্যে ছিলো, একমাত্র টুথব্রাশ আর টুথপেস্ট ছাড়া। ওগুলো বাথরুম থেকে বের করে নিয়ে যে যার ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলাম। তারপর বিনা বাক্যব্যয়ে, বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে বাইরে অপেক্ষারত গাড়িতে গিয়ে বসলাম। আমরা বসার সঙ্গে সঙ্গে ড্রাইভারের সিটে এসে বসলো ছায়ার বর মুন্না। গাড়িতে যাওয়ার সময় দেখলাম ওই এলাকার প্রায় এক কিলোমিটারছর মধ্যে লোকজন তো দুরস্থান, কোনো ঘর বাড়িও নেই।  

অতঃপর পৌনে দশটা নাগাদ রূপনগর স্টেশনে এসে পৌঁছলাম আমরা। আমাদের স্টেশনে পৌঁছে দিয়েই গাড়ি নিয়ে ফিরে গেলো মুন্না। আসার সময় লক্ষ্য না করলেও, গাড়িটা যখন আমাদের দিকে পিছন করে ঘুরে বেরিয়ে গেল তখন দেখলাম গাড়ির পেছনে লেখা রয়েছে 'রূপনগর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প'।

দশটা বেজে পাঁচ মিনিট নাগাদ আমাদের ট্রেন এলো। গাড়িতে আসতে আসতেই বাপ্পার ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিলো বাপ্পার, তার সঙ্গে সাগরেরও। "আমরা এত রাতে কেনো ফিরছি? আমরা কোথায় যাচ্ছি? আমার ভীষণ খিদে পেয়েছে, পেচ্ছাপ করবো, জল খাবো .." ঘুম ভেঙেই এইসব বলতে শুরু করে দিয়েছিলো বাপ্পা। সেই সন্ধ্যেবেলা চায়ের সঙ্গে কয়েকটা চিকেন পকোড়া খাবার পর এখনো পর্যন্ত পেটে কিছুই পড়েনি আমার। যথেষ্ট খিদে পেয়েছিলো, তাই বাপ্পার কষ্টটাও বুঝতে পারলাম। কিন্তু জীবনের থেকে তো খিদের দাম বেশি নয় .. একবেলা না খেলে মানুষ মরেও যায় না। ট্রেন যখন লিলুয়া স্টেশনে থামলো, তখন রাত বারোটা। বাপ্পা আর সাগর তখন ঘুমিয়ে কাদা। আজ আমার ভায়রাভাইয়ের বাড়িতেই থেকে যেতে হবে আমাদের। মানে নন্দনাই সেটা চেয়েছে। এখন তো কর্ত্রীর ইচ্ছেতেই কর্ম! আগামীকাল সকালে আমাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা। 

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 8 users Like Bumba_1's post
Like Reply
পরের দিন সকালে আমার ভায়রাভাইয়ের ডাকে যখন ঘুম ভাঙলো, তখন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ন'টা বাজে। ঘুম ভাঙতে অনেকটা দেরি হয়ে গেলো, অবশ্য দেরি হওয়ারই কথা। আগেরদিন রাত একটার পরে শুয়েছি, তারপর ওইরকম বিভীষিকাময় রূপনগর সফরের কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুম এসেছে জানিনা। শান্তিরঞ্জনের সঙ্গে ওর ঘরেই ঘুমিয়েছিলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে ওদের বৈঠকখানার ঘরে ঢুকে দেখলাম ঝুমা, সৈকত আর বাপ্পা বসে রয়েছে। কিন্তু নন্দনাকে কোথাও দেখতে পেলাম না।

আমি এদিক ওদিক তাকাতেই ঝুমা বললো, "বউকে খোঁজা হচ্ছে, তাই তো? ও স্নানে গেছে, এক্ষুনি বেরোবে, আর তোমাকেও তাড়াতাড়ি স্নান করে নিতে বলেছে। ভাতে ভাত চাপিয়ে দিয়েছি, এখান থেকে খেয়ে দেয়ে তারপর বাড়ি যাবে। ও আবার বলছিলো তোমাদের অফিসের নাকি কোন বড়কর্তার সঙ্গে দেখা করবে আজকেই।

আমরা ওখান থেকে তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পড়লাম বাপ্পাকে নিয়ে। লিলুয়া থেকে ট্রেনে প্রায় আধঘন্টা লাগে আমাদের গন্তব্যের স্টেশনে পৌঁছতে। এমনিতেই পাবলিক প্লেস, সব রকমের কথা বলা যায় না। তার উপর কাল থেকে নন্দনার যার রূপ আমি দেখে আসছি, বলা ভালো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ওর পার্সোনালিটির যেভাবে পরিবর্তন ঘটেছে, তাতে করে ওকে কোনো কথা জিজ্ঞেস করার সাহসই পাচ্ছিলাম না আমি। তবুও মনের সাহস যুগিয়ে মৃদুস্বরে নন্দনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, "এখন কোথায় যাচ্ছি আমরা? বাড়িতে না অন্য কোথাও?"

"এত বছর ধরে চাকরি করছো, অথচ এখনও একটা জমি কিনতে পেরেছো, নাকি একটাও ইঁট গাঁথতে পেরেছো? তাহলে আবার অন্য কোথাও যাওয়ার প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে?" নন্দনার এই চাবুকের মতো উত্তর শুনে চুপ করে গেলাম।

আমাদের গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছে, প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে একটা অটো ধরে ক্যাম্পাসের সামনে নামলাম। মনে হলো যেন এক যুগ পর ফিরছি এখানে। দেখলাম, নন্দনা ক্যাম্পাসের গেট দিয়ে না ঢুকে আমাদের ক্যাম্পাসের উল্টোদিকেই ফ্যাক্টরি গেট, সেখানে ঢুকে গেলো। আমি অনুসরণ করলাম ওকে। আমাকে অবাক করে দিয়ে ও আমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মিস্টার মনিশ ভার্গবের চেম্বারে ঢুকলো। পিছন পিছন চোরের মতো আমিও ঢুকলাম। এই লোকটাই তো দু'দিন আগে আমাকে টার্মিনেশন লেটার ধরিয়ে দিয়েছিলো।

★★★★

"নমস্কার স্যার, আমি নন্দনা। আপনার সঙ্গে আজ সকালে কথা হয়েছিলো আমার। আপনাকে তো সবকিছুই ফোনে বলেছি। এই ফোনটাতে ডক্টর প্রমোদ গঞ্জালভেসের সম্পূর্ণ স্বীকারোক্তি রয়েছে। যেখানে ও স্বীকার করেছে, কিভাবে এবং কোন কারণের জন্য ও আর রবার্ট মিলে আমার স্বামীকে ফাঁসিয়েছিলো। আর এই নিন সেই পেপারটা, যেটা আপনি চেয়েছিলেন। যেখানে আমার স্বামীকে দিয়ে ও সই করিয়ে নিয়েছিলো। স্যার অনেক আশা নিয়ে আপনার কাছে আমি এসেছি। আপনি যদি তাড়িয়ে দেন, তাহলে মাথা নিচু করে চলে যাবো। কিন্তু আপনি যদি দয়া করে আপনার পায়ে স্থান দেন আমার স্বামীকে, তাহলে আমরা দুবেলা দুমুঠো খেয়েপড়ে অন্তত বাঁচতে পারি।" ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে আমার সই করা ওই কাগজটা বের করে ভার্গবের হাতে দিয়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে কথাগুলো বললো নন্দনা।

"তুমি আমার থেকে বয়সে অনেক ছোট, তাই তোমাকে 'তুমি' করেই বলছি। এই অডিওটা তোমার হাতে এলো কি করে? ওরা এখন কোথায়?" অডিওটা সম্পূর্ণ শোনার পর আর কাগজটা দেখার পর গম্ভীর গলায় জিজ্ঞাসা করলো ভার্গব।

"আমি কিছু জানি না স্যার। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারবো না। আমি শুধু এইটুকু জানি আমার স্বামীকে বাঁচাতে হবে, আমার স্বামীকে তার হারিয়ে যাওয়া সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে। তাতে আমার যদি জেল হয়, হোক। আপনার গলা শুনে আমার আমার কেনো জানি না মনে হয়েছিলো আপনাকে ভরসা করা যায়। তাই আপনার কাছে এসেছি স্যার।" হাউ হাউ করে কেঁদে উঠে কথাগুলো বলে আমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের পা জড়িয়ে ধরলো নন্দনা।

"ওঠো ওঠো, এসব কি করছো তুমি অফিসের মধ্যে? কেউ দেখে নিলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। তোমার জায়গা আমার পায়ে নয় আমার বুকে। ইউ আর লাইক মাই ডটার। তুমি আমার মেয়ের মতো। তাই তুমি যদি কোনো ভুল করেও থাকো, বাবার মতো একজন মানুষ হিসেবে তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম এই ভেবে যে, কোনো কিছু ভালো করার জন্য খারাপ কাজ করাটা পাপ নয়, তাকে অন্তত একবার সুযোগ দেওয়া উচিৎ। যে সুযোগটা আমি তোমাকে দিলাম এখন। আর সতর্ক করলাম এই বলে যে, একবার তোমার ভুল ক্ষমা করেছি বলে বারবার করবো না। এটাই প্রথম আর এটাই যেন শেষ হয়। ব্যাস এর বেশি আমি আর কিছু জানতেও চাই না আর কিছু শুনতেও চাই না। স্কাউন্ড্রেল দুটো আর কোনোদিন এখানে ফিরে না এলে, আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না। আর তোমার স্বামীর মতো একজন করিৎকর্মা জুট ইন্সপেক্টরের জায়গা আমার পায়ে নয়, ওকে মাথায় করে রাখবে এই কোম্পানি। তবে হ্যাঁ, এটাও ওর কাছে শেষ সুযোগ। এরপর যদি আবার কোনো প্রলোভনে পা দিয়ে ভুল করে চিরন্তন, তাহলে সেটাই এই কোম্পানিতে ওর শেষ দিন হবে।"

আবারও অবাক হওয়ার পালা আমার। আজ ওকে দেখে এটা বুঝতে পারলাম দশ বছর কেনো, সারা জীবন ঘর করেও মানুষকে চেনা যায় না। গতকাল ভোররাতে দেখা স্বপ্নটার কথা মনে পড়লো আমার। নন্দনার কর্মের মাধ্যমেই তাহলে আমার পুনর্জন্ম ঘটলো! সতীর পূণ্যে পতির পূণ্য হলো। চোখের কোণাটা জলে ভিজে গেলো আমার।

★★★★

বিকেলে ঘুম ভাঙার পর দেখলাম নন্দনা আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিদ্রায় মগ্ন। আর আমার এপাশে শুয়ে অকাতরে ঘুমোচ্ছে বাপ্পা। ওর কোমল শান্ত স্নিগ্ধ ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবলাম এই মেয়েটাই গতকাল সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত, না না শুধু রাত পর্যন্ত কেনো, আজ সকাল পর্যন্ত কিসব কান্ড ঘটিয়েছে! ওর গালে একটা আলতো করে চুমু খেতেই চোখ মেলে তাকালো নন্দনা। "ছাড়ো আমাকে, উঠতে হবে। অনেক কাজ বাকি। ইশ্ বাপ্পাটা এখনো ঘুমোচ্ছে, ওকে তুলতে হবে, চা করতে হবে .." আড়মোড়া ভেঙে আমার বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার প্রয়াস করে ঘুমজড়ানো গলায় কথাগুলো বললো নন্দনা।

"না ছাড়বো না, আজ বিকেলের চা আমি বানাবো। বিয়ের আগে তো সবকিছু আমি একাই করতাম, বিয়ের পর ঘোড়া দেখে খোঁড়া হয়েছি। রাতের জন্য তোমাকে আর কষ্ট করে রুটি, তরকারি বানাতে হবে না। আজ চাইনিজ খাবো আমরা।" কথাগুলো বলে ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। তারপর ওর গালে নিজের নাকটা ঘষতে ঘষতে বললাম, "এখন ধীরে ধীরে অনেক কিছুই আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। শুধু কয়েকটা প্রশ্ন খচখচ করছে মনে। সেগুলো ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত, তোমাকে কিছুতেই যেতে দেবো না। হার্জিন্দার আর ইউসুফ কিভাবে মারা গেলো সেটা আমি আন্দাজ করতে পারছি। শান্তিদা'র কাছ থেকে সকালে শুনেছিলাম বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের জন্য সন্ধ্যের পর থেকে নাকি ওই এলাকাটায় সমুদ্রের জলে কারেন্ট দেওয়া থাকে। যেটা এক কিলোমিটারের মধ্যে প্রচন্ড স্ট্রং থাকে, তার বাইরে ধীরে ধীরে স্থিমিত হয়ে যায়। ওই সময় ওই এলাকায় যদি কেউ জলে নামে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সে স্পটডেড হয়ে যাবে। ওদের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে নিশ্চয়ই। তোমার ব্রা আর প্যান্টি খুঁজতে যাওয়ার সময় বোধহয় কোনো কারণে জলের সঙ্গে ওদের শরীরের কোনো অংশ টাচ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তুমি কিউরারি বিষ পেলে কোথা থেকে? মুন্নার ব্যাপারেও শান্তিদা'র কাছ থেকে আগেই আমি শুনেছি। তবে ওর সঙ্গে তোমার যোগাযোগ হলো কি করে? এই সবকিছু আমাকে খুলে বলো।"

"ওই পাঞ্জাবীটা আর ইউসুফের মৃত্যুর ব্যাপারে তোমার আন্দাজ একেবারে ঠিক। তবে আমি পরে মুন্নার থেকে যেটুকু শুনেছি সেটাই বলছি। আমার অন্তর্বাসগুলো তো জঞ্জালের মধ্যে জলের আওতার অনেকটাই বাইরে পড়েছিলো; তাই ওগুলো খুঁজতে ওদের দুজনকে প্ল্যান করে পাঠানো হলেও, ওরা নিজের ইচ্ছেতে জলে মোটেও পা দেয়নি। অন্ধকারে নৌকার আড়ালে মিশকালো মুন্না সাক্ষাৎ যমদূতের  মতো অপেক্ষা করছিলো ওদের জন্য। ওরা ওখানে গিয়ে পৌঁছাতেই পিছন থেকে বাঁশ দিয়ে ওদের মাথায় মারে মুন্না। অতর্কিত এই আক্রমণে ওরা প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে পড়ে কিছুটা সেন্সলেস অবস্থায় চলে যেতেই, ওদেরকে পাঁজাকোলা করে তুলে জলের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেয় মুন্না .. বাকিটা ইতিহাস। ছায়াকে তুমি বোধহয় চিনতে পারোনি। না পারারই কথা। আমাদের বিয়েতে এক ঝলক দেখেছিলে হয়তো ওকে, অতদিন আগেকার কথা, মনে না পড়াই স্বাভাবিক। এমনকি দিদিভাইও ওকে চিনতে পারেনি। আমাদের গ্রামের মেয়ে ছায়া। ওরা যাতে বেদেনী .. সাপ নিয়ে ওদের কারবার। আমার বিয়ের পর শুনেছিলাম ছায়াকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়েটা আমাদের গ্রাম থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছে। এতবছর পর ওকে রূপনগরে যেদিন প্রথম দেখলাম, নিজের উচ্ছ্বাস ধরে রাখা আমার পক্ষে মুশকিল হয়ে পড়েছিলো। তবুও নিজেকে সংযত করে, সবার অলক্ষে ওকে নিজের বিপদের কথা জানিয়েছিলাম। ওই আমাকে কিউরারি বিষ এনে দেয় আর ওর বরের সাহায্যে আমাদের পুরো প্ল্যানটা সাকসেসফুল করতে সাহায্য করে।" আমার কাছে আরও সরে এসে, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো নন্দনা। ওর ঘন নিঃশ্বাস আমার মুখের উপর পড়ছিলো।

"তোমার কথাগুলো যত শুনছি আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। যেন মনে হচ্ছে কোনো রূপকথার গল্প পড়ছি। আচ্ছা, ওদের কোন বিপদ হবে না তো? আর আমাদের? আমাদের যদি কোনো বিপদ হয়?" কিছুটা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম নন্দনাকে।

"বিপদ বলতে তুমি পুলিশের কথা বলছো। তাই তো? হ্যাঁ, ওদের খুঁজে না পেয়ে তদন্ত শুরু হবে। ওই বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার পর আমাদের সকলের হাতের ছাপ পাবে। কিন্তু ওই ছাপগুলো যে আমাদের হাতের, সেটা পুলিশ জানবে কি করে? ওখানে আমাদের যাওয়ার কোনো ইনফরমেশন এবং প্রমাণ তো পুলিশের কাছে নেই। আমরা গাড়িতে গেছি আর আসার সময় ট্রেনের জেনারেল বগিতে ফিরেছি, রিজার্ভেশন করিনি। তাই আমাদের অস্তিত্বটাই তো অজানা থাকবে তদন্তকারী অফিসারদের কাছে। যে ড্রাইভার আমাদের নিয়ে গেছিলো এই কেলেঙ্কারিতে পড়ার ভয়ে নিজেকে বাঁচাতে সে আর কোনোদিন সামনে আসবে বলে মনে হয় না। রইলো বাকি ওদের পাঁচজনের মোবাইল ফোন। সেগুলোও জলে বিসর্জন করা হয়েছে ওদের মৃতদেহের সঙ্গে। কোনোদিন কঙ্কালের আকারে ওদের মৃতদেহগুলো পাওয়া গেলেও, সিন্ধুতে বিন্দু খোঁজার মতো ফোনগুলো কি আর কোনোদিন খুঁজে পাবে পুলিশেরা? নাকি সেগুলো আর আস্ত থাকবে ততদিন? ছায়ার ওই বাড়িতে কাজ করার কোনো লিখিত প্রমাণ নেই। কেউ দেখেওনি ওকে কোনোদিন। প্রমোদ ওখানে গেলে রান্না করার জন্য কাউকে না কাউকে ডেকে নেয়। এবার ছায়াকে ডেকেছিলো, তাই আমরা বিশেষ করে আমি বেঁচে গেলাম এই যাত্রায়। তবে হ্যাঁ, সব থেকে বেশি রিস্ক নিয়ে কাজ করেছে মুন্না। ও একজন সরকারি কর্মী। ও ধরা পড়লে আমরা আমরা সকলে ফেঁসে যেতাম। কিন্তু আজ সকালে যখন খবর পেলাম কাল মাঝরাতে সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে করে ফেলেছে স্বামী-স্ত্রীতে মিলে; তারপর আর আমাদের কোনো চিন্তার কারণ আছে বলে মনে হয় না। এবার উঠি .."

কথাগুলো বলে নন্দনা উঠতে গেলে ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম, "লাভ ইউ নন্দনা .. এই ভাবেই নট আউট থেকে ক্রিজে ব্যাটিং করে যাও আর আমার রক্ষাকবচ হয়ে থেকো চিরকাল। একটা কথা বলবো, রাগ করবে না তো? যদি কোনোদিন আমার সেই ভয়ঙ্কর তান্ত্রিক দাদা বিপুল আবার ফিরে আসে, তখন কি হবে?"

"তখন? তখন তোমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মনিশ ভার্গব, আমার বাবার মতো একজন মানুষ হিসেবে আমার দ্বিতীয় ভুলটাকেও ক্ষমা করে দেবেন এই ভেবে যে, কোনো কিছু ভালো করার জন্য খারাপ কাজ করাটা পাপ নয়। হিহিহিহি .." কথাগুলো বলে খিলখিল করে হেসে উঠে বাথরুমে ঢুকে গেলো আমার কাছে ক্রমশ রহস্যময়ী হয়ে ওঠা নন্দনা।

ও বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার পর, আমার মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে এলো, "শাবাশ বাঘিনী .."
[Image: Buffbird-Mealprep-Theend.gif]




|| পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে ||

এতদিন তোমরা আমার এই সিরিজের পাশে থেকেছো
হয়তো কেউ কেউ আমাকে ভালোবেসেছো
আবার হয়তো কেউ কেউ ঘৃণা করেছো
শুধু একটাই অনুরোধ .. আমাকে ভুলে যেওনা কখনো

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 10 users Like Bumba_1's post
Like Reply
Khub valo laglo
[+] 1 user Likes Maphesto's post
Like Reply
Some people think that writing on computers is easy. But I know how difficult it is to come up with ideas and turn them into meaningful and interesting content, please don't leave this forum bro! In my opinion, this one is one of the best novel you have written so far. what a magical ending  clps clps
[Image: Polish-20231010-103001576.jpg]
[+] 1 user Likes Chandan's post
Like Reply
শেষ পর্বটা কেমন লাগলো সেটা নিয়ে ছোটোখাটো একটা গল্পই লিখে ফেলতে পারতাম আমি, কিন্তু সেসব না করে এইটুকুই বলবো সাবাশ নন্দনা। নিজের শরীর বিলিয়ে দিলেও মনটাকে তাজা ও পবিত্র রেখেছে সে শেষ সময় পর্যন্ত। আমার ওর এতটা পরিবর্তন অবাক লেগেছিলো, সাথে এও মনে হয়েছিল সত্যি পাল্টেছে তো? নাকি এটা আসলে? যাইহোক বন্দনার আর নন্দনার এই মানসিক পরিবর্তন অংশটাও দুর্দান্ত। আসার দিন নন্দনা কমজোর ছিল আর বন্দনা ছিল শারীরিক ও মানসিক দুদিক থেকে শক্তিশালী, কিন্তু শেষ দিনে নিজের ক্ষমতা বলে নন্দনা তার দিদির দম্ভ মাটিতে মিশিয়ে তাকে তার বর্তমান রূপের সাক্ষী করিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিলো। এটা আমার সবথেকে ভালো লেগেছে। একটা পরিতৃপ্তি। শান্তিরঞ্জন হেরে যাওয়া পুরুষ নয়, সেটা তার ওই ছেলের ব্যাথা পাওয়ার কষ্টে বৌয়ের দিকে তাকানোতেই বোঝা গেছে। যাইহোক সে আর সৈকত আবার আগের মা ও স্ত্রীকে ফিরে পাবে।

বহু পুরুষাঙ্গের ক্রমাগত কাম ধাক্কা বন্দনার অন্তরটা বিষাক্ত করে দিতে পারলেও নন্দনা নট আউট রয়ে গেছে, ও চিরকাল তাই থাকবে। চিরন্তন হয়তো ওই পিশাচ গুলোর মতো কু বুদ্ধি রাখেনা, হয়তো ওতো শক্তিশালীও নয়, হয়তো নিষিদ্ধ ইচ্ছা তার মধ্যেও লুকিয়ে ছিল কিন্তু সবশেষে সে একজন ভালো মানুষ। আর সেই রূপটাকেই চিনেছে নন্দনা ও ভালোবেসেছে। তাই হাজার প্রলোভন পেয়েও তাকে হারায়নি সে।

শেষে এসে যে এটা থ্রিলারের রূপ নেবে সেটা আগেই আন্দাজ করেছিলাম কিন্তু কিভাবে কি ঘটে সেটা জানতে মরিয়া হয়ে ছিলাম। দারুন ভাবে শেষ হলো একটা কামুক উত্তেজক সৃষ্টি।

আজকের পর্বের শুরুর ভাগ ছিল চরম কামুক, মাঝের ভাগ ছিল উপলব্ধি আর শেষের ভাগ ছিল চরম ফলাফল। যে নারী জাত অন্ধকারের পথে হাঁটলে নিজের সন্তানকেও আবর্জনায় ফেলে দিতে পারে, সেই জাতীই যদি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নেয় সে আলোর পথে হাটবে সে রিপুর হাজার আকর্ষণে পা দিয়েও শেষ পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে সেই শিশুকে বুকে তুলে নিতে পারে। সেই শিশুও যে বড্ড পবিত্র, তাই সে ঈশ্বরের প্রতিরূপ। জয় হোক নন্দনার আর যার হাত দিয়ে তার পরিচয় জানলাম সেই বুম্বা বাবুকেও জয়।

ভালো থাকো, সুস্থ থাকো, নিজের খেয়াল রাখো এখন। ♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️


চ্যাটিং করে আলাপ করা ইউসুফ আজ সাফ
হার্জিন্দরের নোংরামিও পাইনি শেষে মাফ
রজত বাবুর লুচ্চামি আর বাকি যেসব খেলোয়াড়
মাঠে ভালোই ব্যাট হাকিয়ে শেষ মানতেই হলো হার
চিরন্তন আর শান্তি বাবুর হেরে যাওয়া দুটো মুখ
সবশেষে চাপ মুক্তি আর সুখ শুধুই সুখ
বন্দনার কামের ক্ষিদে নষ্ট করেছে সংসার
আজতার নিজের যৌবন হেরে হয়েছে ছাড়খার
সবশেষে নায়িকা এসে দারুন দেখালো খেলা
কাম আগুনে ঝলসে হৃদয়ে জাগে আলতো রোদের বেলা
এবার সবাই সাধু সাধু বলে করতে থাকো শাউট
নায়িকা নন্দনা খেলতে নেমে আজও যে নট আউট 
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
(14-10-2023, 03:35 PM)Maphesto Wrote: Khub valo laglo

ধন্যবাদ  thanks
Like Reply
(14-10-2023, 04:41 PM)Chandan Wrote: Some people think that writing on computers is easy. But I know how difficult it is to come up with ideas and turn them into meaningful and interesting content, please don't leave this forum bro! In my opinion, this one is one of the best novel you have written so far. what a magical ending  clps clps

Thank you very much for this excellent review, stay safe and stay blessed  Heart you
Like Reply
(14-10-2023, 04:58 PM)Baban Wrote:
শেষ পর্বটা কেমন লাগলো সেটা নিয়ে ছোটোখাটো একটা গল্পই লিখে ফেলতে পারতাম আমি, কিন্তু সেসব না করে এইটুকুই বলবো সাবাশ নন্দনা। নিজের শরীর বিলিয়ে দিলেও মনটাকে তাজা ও পবিত্র রেখেছে সে শেষ সময় পর্যন্ত। আমার ওর এতটা পরিবর্তন অবাক লেগেছিলো, সাথে এও মনে হয়েছিল সত্যি পাল্টেছে তো? নাকি এটা আসলে? যাইহোক বন্দনার আর নন্দনার এই মানসিক পরিবর্তন অংশটাও দুর্দান্ত। আসার দিন নন্দনা কমজোর ছিল আর বন্দনা ছিল শারীরিক ও মানসিক দুদিক থেকে শক্তিশালী, কিন্তু শেষ দিনে নিজের ক্ষমতা বলে নন্দনা তার দিদির দম্ভ মাটিতে মিশিয়ে তাকে তার বর্তমান রূপের সাক্ষী করিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিলো। এটা আমার সবথেকে ভালো লেগেছে। একটা পরিতৃপ্তি। শান্তিরঞ্জন হেরে যাওয়া পুরুষ নয়, সেটা তার ওই ছেলের ব্যাথা পাওয়ার কষ্টে বৌয়ের দিকে তাকানোতেই বোঝা গেছে। যাইহোক সে আর সৈকত আবার আগের মা ও স্ত্রীকে ফিরে পাবে।


বহু পুরুষাঙ্গের ক্রমাগত কাম ধাক্কা বন্দনার অন্তরটা বিষাক্ত করে দিতে পারলেও নন্দনা নট আউট রয়ে গেছে, ও চিরকাল তাই থাকবে। চিরন্তন হয়তো ওই পিশাচ গুলোর মতো কু বুদ্ধি রাখেনা, হয়তো ওতো শক্তিশালীও নয়, হয়তো নিষিদ্ধ ইচ্ছা তার মধ্যেও লুকিয়ে ছিল কিন্তু সবশেষে সে একজন ভালো মানুষ। আর সেই রূপটাকেই চিনেছে নন্দনা ও ভালোবেসেছে। তাই হাজার প্রলোভন পেয়েও তাকে হারায়নি সে।


শেষে এসে যে এটা থ্রিলারের রূপ নেবে সেটা আগেই আন্দাজ করেছিলাম কিন্তু কিভাবে কি ঘটে সেটা জানতে মরিয়া হয়ে ছিলাম। দারুন ভাবে শেষ হলো একটা কামুক উত্তেজক সৃষ্টি।


আজকের পর্বের শুরুর ভাগ ছিল চরম কামুক, মাঝের ভাগ ছিল উপলব্ধি আর শেষের ভাগ ছিল চরম ফলাফল। যে নারী জাত অন্ধকারের পথে হাঁটলে নিজের সন্তানকেও আবর্জনায় ফেলে দিতে পারে, সেই জাতীই যদি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নেয় সে আলোর পথে হাটবে সে রিপুর হাজার আকর্ষণে পা দিয়েও শেষ পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে সেই শিশুকে বুকে তুলে নিতে পারে। সেই শিশুও যে বড্ড পবিত্র, তাই সে ঈশ্বরের প্রতিরূপ। জয় হোক নন্দনার আর যার হাত দিয়ে তার পরিচয় জানলাম সেই বুম্বা বাবুকেও জয়।


ভালো থাকো, সুস্থ থাকো, নিজের খেয়াল রাখো এখন। ♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️


চ্যাটিং করে আলাপ করা ইউসুফ আজ সাফ
হার্জিন্দরের নোংরামিও পাইনি শেষে মাফ
রজত বাবুর লুচ্চামি আর বাকি যেসব খেলোয়াড়
মাঠে ভালোই ব্যাট হাকিয়ে শেষ মানতেই হলো হার
চিরন্তন আর শান্তি বাবুর হেরে যাওয়া দুটো মুখ
সবশেষে চাপ মুক্তি আর সুখ শুধুই সুখ
বন্দনার কামের ক্ষিদে নষ্ট করেছে সংসার
আজতার নিজের যৌবন হেরে হয়েছে ছাড়খার
সবশেষে নায়িকা এসে দারুন দেখালো খেলা
কাম আগুনে ঝলসে হৃদয়ে জাগে আলতো রোদের বেলা
এবার সবাই সাধু সাধু বলে করতে থাকো শাউট
নায়িকা নন্দনা খেলতে নেমে আজও যে নট আউট 

দেশমাতৃকার ললাট চিরে বারুদ মুখে দেশলাই হয়ে  জ্বলে উঠবে একদিন সমস্ত নারীরা। আবারও অর্চনা হবে নারীশক্তির .. একশো আট প্রদীপ জ্বেলে চিরকাল নট আউট থেকে যাবে নন্দনা।
খুব সুন্দর বিশ্লেষণ করলে বন্ধু আর তার সঙ্গে শেষের কবিতাটাও অসাধারণ  clps  তুমিও খুব খুব ভালো থেকো।  Heart
[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
(14-10-2023, 03:08 PM)Bumba_1 Wrote:
|| পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে ||

এতদিন তোমরা আমার এই সিরিজের পাশে থেকেছো
হয়তো কেউ কেউ আমাকে ভালোবেসেছো
আবার হয়তো কেউ কেউ ঘৃণা করেছো
শুধু একটাই অনুরোধ .. আমাকে ভুলে যেওনা কখনো

কেউ একজন বলেছিল, কখনও কাউকে ভালবাসলে তাকে বিয়ে করো না । ভালবাসা হল বেনারসী শাড়ির মত, ন্যাপথালিন দিয়ে যত্ন করে আলমারিতে তুলে রাখতে হয়, তাকে আটপৌরে ব্যবহার করলেই সব শেষ। আমরা মনে করি প্রেমের পরিণতি বিয়ে। চিরন্তন আর নন্দনার ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছিল, অর্থাৎ লাভ ম্যারেজ। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিয়েতে প্রেম শেষ হয়ে যায়। তাছাড়া প্রেমিক হিসেবে কেউ অসাধারণ হতে পারে, কিন্তু স্বামী হিসাবে অযোগ্য হওয়া বিচিত্র নয়।
জীবন মানেই সুখের স্মৃতি বয়ে বেড়ানো, বেঁচে থাকা মানেই দুঃখের সঙ্গে অজান্তেই সহবাস করা। অবিমিশ্র সুখ মানুষের ভাগ্যে কখনোই লেখা হয় না। সুখ বাঁচিয়ে রাখতে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তি অনুভব করে মানুষ। যে কোনো ছলছুতোয় সে দুঃখকে ডেকে নিয়ে আসে। সুখের চেয়ে দুঃখের সঙ্গে বাস করতে মানুষ বড় আরামবোধ করে। কারণ অতি সুখে হাহাকার থাকে না। সন্দেহ, জ্বালা অথবা নিজেকে বঞ্চিত ভাবার যন্ত্রণা পাওয়া যায় না। তবে এই সুখ, দুঃখ, সন্দেহ, জ্বালা এবং নিজেকে বঞ্চিত হতে দেখার কষ্ট, এই সবকিছুকে ছাপিয়ে যে নন্দনা আর চিরন্তন আমার কাছাকাছি এসেছে; এতে একজন পাঠক হিসেবে যে আমি কতটা খুশি হয়েছি, সে কথা বলে বোঝাতে পারব না। জয় হোক তোমার আর চিরকাল মানুষের মনে থেকে যাক তোমার এই অসাধারণ উপন্যাসটি। ভালো থেকো, সাবধানে থেকো।  Namaskar

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 2 users Like Somnaath's post
Like Reply
(14-10-2023, 04:58 PM)Baban Wrote:
চ্যাটিং করে আলাপ করা ইউসুফ আজ সাফ
হার্জিন্দরের নোংরামিও পাইনি শেষে মাফ
রজত বাবুর লুচ্চামি আর বাকি যেসব খেলোয়াড়
মাঠে ভালোই ব্যাট হাকিয়ে শেষ মানতেই হলো হার
চিরন্তন আর শান্তি বাবুর হেরে যাওয়া দুটো মুখ
সবশেষে চাপ মুক্তি আর সুখ শুধুই সুখ
বন্দনার কামের ক্ষিদে নষ্ট করেছে সংসার
আজতার নিজের যৌবন হেরে হয়েছে ছাড়খার
সবশেষে নায়িকা এসে দারুন দেখালো খেলা
কাম আগুনে ঝলসে হৃদয়ে জাগে আলতো রোদের বেলা
এবার সবাই সাধু সাধু বলে করতে থাকো শাউট
নায়িকা নন্দনা খেলতে নেমে আজও যে নট আউট 

সত্যি কথা হল এটাই যে, যারা উপন্যাসটা এখনো পর্যন্ত পড়েনি তারা কবিতার এই কয়েকটা লাইন পড়লে অনেকটাই ধারণা পেয়ে যাবে এই উপন্যাস সম্পর্কে। দুর্দান্ত লেখা, hats off  Namaskar

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
(14-10-2023, 01:26 PM)swank.hunk Wrote: Your stories are magical. Well thought out plots.Great writing skill and style. You are outstanding in this genre. Please don't even think of leaving this forum.

এই ছবি গুলো কিভাবে বানান একটু বলবেন?
Like Reply
(14-10-2023, 09:37 PM)Somnaath Wrote: সত্যি কথা হল এটাই যে, যারা উপন্যাসটা এখনো পর্যন্ত পড়েনি তারা কবিতার এই কয়েকটা লাইন পড়লে অনেকটাই ধারণা পেয়ে যাবে এই উপন্যাস সম্পর্কে। দুর্দান্ত লেখা, hats off  Namaskar

অনেক ধন্যবাদ ♥️ Namaskar

তবে লেখকের সৃষ্টি এই গল্পের শেষ পর্বের উদ্দেশ্যে আপনার শেষ কমেন্টটিও ভারী সুন্দর লাগলো।প্রেম ও বিবাহ নিয়ে খুব সুন্দর বিশ্লেষণ। আপনিও কিছু লিখতে পারেন তো। এতো সুন্দর কমেন্ট করে যে সে চাইলে নিজেও সৃষ্টি করতে পারে।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(14-10-2023, 10:01 PM)Baban Wrote: অনেক ধন্যবাদ ♥️ Namaskar

তবে লেখকের সৃষ্টি এই গল্পের শেষ পর্বের উদ্দেশ্যে আপনার শেষ কমেন্টটিও ভারী সুন্দর লাগলো।প্রেম ও বিবাহ নিয়ে খুব সুন্দর বিশ্লেষণ। আপনিও কিছু লিখতে পারেন তো। এতো সুন্দর কমেন্ট করে যে সে চাইলে নিজেও সৃষ্টি করতে পারে।

[Image: Happy-dance.gif]

একটা হাল্কা করে ছোট্ট কিছু লেখার প্ল্যান আছে

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 3 users Like Somnaath's post
Like Reply
(14-10-2023, 10:07 PM)Somnaath Wrote:
[Image: Happy-dance.gif]

একটা হাল্কা করে ছোট্ট কিছু লেখার প্ল্যান আছে

বাহ্ আনন্দ সংবাদ  clps

থাকবো মোরা অপেক্ষাতে সেই গপ্পোখানি পড়তে
প্রেমের হলে মন দিয়ে আর ইরো হলে রসে ঝরতে Big Grin



গল্পের শেষ পর্ব আগের পৃষ্ঠায় আছে। যাদের পড়া হয়নি, পড়ে ফেলুন 

[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
আপনার উপন্যাসের পাঠকরা বাঁশের দোলাই চেপে গেলেও আপনাকে কোনো দিন ভুলবে না ,আপনি প্রতিটা উপন্যাসে আমাদেরকে যা উপহার দিয়ে আসছেন কখনও কি ভোলা যায় জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মনে থাকবে.......



Just ফাটাফাটি আপডেট শেষ টাও দারুন ...
আপনার জন্যই বাংলা section টা বেঁচে আছে না হলে কবেই আউট হয়ে যেত...

Next novel এর অপেক্ষায় রইলাম দাদা....
[+] 2 users Like Rinkp219's post
Like Reply
khub valo laglo
[+] 1 user Likes chndnds's post
Like Reply




Users browsing this thread: Bimal123, 1 Guest(s)